খবর৭১ঃএকজন শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। এ জন্য শিশুর যত্ন নেয়া অনেক জরুরি। বিশেষ করে শিশুর খাবারের প্রতি যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।
প্রথমত, শিশুকে জন্মের পর থেকে পাঁচ মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে যাকে এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং বলা হয়।। পাঁচ মাস বয়স পর্যন্ত বুকের দুধই যথেষ্ট শিশুর পুষ্টি চাহিদা পূরণে।
তবে ছয় মাস বয়স থেকে শিশুকে মায়ের দুধের পাশাপাশি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিপূরক খাবারে অভ্যাস করতে হবে। কারণ তখন শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও মেধা বিকাশের জন্য পুষ্টি চাহিদা বেড়ে যায় যা শুধুমাত্র বুকের দুধ দ্বারা পূরণ করা সম্ভব নয়।
পরিপূরক খাবার প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলস ও ফাইবারযুক্ত হতে হবে। শিশুর জন্মের সময় কিছু আয়রন এবং জিংক শিশুর শরীরে পাঁচ মাস পর্যন্ত জমা থাকে তা ছয় মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যায় সে জন্য পরিপূরক খাদ্যে যেন আয়রন এবং জিংক থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
শিশুর খাদ্যটি নরম, পরিপাকযোগ্য ও কম মসলাযুক্ত হতে হবে। খাবারটি অবশ্যই সুস্বাদু হতে হবে। কারণ ছয় মাস থেকে এক বছর বয়সের মধ্যে শিশুর জিহ্বাতে টেস্ট বাড তৈরি হয় যার সাহায্যে শিশু খাবারের স্বাদ বুঝতে পারে। এজন্য খাবারটি যদি সুস্বাদু হয় তবে শিশু খাবারটি খাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করবে।
শিশুকে খাবার খাওয়ানোর সময় প্রথমত লক্ষ্য হবে খাবারটি শিশুর হজমে সমস্যা করছে কিনা, কারণ নতুন ধরনের খাবার অনেক সময় শিশু হজম করতে পারে না। এতে চিন্তার কিছু নেই, ধীরে ধীরে তাকে অভ্যাস করাতে হবে। শিশুর কোন খাবার খাওয়ার ফলে শরীরে এলার্জি দেখা দিচ্ছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি।
শিশুকে যেহেতু নতুন একটি খাবার দেয়া হচ্ছে সেহেতু খাবারটিতে অভ্যস্ত হতে দুই সপ্তাহের মতো সময় লাগতে পারে মায়েদের এ জন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে। খাবার খাওয়ানোর সময় কোনোভাবেই শিশুকে জোর করা যাবে না এতে শিশু খাবারের প্রতি উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। শিশুকে খাওয়াতে হবে অল্প করে কিন্ত একটু পরপর।
সেই সঙ্গে পরিবারের বিশেষ করে মায়েদের খেয়াল রাখতে হবে শিশুকে যেন একই ধরনের খাবার বারবার দেয়া না হয় এতে খাবারে একঘেয়ামি চলে আসে আর শিশু খেতে চায় না এবং খিটখিটে আচরণ করে।
শিশুর খাবার হতে হবে সব সময় বৈচিত্র্যময় এতে শিশুর খাবারের প্রতি আগ্রহ বেরে যায় সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানগুলো শিশু পেয়ে থাকে।
শিশুর খাদ্য
শিশুর পর্যাপ্ত পুষ্টি চাহিদা পূরণে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি,ফল ও মাছ-মাংস,ডিম বা ডিমের তৈরি খাবার, দুধের তৈরি খাবার প্রভৃতি গ্রহণ করানো অনেক জরুরি।
বাচ্চাদের খাবারে শস্যজাতীয় খাবার, ডাল বা বীজজাতীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। এসব খাবার দিয়ে সবজি খিচুড়ি, মাছ বা মুরগির খিচুড়ি, সুজি, পায়েস,ডিমের পাতলা নরম হালুয়া,ফলের রস, সবজি সিদ্ধ করে ম্যাস করে শিশুকে সুস্বাদু খাবার বানিয়ে খাওয়াতে হবে।
সেই সঙ্গে খাবার রান্নার সময় অবশ্যই অল্প পরিমাণ তেল ব্যবহার জরুরি কারণ বিভিন্ন খাদ্য থেকে পাওয়া ভিটামিন এ,ডি,ই,কে চর্বি ছাড়া শরীরে শোষিত হতে পারে না। এসব ভিটামিন হলো চর্বিতে দ্রবণীয় যার কারণে কিছু পরিমাণ তেল ব্যবহার করা জরুরি।
এসব বিভিন্ন ধরনের খাদ্যের মাধ্যমে শিশুর পর্যাপ্ত পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা সম্ভব যা শিশুর শক্তি জোগাতে,সুঠাম দেহ গঠনে, দেহের ক্ষয়পূরণে, মেধা বিকাশে এবং শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
সুতরাং, শিশুর খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তার দিন শেষ। আজ থেকেই শুরু করতে পারেন শিশুর জন্য পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ। আপনার শিশু আপনার ভবিষ্যৎ শিশুকে সময় দিন।
খবর৭১/ইঃ