খবর৭১ঃ
বাংলাদেশে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে চীনে উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ টিকার ট্রায়াল। টাকা খরচ করে কোনো ট্রায়ালে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এ অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সে কারণে বাংলাদেশে ভারতীয় টিকার ট্রায়ালে জোর তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে।
ভবিষ্যৎ রাজনীতি ও কূটনীতির প্রভাব বিবেচনায় টিকা প্রশ্নে দিল্লিও ঢাকাকে সহযোগিতার পথে অনেকটা এগিয়ে এসেছে। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ ট্রায়াল, উৎপাদন এবং বণ্টনে আগ্রহ দেখিয়েছে।
এ নিয়ে গত মাসের সমাপনীতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক জেসিসিতে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করের যৌথ নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল বৈঠকে জয়েন্ট ট্রায়াল, কো-প্রডাকশন অ্যান্ড জয়েন্ট ডিস্ট্রিবিউশনের বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় শিগগির দিল্লির একটি কারিগরি টিম আসছে। নবনিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন।
প্রতিনিধি দলটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও আইসিসিডিডিআর,বি’র সঙ্গে আলোচনা করবে। সে মতেই হাইকমিশন যোগাযোগ ও ফলোআপ করছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ভ্যাকসিনের ট্রায়ালসহ সহজে টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিতে দর কষাকষিতে সরকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে যথেষ্ট ক্ষমতা দিয়েছে। সে কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অনেকে সরাসরি যোগাযোগ করছে।
সূত্র জানায়, বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ ঠেকাতে ভ্যাকসিনে জোর দিচ্ছে সারা দুনিয়া। বলতে গেলে অগ্রাধিকার বিবেচনায় ভ্যাকসিন উদ্ভাবন, হু’র অনুমোদনপ্রাপ্তি এবং তা উৎপাদন-বণ্টন প্রশ্নে অস্বাভাবিক প্রতিযোগিতা চলছে বিশ্বজুড়ে। যে যার মতো করে এটি পেতে অস্থির।
দেশভেদে এর ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষিত রয়েছে। তবে এটা সবাই মানছেন যে, ফ্রি-তে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে না। এর সঙ্গে বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা যুক্ত হয়ে গেছে। ভ্যাকসিন ডিপ্লোম্যাসিতে এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)’ই নিয়ামক প্লেয়ার।
সংস্থাটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিও মারাত্মক। সেখানে পশ্চিমা প্রভাবশালীরা তো বটেই, এশিয়ার দুই শক্তি চীন ও ভারতের রীতিমতো পেইড লবিস্ট রয়েছে। দেখার বিষয় হচ্ছে, জেনেভার রাজনীতিতে কার কৌশল জয়ী হয়।
জানা যায়, চীন এখন বলেছে, যে সময়ে তারা বাংলাদেশকে ট্রায়ালের প্রস্তাব দিয়েছিল সেই সময়ে বেইজিং কিছু বরাদ্দ রেখেছিল, বাংলাদেশ তা পেত। কিন্তু ঢাকার সিদ্ধান্ত নিতে সময়ক্ষেপণের জন্য চীনের ওই বরাদ্দ অন্য দেশে চলে গেছে।
এখন বাংলাদেশ ট্রায়ালে অংশ নিতে চাইলে তাতে সরকারকে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। ট্রায়াল না হলেও চীনের টিকা প্রাপ্তিতে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। ভারতীয় টিকার ট্রায়াল বিনা খরচে হবে কিনা? সে বিষয়েও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।