মসজিদের বিস্ফোরণ মামলায় চার্জশীটভুক্ত হচ্ছেন ৩৬ জন!

0
300
মসজিদের বিস্ফোরণ মামলায় চার্জশীটভুক্ত হচ্ছেন ৩৬ জন!
ছবিঃ সংগৃহীত

খবর৭১ঃ ফতুল্লার পশ্চিম তল্লায় মসজিদে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় চার্জশীট (অভিযোগপত্র) চূড়ান্তের পথে। মামলায় ইতোমধ্যে ১০জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতে ৩৬ জনকে অভিযুক্ত করা হতে যাচ্ছে।

মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি- ঢাকা বিভাগ) মো. ইমাম হোসেন জানান, মামলাটির তদন্ত শেষ পর্যায়ে। অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগে তিতাস, ডিপিডিসি ও মসজিদ কমিটির লোকজনদের অভিযুক্ত করা হবে।

সিআইডি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ৩৬ জনের বিষয়ে কাজ চলছে। এ ৩৬ জনের মধ্যে তিতাসের ৮জন, ডিপিডিসির দুইজন ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ ২৬ সদস্য রয়েছে। তবে এটা কম বেশী হতে পারে। আরো গভীর তদন্ত চলছে। ৩৬ সংখ্যাটিই চূড়ান্ত না। তবে এর মধ্যে তিতাস গ্যাসের ফতুল্লা অঞ্চলের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, উপব্যবস্থাপক মাহমুদুর রহমান, সহকারী প্রকৌশলী সহকারী এস এম হাসান শাহরিয়ার, সহকারী প্রকৌশলী মানিক মিয়া, কর্মী ইসমাইল প্রধান, সাহায্যকারী হানিফ মিয়া, সিনিয়র উন্নয়নকারী আইউব আলী ও সিনিয়র সুপারভাইজার মনিবুর রহমান চৌধুরী এবং অভিযোগপত্রে ডিপিডিসি নারায়ণগঞ্জ পূর্ব অঞ্চলের মিটার রিডার আরিফুর রহমান ও বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি মোবারক হোসেন রয়েছেন। তাদের মধ্যে তিতাসের আটজন কর্মকর্তা-কর্মচারী, ডিপিডিসির দুজন গ্রেপ্তার হন। তাদের মধ্যে বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি মোবারক হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ছেন। তিতাসের আটজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জামিনে বেরিয়ে গেছেন।

এর আগে সিআইডির নারায়ণগঞ্জ বিশেষ পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহম্মেদ জানান, এ ঘটনায় মসজিদ কমিটির গাফিলতি আছে। প্রয়োজনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তিতাস ও বিদ্যুতের সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি আছে। তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। তাছাড়া তিতাসের কে ঘুষ চেয়েছিলেন সেই ব্যক্তিকেও চিহ্নিত করার কাজ চলছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর মসজিদে বিস্ফোরণে ৩৭ জন দগ্ধ হয়। তাদের মধ্যে অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও হাসপাতালের আইসিইউতে আশঙ্কাজনক রয়েছেন দুই জন। বিস্ফোরণের ঘটনায় ৫ সেপ্টেম্বর ফতুল্লা থানার এসআই হুমায়ন কবির বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে ফতুল্লা থানায় মামলা করেন। পরবর্তীতে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।

সিআইডির নারায়ণগঞ্জ বিশেষ পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহম্মেদ আরো জানান, মসজিদের মূলত বিদ্যুতের স্পার্ক থেকেই গ্যাসের বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিদ্যুতের সংশ্লিষ্টদের গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে। মসজিদে যদি মিটার রিডার আরিফুর প্রতি মাসে যেত তাহলে, এমন ঘটনা হত না। কারণ প্রতি মাসে মিটার চেক করলে অবৈধ সংযোগ বা সমস্যা ধরা পড়ত। বিভিন্ন সংস্থার বিভিন্ন সমস্যা কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। তল্লা মসজিদ বিস্ফারণ মামলায় ইতোমধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লায় মসজিদে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ৪ কর্মকর্তাসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

তিতাস সূত্রে জানা যায়, কোম্পানিটির পরিচালক (অপারেশন) প্রকৌশলী রানা আকবর হায়দারের নেতৃত্বে দুটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় তিতাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে। দুটি কমিটিই তাদের প্রতিবেদনে অগ্নিকাণ্ডে তিতাসের কর্মকর্তাদের কোনোরকম সম্পৃক্ততা পায়নি। কমিটিগুলো এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছে তিতাস। একই সঙ্গে তাদের কোম্পানির চাকরিতে পুনর্বহাল করেছে। গত ৫ অক্টোবর থেকে তিতাসের আট কর্মকর্তা কাজে যোগ দিয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here