খবর৭১ঃ
টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ওসি বরখাস্ত হওয়া প্রদীপ কুমার দাশসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ‘ক্রসফায়ারে’ হত্যার অভিযোগ এনে আরও একটি ফৌজদারি দরখাস্ত দায়ের করা হয়েছে। কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-৩ এর (টেকনাফ) বিজ্ঞ বিচারক মো. হেলাল উদ্দিন মামলাটি আমলে নিয়ে ঘটনার বিষয়ে আগে টেকনাফ থানায় কোন মামলা হয়েছে কিনা-আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে ওসিকে আদেশ দিয়েছেন।
কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়নের পশ্চিম মহেশখালীয়া পাড়ার মৃত আবদুল জলিল প্রকাশ পুতুইক্যার স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) এ ফৌজদারি দরখাস্তটি দায়ের করেন।
ফৌজদারি দরখাস্তে উল্লেখ করা হয়েছে, আবদুল জলিল প্রকাশ পুতুইক্যাকে ২০১৯ সালের ৩ ডিসেম্বর আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ধরে নিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় চলতি বছরের ৭ জুলাই ক্রসফায়ারের নামে তাকে হত্যা করে।
মামলায় টেকনাফ মডেল থানার বরখাস্ত হওয়া সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, হোয়াইক্ষ্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মশিউর রহমান, এএসআই আরিফুর রহমান, এসআই সুজিত চন্দ্র দে, জেলা গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক মানস বড়ুয়া, এসআই অরুণ কুমার চাকমা, এসআই নাজিম উদ্দিন, এসআই মো. নাজিম উদ্দিন ভূঁইয়া, এএসআই রাম চন্দ্র দাশ, কনস্টেবল সাগর দেব, কনস্টেবল রুবেলে শর্মা, হোয়াক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার, কাঞ্জর পাড়ার মৌলভী সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. আমিনুল হককে আসামি করা হয়েছে।
এতে সাক্ষী করা হয়েছে ১০ জনকে। ফৌজদারি দরখাস্তে উল্লেখ করা হয়েছে ৩৮০, ৩৮৬, ৩০২ ও ৩৪ দণ্ড বিধি। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী আবদুল বারী, মাহমুদুল হক আদালতে ফৌজদারি দরখাস্তটির গ্রহণযোগ্যতার শুনানিতে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ। এ ঘটনায় টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই মামলায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকেও যুক্ত করা হয়েছে। তারা সকলে কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন। তাদের প্রথমে ৭ দিনের রিমান্ড আদেশ এবং পরে আরও ৪দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এটি দেখেই বিভিন্ন থানায় পুলিশ কর্তৃক নানাভাবে হয়রানির শিকার ভুক্তভোগীরা পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করতে উদ্যোগী হচ্ছে। এটিসহ ইতিপূর্বে আরও চারটি হত্যার অভিযোগ ইতিমধ্যে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।