​বিজিএমই ভবন ভাঙতে সময়ের আবেদন প্রত্যাহার চেয়ে নোটিশ

0
269

খবর৭১ঃ বিজিএমই’র অবৈধ ভবন ভাঙার জন্য এক বছর সময় চেয়ে আপিল বিভাগে করা আবেদন তিন দিনের মধ্যে প্রত্যাহার চেয়ে বিজিএমইএ’র সভাপতিকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সময় চেয়ে আবেদন প্রত্যাহার না করা হলে আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ রেজিস্ট্রি ডাক যোগে এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়েছে, এর আগে গত বছর ২ এপ্রিল ভবিষ্যতে আর সময় চাওয়া হবে না উল্লেখ করে বিজিএমইএ’র দেওয়া অঙ্গীকার আবেদন মঞ্জুর করে আপিল বিভাগ ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ভবন সরাতে সময় বৃদ্ধি করেন। আর কোনো সময় চাওয়া হবে না বলে অঙ্গীকার দেয়ার পরে যে সময় বৃদ্ধি করা হয় তা গত ১২ এপ্রিল পার হয়েছে। কিন্তু একজন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ডের মাধ্যমে ভবনটি সরাতে আরো এক বছর সময় বাড়াতে একটি আবেদন দায়ের করেছেন। যেটা গত বছরের ২৩ এপ্রিল আপিল বিভাগের দেয়া আদেশের সরাসরি লঙ্ঘন। আপনার কার্যক্রম আপিল বিভাগের আদেশের প্রতি অশ্রদ্ধা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে লঙ্ঘন যেটা আদালত অবমাননার শামিল। এ অবস্থায় ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সময় চেয়ে করা আবেদন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হচ্ছে। অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে আদালত অবমানননার মামলা দায়ের করা হবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের নভেম্বরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০০৬ সালের অক্টোবরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ভবনটির উদ্বোধন করেন। এরপর থেকেই সোনারগাঁও হোটেলের পূর্ব পাশে হাতিরঝিলের মধ্যে অবস্থিত ভবনটি বিজিএমইএ’র প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

কিন্তু জমির মালিকানা না থাকা ও জলাধার আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল ভবনটি ভেঙে ফেলার আদেশ দেয় হাইকোর্ট। ওই রায়ের কপি পাওয়ার পর আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল আবেদন করেন বিজিএমইএ। শুনানি শেষে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে আপিল বিভাগ। সর্বোচ্চ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদন খারিজ হওয়ায় রাজধানীর বহুল আলোচিত এই ভবন ভাঙার বিষয়ে আইনি সব প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যায়।

২০১৬ সালের নভেম্বরে ভবন ভাঙার নির্দেশ দিয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ভবন ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন আদালত। এবপর বার বার সময় আবেদন করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। রিভিও আবেদন করেও কাজ না হলে মুচলেকা দিয়ে গত ১২ এপ্রিল পর্যন্ত এই ভবনে থাকার অনুমতি নেয় বিজিএমইএ। ভবনটি ভাঙতে বিজিএমইএ’কে দেয়া সময় পার হয়ে যাওয়ার পরই এই ভবনটি ভাঙার কার্যক্রম শুরু করে।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ভবন ভাঙার জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে হাতিরঝিলে উপস্থিত হোন রাজউকের কর্মকর্তারা। ভবনটি ভাঙার কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন করা হয়। দিনভর নানা নাটকীয়তা শেষে সন্ধ্যার পর হাতিরঝিলের সৌন্দর্য্যের বিষফোঁড়াকে সিলগালা করে দেয়া হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here