৭৯০ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশ বাতিল

0
384
৭৯০ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশ বাতিল

খবর৭১ঃ গেছে অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের দোকান। বিক্রি না হওয়ায় ইতিমধ্যে ক্রয়াদেশ দেওয়া বেশকিছু তৈরি পোশাক আপাতত না পাঠানোর জন্য ক্রেতারা এখানকার রপ্তানিকারকদের জানিয়েছে। আবার কিছু পণ্যের ক্রয়াদেশ বাতিল করা হয়েছে। দেশের গার্মেন্টস শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৬৯টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার মূল্যের ক্রয়াদেশ বাতিল করা হয়েছে।

স্থানীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৭৯০ কোটি টাকা। রপ্তানিকারকরা আশঙ্কা করছেন, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে আগামী দিনগুলোতে রপ্তানি ব্যাপকহারে কমে যেতে পারে। ফলে সার্বিকভাবে রপ্তানি বড়ো আকারের ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অন্যদিকে রপ্তানি করা সম্ভব না হলে উদ্যোক্তারা তারল্য সংকটে পড়তে পারেন। সেক্ষেত্রে আগামী দিনগুলোতে শ্রমিকের বেতন-ভাতা, ব্যাংকের অর্থ পরিশোধসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে পারেন।

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, এখন পর্যন্ত ৬৯টি কারখানা রপ্তানি আদেশ বাতিলের তথ্য জানিয়েছেন। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাতিল হয়েছে ৯ কোটি ৩০ লাখ ডলারের পণ্য। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে, ভবিষ্যতে আরো ক্রয়াদেশ বাতিল হতে পারে। ইতিমধ্যে অনেকে অর্ডারের পরিমাণও কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে রপ্তানিকারকদের জন্য তারল্য সংকটসহ খুব বাজে পরিস্থিতি হয়তো অপেক্ষা করছে। একাধিক বড়ো রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও তাদের রপ্তানি আদেশ বাতিলের কথা জানিয়েছেন।

অবশ্য ক্রয়াদেশ পাওয়ার পর পণ্য উত্পাদন প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় ক্রয়াদেশ স্থগিত বা বাতিল করলে সে দায়ভার ক্রেতাকে নিতে হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) কর্তৃক ‘বিশ্ব মহামারি’ হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, এ পরিস্থিতিতে রপ্তানিকারকদের ক্ষতি কিছুটা কমিয়ে আনতে বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বিজিএমইএ। বাতিল বা স্থগিত হওয়া রপ্তানির আদেশের বিপরীতে কিছুটা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।

বিজিএমইএর সহসভাপতি এম এ রহিম ফিরোজ ইত্তেফাককে বলেন, অনেকেই পণ্যের উত্পাদন প্রক্রিয়ায় রয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে ক্রয়াদেশ স্থগিত ও বাতিল হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি।

এদিকে বাংলাদেশ থেকে পোশাক ক্রয় করা ব্র্যান্ডগুলোও তাদের স্থানীয় বাজারে চাহিদা কমার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দিনগুলোতে ক্রয়াদেশের পরিমাণ কমিয়ে আনার কথা ভাবছে। বাংলাদেশ ক্রয় করা ইউরোপের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় একটি ব্র্যান্ডের এক জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইত্তেফাককে বলেন, ইউরোপ জুড়ে এখন এক ধরনের বন্ধ অবস্থা চলছে। ফলে আগামী দিনগুলোতে পোশাকের ক্রয়াদেশ কমতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ে অনেক ব্র্যান্ডের এদেশীয় প্রতিনিধিরা ইউরোপ ও আমেরিকায় অবস্থিত তাদের প্রধান অফিসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তারা যে কোনো বার্তার অপেক্ষায় আছেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের রপ্তানির ৮৪ শতাংশই আসে গার্মেন্টস খাত থেকে। এর বাইরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের রপ্তানিতেই নেতিবাচক প্রভাবের কথা জানা গেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here