মায়ের হত্যার বিচার চেয়ে ছেলের আকুতি

0
219

স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট:  বাগেরহাটে মায়ের হত্যাকারীদের গ্রেফতার পূর্বক বিচারের দাবি এবং মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওলিয়ার রহমান মোল্লা নামের এক যুবক। বুধবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে কচুয়া উপজেলার পানবাড়িয়া গ্রামের বেল্লাল মোল্লার ছেলে ওলিয়ার রহমান মোল্লা এই আকুতি জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষরা ৩০ জানুয়ারি রাতে শরীরে ধাহ্য পদার্থ দিয়ে আমার মা শেফালী বেগমকে হত্যার চেষ্টা করে।পরবর্তীতে ৫ ফেব্রুয়ারি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মা মারা যায়। মা চিকিৎসাধীন অবস্থায় কয়েক জনের নাম উল্লেখ করেছিলেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় হুমকী দেওয়া পার্শ্ববর্তী আবাদ এলাকার দেলোয়ার পাইক (৪৭), ইদ্রিস আলী পাইক (৫৩), আল আমিন আকন (২৫) এবং পানবাড়িয়া এলাকার তপন সরকার(৪৬) এবং আঠাড়গাতি এলাকার স্ট্যালিন দাস (৩৫) এর নাম উল্লেখ করে কচুয়া থানায় মামলা দায়ের করি। প্রায় ২০ দিন পার হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। বরং আসামীরা আমাকে নানা প্রকার হুমকী-ধামকী দিচ্ছেন।মায়ের মত আমাকেও পুড়িয়ে মেরে ফেলবে বলে হুমকী দিয়েছে।
শুধু এই নয় এর আগেও বিভিন্নভাবে এই আসামীগন আমার পরিবারের উপ অত্যাচার নির্যাতন করেছেন। এর মধ্যে স্ট্যালিন দাস তার বাড়ির পাশে থাকা আমার ২৫ কাঠা জোরপূর্বক ভোগ দখল করে আসছেন। জমির হারির টাকা চাইলে স্টালিন উপর চড়াও হয় বলে দাবি করেন ওলিয়ার মোল্লা।
ওলিয়ার রহমান মোল্লা আরও বলেন, ২০১৬ সালে ৩১ মার্চ দুই পক্ষের সম্মতিতে আবাদ গ্রামের মোঃ ইদ্রিস পাইকের মেয়ে মোসাঃ লিয়া খানমের সাথে আমার বিয়ে হয়।পরবর্তীতে আর্থিক অবস্থা দূর্বল হওয়ার কারণে আমার শ্বশুর বাড়ীর লোকেরা আমাদের বিয়ে মেনে নিতে রাজি হয় না। তারা আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে নানা ভাবে হয়রানির চেষ্টা করে। লিয়াকে আমার কাছ থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য নানা ভাবে চাপ সৃষ্টি করে। বাবার বাড়ির লোকদের চাপে ও বিভিন্ন প্ররোচনায় আমার অনুপস্থিতিতে একই বছর ৫ আগস্ট আমার বাড়িতে বসে আমার স্ত্রী মোসাঃ লিয়া খানম গলায় ফাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।পরবর্তীতে আমার চাচা শ্বশুর দেলোয়ার হোসেন পাইক আমার নামে স্ত্রী হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।মরদেহের ময়না তদন্ত রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসেবে আত্মহত্যা উল্লেখ এবং সরজমিন তদন্ত পূর্বক ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কচুয়া থানা পুলিশ আমাকে নির্দোষ উল্লেখ করে পুলিশ ফাইনাল রিপোর্ট দেয়।দেলোয়ার হোসেন পাইকের না রাজির ভিত্তিতে আদালতের নির্দেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম গাজী স্বাক্ষ্য প্রমান গ্রহন শেষে আরও একটি রিপোর্ট প্রদান করেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর রিপোর্টেও আমাকে নির্দোষ বলা হয়। মোসাঃ লিয়া খানমের সাথে আমার বিবাহ হয়েছিল এবং লিয়া আমার সাথে বসবাস করত তাও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।মৃত্যুর কারণ হিসেবে আত্মহত্যাকে উল্লেখ করা হয়।
এই রিপোর্টের উপরও দেলোয়ার হোসেন পাইক না রাজি দেন। এই না রাজির প্রেক্ষিতে আদালত বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে তদন্তের নির্দেষ দেন। পিবিআই, বাগেরহাট কার্যালয়ের এসআই (নিরস্ত্র) অংকুর কুমার দাস বিভিন্নভাবে প্রভাবিত হয়ে ২০১৮ সালের ২৬ জুন তারিখ একটি মিথ্যা ও মনগড়া রিপোর্ট প্রদান করেন।ওই রিপোর্টে পিবিআই বাগেরহাট কার্যালয়ের এসআই (নিরস্ত্র) অংকুর কুমার দাস কয়েকজন সাক্ষির কথা উল্লেখ করেন। তাদের মধ্যে মোবারেক শেখ, দেলোয়ার মোল্ল্ াও ইব্রাহিম শেখের সাক্ষীর কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু তারা কোন সাক্ষী দেয়নি।ওই রিপোর্টে পিবিআই কর্মকর্তা অংকুর কুমার দাস আমাকে অপরাধী সাব্যস্ত করেন।পরবর্তীতে ২০১৮ সালে আদালত আমাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।প্রায় চারমাস কারাবাসের পরে আমি জামিনে বের হই।
এই অবস্থায় আমার জীবন ও সম্পদ নিয়ে মারাত্মক শঙ্কায় রয়েছি। আমি এই মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচত পারি এবং মায়ের হত্যাকারীদের বিচার পেতে পারি এর জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here