কলাপাড়ায় আ. লীগের পদ পেতে চলছে লবিং-তদবির

0
513
কলাপাড়ায় আ. লীগের পদ পেতে চলছে লবিং-তদবির

খবর৭১ঃ

রাকিব হাসান, পটুয়াখালীঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের তৃনমূলের কমিটি গঠন নিয়ে এখন রাজনীতিতে সরব নেতা-কর্মীরা। এতদিন যারা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি, জমি দখল, ঠিকাদারী, খাল-নদী-জলাশয় দখল, হাট-বাজার-খেয়া ঘাট ও বাস-ট্রাক-টেম্পু ষ্ট্যান্ডে বখরা আদায়, স্লুইজগেট দখল সহ শালিশ বানিজ্যে লিপ্ত ছিল তারাও এখন দলের পদ পদবী পেতে তদবির ও লবিংয়ে ব্যস্ত।

দলীয় নির্দেশনায় তৃনমূলের প্রতিটি ওয়ার্ডে দলের ১৫০ সক্রিয় নেতা-কর্মীর তালিকায় অনুসারীদের নাম অন্তর্ভূক্তিতেও চলছে তদ্বির। কমিটির পদ পদবী পেতে ফেসবুকে নেতার সাথে তোলা ছবি পোষ্ট দেয়া সহ চলছে নেতার গুনকীর্তন। পেশী শক্তির জানান দিতে মোটর সাইকেল শোডাউনও চলছে শহর থেকে তৃনমূলে। আগামী ১লা নভেম্বর থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত দলের তৃনমূল ও ২৭ নভেম্বর উপজেলা সম্মেলন অনুষ্ঠান নিয়ে উপজেলা আ’লীগ ইতোমধ্যে কয়েক দফা বৈঠক শেষ করেছে। এরপরও হাইব্রীড ও বিদ্রোহী ইস্যুতে তৃনমূল নেতা-কর্মীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে চাকামইয়া, টিয়াখালী ইউনিয়নের অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।

এছাড়া ধানখালী ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি এসএম শহিদুল আলম হাইব্রীড নেতা টিনু মৃধার তান্ডবে নিরাপত্তাজনিত কারনে সম্মেলন স্থগিত করার আবেদন করেছেন। এ নিয়ে উপজেলা আ’লীগ সম্পাদক বলছেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় হাইব্রীড ইস্যুতে কমিটি গঠন নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে দল। তবে ৭/৮ বছর আগে অন্য দল থেকে যারা দলে এসেছে তাদের হাইব্রীড বলা যাবে না বলে দাবী তার। উপজেলা আ’লীগের দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ হাবিবুর রহমান টিকলু জানান, ২০১১ সনের ৯ ডিসেম্বর বালিয়াতলি ইউনিয়ন আ’লীগ, ১০ ডিসেম্বর ধূলাসার, ১২ ডিসেম্বর মিঠাগঞ্জ, ১৩ ডিসেম্বর ডালবুগঞ্জ, ২০১২ সনের ১৩ জুন চাকামইয়া, ২৫ মার্চ টিয়াখালী, ২৯ অক্টোবর লালুয়া, ২২ মার্চ নীলগঞ্জ, ২১ জুলাই লতাচাপলি, ২৩ মার্চ ধানখালী, ২৪ মার্চ চম্পাপুর, কলাপাড়া পৌরসভা ৭ ডিসেম্বর, ২০১৩ সনের ৫ জানুয়ারী কুয়াকাটা পৌরসভা ও ২০ মার্চ উপজেলা কমিটির সর্ব শেষ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে। ইউনিয়ন আ’লীগের কমিটি ছিল ৬৫ সদস্য বিশিষ্ট ও উপজেলা কমিটি ছিল ৬৭ সদস্য বিশিষ্ট। এছাড়া দু’ভাইয়ের পারিবারিক দ্বন্দ্বে মহিপুর ইউনিয়ন আ’লীগ চলছে আহবায়ক কমিটি দিয়ে।

এরপর আর তৃনমূলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। বর্তমান সম্মেলনে ইউনিয়ন কমিটি ৬৭-৬৯ এবং উপজেলা কমিটি ৭১ সদস্য বিশিষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় দপ্তর সূত্র। এদিকে স্থানীয় আ’লীগের একটি সূত্র জানায়, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা আ’লীগ সভাপতি মো: মাহবুবুর রহমান সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর থেকে পাল্টে যেতে শুরু করে স্থানীয় রাজনীতির দৃশ্যপট। দলের অভ্যন্তরে পকেট কমিটি, একনায়কতন্ত্র সহ গড়ে তোলা হয় একাধিক ক্যাডার গ্রুপ। বঙ্গবন্ধুর খুনী মহিউদ্দীনের ভ্রাতুস্পুত্র ছাড়াও আত্মীয়-স্বজন লীগ, সেলফি লীগ, ফেসবুক লীগ’র দাপটে কোনঠাসা হয়ে পড়তে থাকে দলের দীর্ঘদিনের পরীক্ষীত ও ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। অস্বাভাবিক বিত্ত, বৈভব ও নগদ অর্থের উপার্জন বাড়ে দলের মাহবুব অনুসারী কয়েক শীর্ষ ক্যাডার, ভাই ইউসুফ আলী, বোন জামাই জামাত মজিবর, ভাগ্নে রুহুল আমিন, ভাগ্নি জামাই আবু সালেহ, নাতি জামাই লাল বাচ্চু, কুদ্দুস সার্ভেয়ার, পান্নু সিকদার সহ মাহবুবের ব্যক্তি স্বার্থে দলে যোগ দেয়া কয়েক অনুপ্রবেশকারীর। যাদের দাপটে দলের অনেক সিনিয়র নেতা সহ ত্যাগী নেতা-কর্মীরা দলীয় রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এরপর জ্ঞাত আয় বহির্ভূত শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জনে দুদকের জালে জড়িয়ে রাজনীতির মাঠ থেকে ছিটকে পড়ে মাহবুব। বহাল তবিয়তে থাকে ইউসুফ, রুহুল, সালেহ, মজিবর, পান্নু সিকদার ও লাল বাচ্চুরা।

এরা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের পর সম্পদের সঠিক তথ্য গোপন করে সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্ব ফাঁকি দিলেও অদ্যবধি টিকিটিও ছুঁতে পারেনি তাদের কেউ। দলের পদ পদবী পেতে ফের সক্রিয় এখন তারা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর কিছুটা সাইড লাইনে যেতে শুরু করে মাহবুব অনুসারী নেতা-কর্মীরা। স্থানীয় রাজনীতি মাঠেদলে ফের অনুপ্রবেশ ঘটে টিনু মৃধা, আনোয়ার হাওলাদার, দেলোয়ার মেম্বর, প্রভাষক শাহালম, মকবুল দফাদারদের। এবার দলের নাম ভাঙ্গিয়ে ভাগ্য বদলের তালিকায় উঠছে নতুন নাম। শুধু ভাগ্য বদলের তালিকায় নাম উঠছেনা নির্যাতিত, পরীক্ষীত ও ত্যাগী নেতা-কর্মীদের। তবে গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যেও ভিত্তিতে দলে শুদ্ধি অভিযান শুরু এবং প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ত্যাগী নেতা-কর্মীদের খুঁজে মূল্যায়ন করার ঘোষনার পর কমিটির পদ পদবী পেতে আস্থা বাড়ে ত্যাগী নেতা-কর্মীদের। তবে চম্পাপুর ইউনিয়নের পাটুয়া গ্রামের নব্য আওয়ামীলীগার ফকু মৃধার ছেলে (হত্যা মামলার আসামী) আনোয়ারুল ইসলাম সাগরের মত অনেকেই লেনদেনে ক্ষমতাসীন দলের পদ পদবী প্রত্যাশা করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা পরিষদ সদস্য ও চম্পাপুর ইউনিয়ন আ’লীগ সম্পাদক এস এম মোশাররফ হোসেন।

উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মঞ্জুরুল আলম বলেন, ’কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুসরন করেই চলছে দলের তৃনমূলের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া। তৃনমূলের কমিটিতে ত্যাগী নেতা-কর্মীরাই গুরুত্ব পাবে। একাধিক প্রার্থী হলে গঠন তন্ত্র অনুসরন করে ৯ ওয়ার্ড থেকে ১৯ জন সহ ইউনিয়ন কমিটির কাউন্সিলরদের নিয়ে ভোটের মধ্য দিয়ে তৃনমূলের নেতা নির্বাচন করবে দল।’ উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এসএম রাকিবুল আহসান বলেন, ’তৃনমূলের সম্মেলন নিয়ে আজও (৩১অক্টোবর) দলীয় অফিসে সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সভা হয়েছে। সম্মেলন নিয়ে তৃনমূল থেকে পাওয়া একাধিক অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। টিয়াখালী ও চাকামইয়া ইউনিয়নে দলের বিদ্রোহী ও বহিস্কৃত কয়েক নেতাকে নিয়ে তৃনমূলের আপত্তির প্রেক্ষিতে ওই দুই ইউনিয়নের সম্মেলন আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।

এছাড়া তৃনমূলের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে ও পরে দলে যোগ দেয়া অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে সতর্ক অবস্থানে আছে দল। তবে ৭/৮ বছর পূর্বে অন্য দল থেকে দলে যোগ দেয়া নেতা-কর্মীদের হাইব্রীড বলা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here