বাংলাদেশ থেকে পাচারের শিকার ২১ শতাংশই নারী

0
217

খবর৭১ঃ
বাংলাদেশ থেকে বিদেশে নারী কর্মসংস্থান বাড়ছে। একই সঙ্গে পাচার, নিপীড়ন ও বিদেশে মৃত্যুর ঘটনাও বেশি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী গত ৯ বছরে (২০১২-২০২০) যতগুলো মামলা হয়েছে, তাতে অন্তত এক হাজার ৭৯১ জন নারী মানবপাচারের শিকার হয়েছেন।

মামলার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশ থেকে যত পাচারের ঘটনা ঘটে তার মধ্যে ২১ শতাংশই নারী। আর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী- শুধুমাত্র ২০২০ সালেই অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমকালে ৩০৩ নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকার বাহিনী ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, দুবাইয়ে এখন অন্তত দেড় হাজার বাংলাদেশি তরুণীকে বিভিন্ন বারে বাধ্যতামূলক কাজ করতে হচ্ছে। অধিকাংশ মেয়ের বয়স ১৮ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। অন্যদিকে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের পাচারও থেমে নেই।

বুধবার যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মানবপাচার ও অনিয়মত অভিবাসন থেকে নারী ও শিশুদের সুরক্ষা বিষয়ক কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়। ডিসরাপটিং ক্রস বর্ডার ট্রাফিকিং নেটওয়ার্ক ইন বাংলাদেশ প্রজেক্টের আওতায় এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার কৃষ্ণ চন্দ্র। কর্মশালায় ভার্চুয়ালি অংশ নেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পূর্ণকালীন সদস্য ড. কামাল উদ্দীন আহমেদ ও ব্র্যাকের সিনিয়র ডিরেক্টর কেএএম মোর্শেদ। কর্মশালায় সরকারি কর্মকর্তা, এনজিও, আইনজীবী এবং সাংবাদিক প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

কর্মশালায় মানবপাচার প্রতিরোধে বেশ কয়েকটি সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- নারী অভিবাসনের ক্ষেত্রে ‘নারী অভিবাসন নীতিমালা’ যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারী অভিবাসীর অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

দক্ষ নারীকর্মী তৈরি করে তারপর প্রেরণের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে হবে। নারী অভিবাসনের ক্ষেত্রে প্রতিটি কর্মীকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সেদেশে পৌঁছার পূর্বেই সেদেশের সিমকার্ড প্রদান করা প্রয়োজন।

নারীকর্মী প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো যথাযথ মনিটরিং ও অভিযুক্ত এজেন্সিগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। কর্মী নির্যাতনকারী প্রতিটি অভিযুক্ত নিয়োগকর্তাকে সেদেশের আইন অনুযায়ী বিচার করতে হবে।

মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে দেশে ফেরা, অঙ্গহানি বা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে দেশে ফেরত নারী অভিবাসীদের জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে আলাদা অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। পাচার হয়ে যাওয়া নারী ও শিশুদের দ্রুত নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

পাশাপাশি মানবপাচার প্রতিরোধে সর্বস্তরের জনগণকে একযোগে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মানবপাচার আইনে দায়ের করা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here