স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট: দেশের দ্বিতীয় আর্ন্তজাতিক সমুদ্র বন্দর মোংলার সক্ষমতা দ্বিগুন করতে বন্দর চ্যানেলের ইনারবারে ড্রেজিং শুরু হচ্ছে। জয়মনির ঘোল থেকে বন্দর জেটি পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার ইনারবার ড্রেজিংয়ের কাজ উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
‘মোংলা বন্দর চ্যানেলের ইনারবার ড্রেজিং’ প্রকল্পের আওতায় ৭৯৩ কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প চালু করা হয়। এই ড্রেজিং প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২২ সালে। ইনারবারের ড্রেজিং শেষ হলে রামপাল কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বঙ্গোপসাগরের ফেয়ারওয়ে বয়া পর্যন্ত ১৪৫ কিলোমিটার চ্যানেল দিয়ে সহজেই ২৪ ঘন্টায় সাড়ে ৯ মিটার থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত ড্রাফটের জাহাজ চলাচল করতে পারবে। এর ফলে আমদানী-রপ্তানী বাণিজ্যের চাপ সামাল দেয়ার পাশাপাশি মোংলা বন্দরের সক্ষমতা দ্বিগুন হবে। মোংলা বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের বিকল্প বন্দর হিসেবে পরিণত হবে। সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা।
বাগেরহাট চেম্বার অব কর্মাসের সাবেক সভাপতি সরদার আনসার উদ্দিন বলেন, ‘মোংলা বন্দরের প্রধান সমস্যা হচ্ছে নাব্যতা সংকট। এই সংকট সমাধানের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ইনারবার ড্রেজিং শুরুকরায় তাদের ধন্যবাদ জানাই। এই ড্রেজিং কাজ শেষ হলে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা দ্বিগুন বাড়বে।’ সাধারণত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে যেসব কন্টেইনারবাহী জাহাজ আসে সেগুলো পূর্ণ লোড অবস্থায় সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের হয়ে থাকে। কিন্তু মোংলার বর্তমান গভীরতা ৭ মিটার। তাই নাব্য সংকটের কারণে এসব জাহাজ মোংলা বন্দরে সরাসরি প্রবেশ করতে না পেরে এই বন্দরে আসতেও চাইতো না। ইনারবার ড্রেজিং সম্পন্ন হলে পদ্মা সেতু চালু হলে রাজধানী ঢাকার সব থেকে কাছের এই সমুদ্র বন্দরটি দিয়ে আমদানী-রপ্তানী বাণিজ্যের চাপ সামাল দেওয়া সহজ হবে। মোংলা বন্দর কার্যত চট্টগ্রাম বন্দরের বিকল্প বন্দর হিসেবে পরিণত হবে বলে আশা করেন ব্যবসায়ী নেতারা।
মোংলা বন্দরের ইনারবার ড্রেজিং প্রকল্প পরিচালক (পিডি) শেখ শওকত আলী জানান, ‘রামপাল কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বঙ্গোপসাগরের ফেয়ারওয়ে বয়া পর্যন্ত মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের দৈর্ঘ্য ১৪৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে মোংলা বন্দর জেটি হতে হারবারিয়া (জয়মনির ঘোল) পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার ইনারবার চ্যানেলের বর্তমান গভীরতা রয়েছে ৫ দশমিক ৫ মিটারেরও কম। বড়-বড় বাণিজ্যিক জাহাজ সাড়ে ৯ মিটার থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত ড্রাফটের জাহাজ বন্দরের ইনারবার দিয়ে চলাচল করতে না পারায় বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে কর্তৃপক্ষকে।’
প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, ‘এই ড্রেজিং প্রকল্পের সুষ্ঠ ভাবে কাজ শেষ করতে ইনারবার ড্রেজিংয়ের উত্তোলিত ২১৬.০৯ লাখ ঘনমিটার পলিমাটি ও বালু ফেলার জন্য ১ হাজার ৫০০ একর জমির দরকার হবে। পশুর নদীর তীরবর্তী অল্প গভীরতা সম্পন্ন প্রায় ৫শ’ একর জমিতে জিওটেক্সটাইল টিউব দিয়ে ডাইক নির্মাণ করে সেখানেই এসব মাটি ফেলা হবে। এখন আগের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ।