সাইন্সল্যাব-কলাবাগান এক-তৃতীয়াংশই হাঁটার অনুপোযোগী

0
250

খবর ৭১: সাইন্সল্যাব মোড় থেকে কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এক কিমি পথে পদযাত্রা থেকে পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে, সেখানে এক-তৃতীয়াংশ পথই হাঁটার অনুপোযোগী।

যানজট, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, জ্বালানী, অবকাঠামো সকল কিছু বিবেচনায় হাঁটা সবচেয়ে সুবিধাজনক যাতায়াত মাধ্যম। অথচ হাঁটার পরিবেশ উন্নত করার বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। হাঁটার জন্য অবকাঠামো অর্থাৎ ফুটপাত, সমতলে রাস্তা পারাপারে ক্রসিং এর ব্যবস্থা এবং গলি রাস্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই। বিদ্যমান ফুটপাতগুলিও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার প্রতি নজর দেওয়া হয় না। এজন্য হাঁটতে গিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মূখীন হতে হয়। বিশেষ করে নারী, শিশু, বৃদ্ধ এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি। সাইন্সল্যাব মোড় থেকে কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এক কিমি পথে পদযাত্রা থেকে পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে, সেখানে এক-তৃতীয়াংশ পথই হাঁটার অনুপোযোগী। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে ‘নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ সকলের জন্য নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দে হাঁটার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বানে’ উক্ত পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তারা হাঁটার উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন।
পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল এর প্রধান শিক্ষক এম এ মান্নান মনির, পবা’র সদস্য মোঃ সেলিম, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান ও প্রকল্প কর্মকর্তা মোঃ আতিকুর রহমান, আইডাব্লিউবি এর পলিসি অফিসার আ ন ম মাসুম বিল্লাহ ভূঞা প্রমুখ।
পদযাত্রায়  রাজধানীর সাইন্সল্যাব মোড় থেকে কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এক কিলোমিটার ফুটপাত পরিদর্শন থেকে দেখা যায়, ফুটপাতগুলো যথাযথভাবে তৈরি এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। যদিও এখানে র‌্যাম্প (ঢালুপথ) প্রদান করা হয়েছে কিন্তু প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পক্ষে নিরববিচ্ছভাবে ফুটপাত ধরে যাতায়াত সম্ভব নয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ সকল পথচারীদের জন্য সমতলে রাস্তা পারাপারের কোন সুব্যবস্থা নেই। ফুটপাতে এবং সড়কের পাশে বিভিন্ন ভবন নির্মাণ সামগ্রী, বিভিন্ন স্থান অসমান এবং ভাঙ্গাচোড়া থাকার ফলে পথচারীদের বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয় ও দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শুধু তাই নয় ফুটপাতে অবৈধভাবে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটর সাইকেল পার্কিং করে রাখা হয়। ফুটপাত পথচারীদের জন্য তৈরি কিন্তু সেখানে তাদের অধিকার ক্রমাগত খর্ব হয়ে চলেছে।
আবু নাসের খান বলেন, রাজধানীর ফুটপাতসমূহ শিশু, বৃদ্ধ,প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সহ সকল পথচারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ফুটপাতে বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী, অবৈধ পার্কিং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলাচলের একটি বড় অন্তরায়। যে সকল এলাকায় ফুটপাত আছে তাও নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ সকল পথচারীদের জন্য ব্যবহার উপযোগী নয়। সকল এলাকায় ফুটপাত থেকে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে প্রশস্ত ফুটপাত পথচারীদের জন্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
মোঃ আতিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে “জাতীয় সমন্বিত বহুমাধ্যমভিত্তিক পরিবহন নীতিমালা, ২০১৩” “ঢাকা স্ট্রাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্লান (এসটিপি) তে “পথচারীর অগ্রাধিকার” বিষয়ে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও পথচারীদের সুবিধা সৃষ্টিতে বিশেষ করে, নারী, শিশু, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি জন্য উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়না। এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
এম এ মান্নান মনির বলেন, নগরে ফুটপাতগুলো রাতের বেলায় অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে। ফলে নারীরা ফুটপাতে হাঁটতে নিরাপদ বোধ করেন না। পথচারী বিশেষত নারী পথচারীদের জন্য এ সকল সুবিধা নিশ্চিতকরণে তিনি সিটি কর্পোরেশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মোঃ সেলিম বলেন, ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়রদ্বয় শহরে পর্যাপ্ত পরিমাণ আবর্জনার পাত্র স্থাপনের কাজ করছেন। ফুটপাতে আবর্জনা পথচারীদের চলাচল নিরুৎসাহিত করে। কাজেই আমাদের সকলের সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here