৯৯ প্রকল্প নিয়ে খুলনায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

0
264

খবর৭১: উপহার’ নিয়েই খুলনা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সফরে খুলনাবাসী পাচ্ছে মোট ৯৯টি উন্নয়ন প্রকল্প। যার মধ্যে ৪৭টি উদ্বোধন করবেন তিনি। আর ভিত্তি স্থাপন করবেন ৫২টির। এসব প্রকল্পের মোট আর্থিক মূল্য দুই হাজার ৪১ কোটি টাকা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগেরও প্রধান। আর দলীয় প্রধানের সফর উপলক্ষে সমাবেশেরও আয়োজন করেছে তার দল। এই সমাবেশ স্থল থেকেই প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে খুলনা নগরীকে সাজানো হয়েছে নান্দনিক সাজে। রাতে নগরীর বিভিন্ন সড়কে করা হচ্ছে আলোকসজ্জা। এছাড়াও নগরীতে বিভিন্ন সড়কে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ও স্বাগতম জানিয়ে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে।

এছাড়াও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড সাটানো হয়েছে। জনসভা মঞ্চে স্থাপন করা হয়েছে ১১০ ফুট দীর্ঘ নৌকার আকৃতিতে মঞ্চ।

এই জনসভায় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বিগত কয়েকদিন ধরেই খুলনা ও আশপাশের জেলা সমূহের আলাদা আলাদা প্রস্তুতি সভা করছে আওয়ামী লীগসহ দলটির সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের দুটি লক্ষ্য রয়েছে। খুলনাবাসীকে সরকারের উন্নয়নে বাণী পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পাশে থাকার আহ্বান জানাবেন শেখ হাসিনা।

নির্বাচনের ক্ষেত্রেও যেমন আগামী জাতীয় নির্বাচন যেমন প্রধানমন্ত্রী লক্ষ্য, তেমনি আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও দলকে প্রস্তুত করতে চান আওয়ামী লীগ প্রধান।

শেখ হাসিনার এই সফরকে ঘিরে খুলনা এবং আশেপাশের জেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও প্রস্তুত হচ্ছেন নিজেদের প্রার্থিতার বিষয়ে আগ্রহের কথা জানান দিতে।

খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, ‘এ যাবত খুলনার জনসভায় যত জনসমাগম হয়েছে, এবার সকল রেকর্ড ভঙ্গ হবে।’

শনিবার বেলা ১১টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর ৫৮তম কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইইবি খুলনা কেন্দ্রে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বিকাল তিনটায় খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে জনসভায় অংশ নেবেন তিনি।

সর্বশেষ ২০১৩ সালের ২৪ জানুয়ারি খুলনায় জনসভা করেছিলেন শেখ হাসিনা। এর মধ্যে অবশ্য ২০১৫ সালে একবার খুলনায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি খুলনা শিপইয়ার্ডে একটি যুদ্ধজাহাজের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। তবে কোনো জনসভা করেননি।

ব্যাপক নিরাপত্তা

প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে তিন স্তরের নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেয়া হয়েছে সার্কিট হাউজ ময়দান এলাকা। তিনটি স্থানে ২৪টি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করছে পুরো মাঠকে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হুমায়ূন কবির জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাঁদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে সমগ্র খুলনা মহানগরীকে।

এক সপ্তাহ আগে থেকে সার্কিট হাউজ ময়দানের আশেপাশে সাদা পোশাকে পুলিশ এবং মঞ্চের আশেপাশে সশস্ত্র পুলিশ পাহারা রয়েছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। পুলিশ ও র‌্যাব পেট্রোল ডিউটিতে নেমেছে।

খালিশপুর ঈদগাঁহ ময়দান থেকে সার্কিট হাউজ পর্যন্ত ৯৩টি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানো হয়েছে। শুধু জনসভা স্থলেই ৩৫টি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। জনসভা স্থলে ২০০ নারী পুলিশ নিরাপত্তায় থাকবে। মাঠে মেটাল ডিরেক্টর এবং গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ট্রাফিক সার্জেন্ট যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করবে। এছাড়া হোটেল, ছাত্রাবাসগুলোতেও নজরদারি করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীার যাতায়াতের পথে সব দোকানপাট এক দিনের জন্য বন্ধ থাকবে।যেসব প্রকল্প উদ্বোধন

প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্প উদ্বোধন করবেন, সেগুলো নির্মিত হয়েছে ৬৭৫ কোটি ৩৭ রাখ টাকায়্ এগুলোর মধ্যে আছেগল্লামারী-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট সড়ক, রূপসা- শ্রীফলতলা-তেরখাদা সড়ক, তেরখাদা আব্দুলের মোড় আরঅ্যান্ডএইচ- মাঝিরগাথি জিসি ভায়া কোলা বাজার সড়ক,পাইকগাছা হাবিবনগর মাদ্রাসার মোড় হতে ডুমুরিয়া মাগুরখালি-কাঁঠালতলা বাজার পর্যন্ত সংযোগ সড়ক।

কেডিএ খানজাহান আলী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চালনা মোবারক মেমোরিয়াল কলেজ, খুলনা আইডিয়াল কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, খুলনা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের একাডেমিক ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এ ছাড়া খুলনা ওয়াসা ভবন, মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত ভবন, মহেশ্বরপাশা সরকারি শিশু পরিবার হোস্টেল ভবন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ভবন, মেডিকেল কলেজের অডিটরিয়াম ভবন, শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল ভবন, খুলনা ডায়াবেটিক হাসপাতালের নতুন ভবন, আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রকল্প উদ্বোধন করা হবে।

এর বাইরে কয়রা থানা ভবন, তেরখাদা থানা ভবন, রূপসা ফায়ার স্টেশন ভবন, রূপসা সেনহাটি নদী ফায়ার স্টেশন, বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, কৃষি বিভাগের অফিস-কাম-ট্রেনিং অ্যান্ড প্রসেসিং সেন্টার ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ছাড়াও রূপসা, দিঘলিয়া, তেরখাদা, ডুমুরিয়া ও পাইকগাছা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, পাইকাগাছা আরঅ্যান্ডএইচ-বাঁকা জিসি সড়কের কপোতাক্ষ নদের উপর সেতু, হাতিয়ার ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার ভবন, শিমলার আইট খেজুরডাঙ্গা আরএনজিপিএস কাম সাইক্লোন সেল্টার, দেয়াড়া পশ্চিমপাড়া আরএন জিপিএস কাম সাইক্লোন সেল্টারও উদ্বোধন করা হবে।

বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের সম্প্রসারণ, খুলনা শহীদ মিনার, রেলওয়ে স্টেশন এবং ইয়ার্ড রি-মডেলিং প্রকল্প, খুলনা জেলা স্টেডিয়াম, পাঁচতলা বিশিষ্ট কয়রা আধুনিক ডাকবাংলো, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য হোস্টেল, পাইকগাছায় কপিলমুনি ইউনিয়ন ভূমি অফিস, ডুমুরিয়াতে শোভনা ইউনিয়ন ভূমি অফিস, জলমা ইউনিয়ন ভূমি অফিসও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here