সৈয়দপুর বিদ্যালয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত

0
644
সৈয়দপুর বিদ্যালয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর প্রতিনিধিঃ এক সময় ছাত্রছাত্রীদের আনাগোনায় প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিদ্যালয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি এখন নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে । শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবায় গড়ে উঠা ওই প্রতিষ্ঠানটিতে চিকিৎসকের পদ দুইটি পদ থাকলেও এখন নেই একজন চিকিৎসকও। বর্তমানে একজন মাত্র ফার্মাসিষ্ট দিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে চলছে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম। ফলে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবার প্রতিষ্ঠানটি এখন নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এটি যেন “ঢাল নেই তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দার” এর মতো অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। তারপরও আবার চলমান করোনাকালে এটিতে করোনা ভাইরাস রোগীদের নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন করা হয়েছে। একইসাথে ষড়যন্ত্র চলছে এটি সৈয়দপুর থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার। ষড়যন্ত্রকারীদের অজুহাত এখানে শিক্ষার্থীরা এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে তেমন একটা আসে না। এদিকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সেবার এ প্রতিষ্ঠানটি যাতে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া না হয় সে দাবিতে সৈয়দপুরে সম্প্রতি মানববন্ধন করেছে বাম রাজনৈতিক সংগঠনের স্থানীয় শাখা।
জানা যায়, ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে ষাটের দশকে ছাত্রছাত্রীদের চিকিৎসা সেবা দিতে সৈয়দপুর বিদ্যালয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়। প্রথমে সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনে (লাল বিন্ডিং) এটির কার্যক্রম চালু ছিল। পরবর্তীতে শহরের নিয়ামতপুর সরকারপাড়া এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয় এটি। বিদ্যালয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে চিকিৎসকের পদ রয়েছে দুইটি। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ এখানে একজন চিকিৎসক কর্মরত থেকে শিক্ষার্থীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু বর্তমানে একজন চিকিৎসকও নেই। এখানকার চিকিৎসককে নীলফামারী মেডিক্যাল কলেজে ডেপুটিশনে রাখা হয়েছে। ফলে চিকিৎসক ছাড়াই চলছে সৈয়দপুর বিদ্যালয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। বর্তমানে একজন ফার্মাসিষ্ট কেন্দ্রটিতে আসা শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। কেন্দ্রটির এমএলএসএস পদটিও দীর্ঘদিন থেকে শূন্য রয়েছে। ফলে কেন্দ্রটির সব কার্যক্রম চালাচ্ছেন ফার্মাসিষ্ট মো. শফিউল ইসলাম ।

এ অবস্থায় শিক্ষা নগরী সৈয়দপুরে অবস্থিত বিদ্যালয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীরা এখানে তেমন একটা চিকিৎসা নিতে আসে না এমন অজুহাতে সৈয়দপুর থেকে প্রতিষ্ঠানটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার এ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে একটি মহল। ফলে এখানকার সচেতন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ অভিভাবক মহল ও সুধীজন হতবাক হয়েছেন। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সেবায় গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানটি অন্যত্র সরিয়ে না নেওয়াসহ ডেপুটিশনে থাকা চিকিৎসককে তাঁর পদে ফিরিয়ে আনার দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সৈয়দপুর উপজেলা শাখার ব্যানারে গত ২৮ জুন সৈয়দপুর প্রেস ক্লাবের সামনে ওই মানববন্ধন করা হয়। এছাড়াও একটি আবাসিক এলাকায় থাকা বিদ্যালয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি করোনার নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন না করারও দাবি জানানো হয়েছে ওই মানববন্ধন থেকে। সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু মো. আলেমুল বাসার জানান, বিদ্যালয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি সিভিল সার্জন দপ্তরের আওতাধীন। তিনি করোনা ভাইরাস পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপনের সত্যতা নিশ্চিত করেন। নীলফামারী সিভিল সার্জনের নির্দেশে এবং উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের রোগী কল্যাণ সমিতির অর্থায়নে সেখানে করোনা সংগ্রহের একটি বুথ স্থাপন করা হয়। গত কয়েকদিন যাযৎ সেখানে করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে। এ নিয়ে কথা বলার জন্য নীলফামারী সিভিল সার্জন ডা. রনজিৎ কুমার বর্মণের সঙ্গে কথা বলার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here