বেস্ট হোল্ডিংসে বিনিয়োগ করা ৪ ব্যাংকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে সরকার

0
437
বেস্ট হোল্ডিংসে বিনিয়োগ করা ৪ ব্যাংকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে সরকার

খবর৭১ঃ জালিয়াতির মাধ্যমে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তিতে আসা বেস্ট হোল্ডিংসের (লা মেরিডিয়ান হোটেল) শেয়ারে সরকারি চার ব্যাংকের বিনিয়োগের ব্যাপারে ব্যাখ্যা চেয়েছে সরকার।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ আমলে নিয়ে সরকারি চার ব্যাংক এবং আইসিবিকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানকেও বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শেখ সিদ্দিকুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে, লা মেরিডিয়ান হোটেলকে সরকারি কোম্পানির তকমা দিয়ে বিএসইসিকে পাশ কাটিয়ে সরাসরি তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ধরনের সংবাদ মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা জরুরি। এক্ষেত্রে বেস্ট হোল্ডিংসে সোনালী, অগ্রণী, জনতা এবং রূপালী ব্যাংকের বিনিয়োগের ধারাবাহিকতার পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে হবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্ব স্ব ব্যাংকের পর্ষদের কার্যবিবরণী এবং প্রতিটি শেয়ার ৬৫ টাকা দরে কেনার যৌক্তিকতা এবং আর্থিক বিবরণীর পূর্ণচিত্র উল্লেখ করতে হবে।

আইপিও (প্রাথমিক শেয়ার) আবেদন বাতিলের পর এবার শেয়ারবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্তির জন্য অভিনব জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিল বেস্ট হোল্ডিং লিমিটেড। কারসাজির এই ডিজাইন দুই বছর আগেই করে লা মেরিডিয়ান। এরপর প্রক্রিয়া শুরু করে। ভুয়া ফার্ম দিয়ে নিরীক্ষার মাধ্যমে একটি হোটেলের সম্পদ মূল্য দেখানো হয় ৭ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। আর এই ভুয়া আর্থিক রিপোর্টের কারণে এই কোম্পানির আইপিও (প্রাথমিক শেয়ার) আবেদন বাতিল করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সরকারি দেখিয়ে সরাসরি তালিকাভুক্তির সব আয়োজন চূড়ান্ত করেছিল। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবিকে এই প্রক্রিয়ার ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে দেখানো হয়েছে। এক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীর কাছ থেকে চিঠি এনে বিএসইসি এবং স্টক এক্সচেঞ্জে দেয়া হয়েছে।

তবে সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আরেকটি চিঠি দিয়ে মন্ত্রীর আগের চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। বর্তমানে এই কোম্পানির বিদেশে টাকা পাচারের বিষয়টি তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সবকিছু মিলে শেয়ারবাজার থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা তুলে নেয়ার বন্দোবস্তু করা হয়েছিল। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে ১৯৯৬ ও ২০১০ সালে দুই দফায়ই শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রভাবশালী সদস্যের নেতৃত্বে একটি মহল। এছাড়াও এই প্রক্রিয়ায় বহুল সমালোচিত একটি বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান রয়েছেন। আর এই মুহুর্তে এটি এখন শেয়ারবাজারের সবচেয়ে বড় আলোচিত বিষয়।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ ধরনের জালিয়াতির সহযোগিতার কারণে ডিএসইর বোর্ড ভেঙে দেয়া জরুরি। না হলে এরা বিনিয়োগকারীদের সর্বশান্ত করে সরকারকে আবারও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here