শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম জন্মজয়ন্তীর উদ্বোধন

0
353

রাজিব আহমেদ, শাহজাদপুর সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: বাংলা সাহিত্যের নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর কাছারি বাড়ীতে জেলা প্রশাসনের উদ্দ্যোগে ২দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান মালার উদ্ধোধনী অনুষ্ঠান বুধবার (৮মে) সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ উপলক্ষে কবির জীবন ও সাহিত্যকর্ম নিয়ে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উদ্ধোধনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ, প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী, শাহজাদপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক আজাদ রহমান, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার সোহরাব হোসেন, শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন খাঁন, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এলিজা খাঁন।

২য় সমাপনী দিনে (৯ মে) বৃহস্পতিবার প্রধান অতিথি থাকবেন স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাসিবুর রহমান স্বপন, বিশেষ অতিথি থাকবেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, উপজেলা চেয়ারম্যান আজাদ রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ লিয়াকত।

উল্লেখ্য ১৮৯০ থেকে ১৮৯৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শাহজাদপুরে আসতেন । শাহজাদপুরের জমিদারি একসময় নাটোরের রানী ভবানীর নামে ছিল। ১৮৪০ সালে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর নিলামে মাত্র তের টাকা দশ আনা দিয়ে জমিদারি কিনে নেন। এরপর থেকেই সেখানে শুরু হয় জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারের কর্তৃত্ব।

জমিদারি দেখাশোনার কাজে মাঝে মাঝে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আসতেন এবং সাময়িকভাবে বসবাস করতেন। ১৮৯৭ সালে কবির বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারি ভাগাভাগি করে দিলে কাকা জ্ঞানেন্দ্রনাথ ঠাকুর শাহজাদপুর, বড় ভাই সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহ এবং কবি নিজে পতিসরের দায়িত্ব পান।

এরপর তিনি আর শাহজাদপুরে আসেননি। শাহজাদপুরের অংশ চলে যাওয়ার কয়েক মাস পরে ১৩০৪ সালের ৮ আশ্বিন রবীন্দ্রনাথ পতিসর যাওয়ার পথে তার প্রিয় শাহজাদপুরে আর একবার এসেছিলেন।

এখানে রয়েছে রবীন্দ্র স্মৃতি জাদুঘর। জাদুঘরটিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহার্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে সোফা, পালকি, ঘুমানোর খাট, চায়ের কেটলি, লন টেনিস খেলার র‍্যাকেট, খড়ম, চিনামাটির জগ, চিনামাটির পানির ফিল্টার, পিয়ানো, শ্বেত পাথরের গোল টেবিল, চিঠি লেখার ডেস্কসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী।

জাদুঘরে ১৩০৭ বঙ্গাব্দের ২৮ ভাদ্রে লেখা শত বছরের পুরনো একটি চিঠি রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা এই চিঠি জাদুঘরটিকে সমৃদ্ধ করেছে। চিঠিটি নওগাঁ থেকে সংগৃহীত। ভবনটির পশ্চিমে বকুল গাছের গোড়ায় বৃত্তাকার বাঁধানো একটি মঞ্চ আছে।

এটি ‘রবীন্দ্র মঞ্চ’ বলে পরিচিত। এখানে অবস্থানকালে তিনি রচনা করেছেন অনেক উঁচুমানের সাহিত্য। এর মধ্যে রয়েছে সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালী, কল্পনা। ছোটগল্পের মধ্যে রয়েছে পোস্টমাস্টার, ব্যবধান, রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা, ছুটি, অতিথি।

ছিন্ন পত্রাবলির মধ্যে ৩৮টি পত্রও এখানেই লিখেছিলেন কবি। নাটকের মধ্যে রয়েছে বিসর্জন, প্রবন্ধের মধ্যে পঞ্চভূত। প্রতি বছর ২৫ বৈশাখ রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী জাতীয়ভাবে পালিত হয়, চলে ২দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান ও ৭দিন ব্যাপী মেলা। দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর দর্শনার্থী এসময় কাছারি বাড়িতে ভিড় করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here