এইচএসসিতে পরীক্ষা কমানোর কথা ভাবছে সরকার

0
406
এইচএসসিতে পরীক্ষা কমানোর কথা ভাবছে সরকার

খবর৭১ঃ করোনায় শিক্ষার ক্ষতি পোষাতে একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আজ শনিবার শিক্ষা সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েন, বাংলাদেশ (ইরাব) আয়োজিতকরোনাকালে শিক্ষায় চ্যালেঞ্জ উত্তরণে করণীয়শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানান মন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনার এই সময়ে কোটি কোটি শিক্ষার্থীকে আমরা স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারি না। তাই এই মুহূর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কোনো সম্ভাবনা নেই। চলতি শিক্ষাবর্ষে সংক্ষিপ্ততম যতটুকু সিলেবাস হলে শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে শিখে পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত হতে পারে, তা পড়ানোর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে। চলতি শিক্ষাবর্ষ আগামী ফেব্রুয়ারিমার্চ পর্যন্ত বাড়ানো যায় কিনা তা আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষ বাড়লে আগামী শিক্ষাবর্ষ নয়দশ মাসে শেষ করার কথা ভাবা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সব ধরনের ঐচ্ছিক ছুটি কমিয়ে আনা হবে। তবে নানা পরিকল্পনা আলোচনা চললেও সিদ্ধান্ত এখনই দেওয়া যাচ্ছে না

মন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের এইচএসসির সিলেবাস কমানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। কারণ তারা তো তাদের সিলেবাস সম্পন্ন করেছে। তবে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়সংখ্যা কমানো এবং কম সময়ে নেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে আসার ১৫ দিন পর এই পরীক্ষা নেওয়া হবে। এই ১৫ দিন শিক্ষার্থীদের নোটিশ দিতে হবে। তাদের প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিতে সময় দিতে হবে

তিনি বলেন, টেলিভিশনে প্রচারিত ক্লাস সরাসরি তথ্যপ্রযুক্তির নানা মাধ্যমে ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী কোনো না কোনোভাবে দেখছে। শীঘ্রই টোল ফ্রি লাইন ৩৩৩৬ চালু হচ্ছে। কমমূল্যে বা বিনামূল্যে কিভাবে শিক্ষকশিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট দেওয়া যায় সেজন্য আমরা বিভিন্ন ফোন কম্পানির সঙ্গে কথা বলছি

দীপু মনি বলেন, বিরাট সংখ্যক শিক্ষকরা আইসিটি ট্রেনিং পেয়েছেন। আরো শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তবে পরীক্ষা নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে কিভাবে বেরোতে পারি সে চেষ্টা চলছে। শিক্ষকদের যেসব সমস্যা রয়েছে তা সমাধানেও আমরা কাজ করছি

মন্ত্রী বলেন, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আগামী কয়েকমাস চলার সামর্থ্য আছে তাদের উচিত সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়া। তারা কিস্তিতে ফি নিতে পারেন আবার না নেওয়ারও চিন্তা করতে পারেন। আর যেসব অভিভাবকদের সামর্থ্য রয়েছে তাদের উচিত টিউশন ফি দিয়ে দেওয়া। কারণ ফি না পেলে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কিভাবে শিক্ষকদের বেতন দিবেন। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ অভিভাবক উভয়কেই ছাড় দিতে হবে। করোনার এই সময়ে উভয়কেই আরো মানবিক হতে হবে

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইসিটি ব্যবহারের গতি বেড়েছে। তবে করোনা পরবর্তী সময়ের জন্য আমাদের বেশকিছু পরিকল্পনা রয়েছে। আগে এক বেঞ্চে চারপাঁচজন শিক্ষার্থী বসতো। সেটা হয়তো আপাতাত সম্ভব হবে না, বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করতে হবে। বছরে শুধু ১০০ দিনের বেশি সরকারি ছুটিই থাকে, তা রিভিউ করা হবে। এজন শিক্ষার্থীর পরবর্তী ক্লাসে উন্নীতের জন্য যা পড়ানো দরকার বা যেসব পরীক্ষাগুলো প্রয়োজন সেগুলো নেওয়া হবে

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটাস অধ্যাপক . মনজুর আহমদ এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক . ফারহানা খানম।

ইরাব সভাপতি যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার মুসতাক আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইত্তেফাকের সিনিয়র রিপোর্টার নিজামুল হক। ইরাবের কার্যনির্বাহী সদস্য সমকালের বিশেষ প্রতিনিধি সাব্বির নেওয়াজের সঞ্চালনায় সেমিনারের ধারনাপত্র উপস্থান করেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ কালের কণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার শরীফুল আলম সুমন

ছাড়া সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন ইরাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইনকিলাবের সিনিয়র রিপোর্টার ফারুক হোসাইন, দ্য ডেইলি স্টারের রিপোর্টার মহিউদ্দন জুয়েল, সংগঠনের সাংগাঠনিক সম্পাদক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের রিপোর্টার মীর মোহাম্মদ জসীম, ইরাবের প্রচার সম্পাদক আমাদের সময়ের রিপোর্টার এম এইচ রবিন, ঢাকা টাইমসের রিপোর্টার তানিয়া আক্তার প্রমুখ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here