গরমে রোজা, যেসব বিষয়ে সতর্কতা জরুরি

0
305

খবর৭১ঃ একদিকে প্রচণ্ড গরম। অন্যদিকে এসেছে রমজান মাস। এই গরমে রোজা পালনের সময় নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া গরমে রোজা পালনের সময় বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা ও জটিলতা দেখা দেয়। একটু সচেতন হলে এবং সতর্ক থাকলে এসব জটিলতা থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব। গরমে রোজা পালনে প্রধানত যেসব সমস্যা হতে পারে এবং তা থেকে নিস্তার পেতে কী করণীয় তা হলো-

পানিশূন্যতা

অতিরিক্ত গরমে রোজাদারদের সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা হয় সেটি হলো পানিশূন্যতা। এতে মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, চোখে ঝাপসা দেখা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। এই অবস্থায় ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত বেশি করে তরল খাবার খেতে হবে। একই সঙ্গে যতটুক সম্ভব পানি পান করতে হবে। তবে ইচ্ছার বিরুদ্ধে এবং মাত্রাতিরিক্ত পানি পান করা যাবে না। এছাড়া পানীয় জাতীয় ফল খেতে হবে।
পেটে ব্যথা গরমে রোজা থাকার কারণে শরীর দুর্বল থাকে। আবার নিয়মিত খাবারের অভ্যাস পাল্টে যাওয়ার কারণে পেটের পীড়া, বদহজম এবং পেট ফুলে যেতে পারে। এই কারণে ব্যথা হতে পারে। তাই শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় এমন খাবার খাওয়া যাবে না। শরীর ঠিক রাখতে ভাজা বা অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এই ধরনের খাবার শরীরকে গরম করে এবং শরীর থেকে পানি বের করে দেয়। কম চর্বিযুক্ত খাবার খেতে হবে। শাকসবজি, লাল আটার রুটি, ঢেঁকি ছাঁটা চাল, সামুদ্রিক মাছ, জলপাইয়ের তেল, সূর্যমুখীর তেল ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।

মাথাব্যথা রমজান চলাকালীন সমস্যা হলো মাথাব্যথা। সাধারণত দীর্ঘক্ষণ পানি না খেলে পা-মাথা ধরা ও তার থেকে ব্যথা হয়। এ কারণে সেহরিতে চা-কফি, কোমল পানীয় জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার, শুকনো ও প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। পরে ইফতারের পর পরিমাণ মতো পানি খেতে হবে।

ক্লান্তি ভাব রোজার সময় স্বাভাবিক ঘুম ব্যাহত হয়। এতে ক্লান্তি ভাব বাড়ে। পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। বেশি রাত জাগা যাবে না। এছাড়া রাতের ঘুম পুষিয়ে নিতে দিনে বা ফজরের নামাজের পর ঘুমিয়ে নিতে হবে। তা না হলে সারাদিন ক্লান্তি ও ঘুম ঘুম ভাবে থাকতে পারে।

পিপাসা এই গরমে রোজায় সকালের দিকে কিছুটা শরীর ঠিক থাকলেও দুপুরের পর পিপাসা পেয়ে থাকে। এ কারণে অনেকে ইফতারের সময় বরফ দিয়ে পানি পান করেন। এটি করা মোটেও ঠিক নয়। ঠাণ্ডা পানি রোজাদারদের রক্তনালীর সংকোচন বাড়িয়ে হজমে সমস্যা করে। তাই ইফতার ও সেহরিতে বরফযুক্ত পানি পান না করে সাধারণ পানি পান করুন।

মনোযোগহানি রোজা রাখার চার ঘণ্টা পর থেকে শরীরের গ্লাইকোজেন ভাঙতে শুরু করে। এই গ্লাইকোজেন ভাঙার পরিমাণ বিকেল ৩টা বা ৪টার দিকে অনেক বেড়ে যায়। এ কারণে মনোযোগের ঘাটতি হয়। এই সমস্যা প্রতিরোধে রোজাদারদের কখনো সেহরি বাদ দেয়া উচিত নয়। সেহরি খেতে হবে একেবারে শেষ রাতের দিকে।

খাদ্যে বিষক্রিয়া গরমে আবহাওয়ায় খাবার দ্রুত পচে যায়। এতে ফুড পয়জনিং বা খাদের বিষক্রিয়ার সমস্যা হতে পারে। তাই ইফতার বা সেহরির সময় বাইরের খাবার এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। গরম গরম খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। যারা খাদ্য রান্না ও সংরক্ষণের সঙ্গে জড়িত, তারা কতটুকু পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলছে, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here