খবর ৭১ঃ দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৫৫ রান! লিড হয়েছে মাত্র ১৩৩ রানের।
৭৮ রানের লিড নিয়ে আজ দিনের শেষ সেশনে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নামে বাংলাদেশ। শুরু হয় উল্টোপাল্টা শট খেলে আউট হওয়ার প্রতিযোগিতা। এটা যে একটা টেস্ট ম্যাচ, তা যেন ভুলেই গিয়েছিলেন ব্যাটসম্যানরা। দলীয় ১৩ রানে ২ রান করে ওয়ারিক্যানের বলে অযথা ড্রাইভ খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান ইমরুল। তার ব্যাট ছুঁয়ে বল আঘাত করে স্টাম্পে। তার ওপেনিং সঙ্গী সৌম্য সরকার দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ। ১০ বলে ১১ রান করে রোস্টন চেইসকে তুলে মারতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন তিনি।
প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হক চেইজের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে যান ১২ রান করে।
হতাশ করেছেন অধিনায়ক সাকিব। তিনিও ওয়ারিক্যানকে স্লগ সুইপে ছক্কা মারতে গিয়েছিলেন। বল হাতে ভালো করলেও মাত্র ১ রান করেই ওয়ারিক্যানের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ৩৫ রানে পরপর ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশকে পথ দেখাচ্ছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন আর মুশফিকুর রহিম। দেবেন্দ্র বিশুর বল ডিফেন্ড করতে গিয়ে মিঠু বোল্ড হলে ৫৩ রানে ইনিংসের অর্ধেক শেষ হয়ে যায় স্বাগতিকদের। মুশফিক ১১ এবং মিরাজ ০ রানে অপরাজিত আছেন।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে করা ৩২৪ রানের জবাবে আজ শুক্রবার নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৪৬ রানে অল-আউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরু থেকেই বাংলাদেশি স্পিনারদের তোপের মুখে পড়ে সফরকারীরা। দলের একমাত্র পেসার মুস্তাফিজুর রহমানও দারুণ বোলিং করেন। দলীয় ২৯ রানে কায়রন পাওয়েলকে (১৪) বোল্ড করে শুরু করেন তাইজুল। নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে (১৩) সৌম্য সরকারের দারুণ এক ক্যাচে পরিণত করেন সাকিব। ওভারের শেষ বলে বোল্ড করে দেন শাই হোপকে (১)। ৪ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে উইন্ডিজ।
৩১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন সুনিল অ্যামব্রিস এবং রোস্টন চেইস। বিরতির আগে রোস্টন চেইসের ক্যাচ ছেড়ে সাকিবকে উইকেটবঞ্চিত করেন মুস্তাফিজ। শেষ পর্যন্ত তাকে ফেরান অভিষিক্ত নাঈম হাসান। ৩১ রান করে নাঈমের বলে ইমরুল কায়েসের হাতে ধরা পড়েন চেইস। ফিরতি ওভারে বোলিংয়ে এসে আবারও আঘাত হানেন নাঈম। এই স্পিনারের ঘূর্ণিতে এলবিডাব্লিউ হয়ে যান সুনিল অ্যামব্রিস (১৯)। ৮৮ রানেই ইনিংসের অর্ধেক শেষ হয়ে যায় উইন্ডিজের।
৮৮ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ক্রিজে এসেই ঝড় তোলেন শিমরন হেটমায়ার। উইকেটকিপার শেন ডরউইচের সঙ্গে গড়েন ৯২ রানের দারুণ এক জুটি। হেটমায়ার ৪২ বলে তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। তার ৪৭ বলে ৫ বাউন্ডারি এবং ৪ ওভার বাউন্ডারিতে ৬৩ রানের ঝড়ো ইনিংস থামে মিরাজের ঘূর্ণিতে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হয়ে। এরপর দেবেন্দ্র বিশু নাঈম হাসানের তৃতীয় শিকার হলে ৭ম উইকেটের পতন হয় উইন্ডিজের। এরপর কেমার রোচ (২) এবং ওয়ারিক্যানকে (১২) এলবিডাব্লিউ করে অভিষেকে ৫ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখান ১৭ বছরের এই তরুণ স্পিনার।
এর মাঝেই হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন শন ডারিচ। বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবধান কমাতে দ্রুত রান তোলার তাগিদে হাত খুলে মারতে থাকেন তিনি। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে (৬) সাকিব নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করলে ২৪৬ রানেই শেষ হয়ে যায় উইন্ডিজের প্রথম ইনিংস। ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন ডারিচ। সবচেয়ে কম বয়সে ৫ উইকেট শিকার করে বিশ্বরেকর্ড গড়ে ফেলেছেন অভিষিক্ত স্পিনার নাঈম হাসান। বাংলাদেশ লিড পায় ৭৮ রানের।