করোনার কারণে চুনারুঘাটে মৃৎশিল্পীদের অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন

0
758
করোনার কারণে চুনারুঘাটে মৃৎশিল্পীদের অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন
ছবিঃ মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি।

খবর৭১ঃ

মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মাটির তৈরি হাড়ি পাতিল বিক্রি করে দিনে কয়েকশত টাকা রোজগার করে যারা সংসারের চালাতো, তারা এখন পরিবার পরিজন নিয়ে কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মৃৎশিল্পীদের পরিবারে বর্তমানে এমনই করুণ দশা বিরাজ করছে। চুনারুঘাট উপজেলার কাজিরখিল ও খনকারিগাও গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি মৃৎশিল্পীর পরিবার।

করোনা পরিস্থিতির আগেও যারা সামান্য রোজগার করে সংসার চালাতো আজ তাও বন্ধ। রোজগারের অন্য কোনো উপায় না থাকায় বাড়িতে বসে কিছু কিছু পণ্য তৈরি করে বিক্রি করলেও তা সংসারের খরচ চালানোর জন্য যথেষ্ট নয়। এছাড়া হাট বাজারে লোক সমাগম না থাকায় বাজারেও নেয়া যাচ্ছে না তৈরিকৃত মাটির পণ্যগুলো। তাই করোনায় এমন কঠিন সময়ে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন মৃৎশিল্পীর। মৃৎশিল্পী গৌপেন্দ্র পাল বলেন, করোনার কারণে একেবারেই আমাদের কাম কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু কিছু জিনিসপত্র বাড়িতে তৈরি করে রাখা হলেও তা বিক্রি হচ্ছে না বা কোথাও নিয়ে যেতে পারছি না। এমতাবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। তাই সরকারের কাছে দাবি জানাই সরকার যেন আমাদের সহযোগিতা করে। মিনতি রুদ্র পাল বলেন, আমরা নিজেরাই কি খাব আর ছেলে মেয়েদের কি খাওয়াব তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি। এমনভাবে চলতে থাকলে হয়তো আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। আমরা সামান্য রোজগার দিয়ে জীবন চালাই, এখন তাও বন্ধ। তাই সমাজের বৃত্তবানদের কাছে ও সরকারের কাছে সহযোগিতার দাবি জানাচ্ছি।

মনিদ্র রুদ্র পাল বলেন, আমরা সরকারিভাবে সামান্য কিছু ত্রাণ সামগ্রী পেয়েছি, যা যথেষ্ট নয়। উপজেলা প্রশাসন যদি আমাদের অবস্থার কথা বিবেচনা করে সহযোগিতা করতো আমাদের জন্য ভালো হতো। সাংবাদিক কাজী মাহমুদুল হক সুজন জানান, সমাজের অন্যান্য শ্রেণির তুলনায় কুমারপাড়ার মানুষদের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। তারা একবার খেলে অন্যবেলা খেতে পারছে না। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে। এরইমধ্যে ইউএনও কুমারপাড়া পরিদর্শন করে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন। চুনারুঘাট থানার ওসি শেখ নাজমুল হক জানান, করোনা সচেতনায় ও সহায়তায় মাঠে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে কুমার পাড়ার লোকজনদেরকে সহায়তা প্রদান করা হবে। ইউএনও সত্যজিত দাশ রায় বলেন, মৃৎশিল্পীরা আমাদের সমাজের অপরিহার্য একটি অংশ।

এরইমধ্যে আমি তাদের পাড়া পরিদর্শন করে এসেছি। সরকারের পক্ষ থেকে যা যা সহযোগিতা করার তা করা হবে। এছাড়া তাদের তৈরি মাটির কলস উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্রয় করা হবে। পরে এসব কলস সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও কালেঙ্গা বন বিটে গাছের ডালে স্থাপন করা হবে। এতে নানা প্রজাতির পাখি বাসা বাঁধবে। আর এতে করে মৃৎশিল্পীরাও আর্থিকভাবে লাভবান হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here