৪ বছর ধরে শিকলবন্দী তৌফিক

0
300

খবর৭১ঃমৌলভীবাজার জলোর কুলাউড়া উপজেলার জয়জন্ডী ইউনিয়নের দক্ষিণ গিয়াসনগর গ্রামের একটি জীর্ণ কুটিরে ৪ বছর থেকে শিকলবন্দী মানসিক ভারসাম্যহীন তৌফিক মিয়া (৩২)। অচেনা কাউকে দেখলেই ফেল ফেল করে চেয়ে থাকেন তনি। কিন্তু চিকিৎসা করার মত সামর্থ্য তাদের নেই। অন্যের ক্ষতি যাতে না করে এজন্যই গত ৪ বছর ধরে শিকলবন্দী করে রাখা হয়েছে তৌফিককে।

জানা যায়, ইউনিয়নের দক্ষিণ গিয়াসনগর এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত ক্বারী রমিজ উদ্দিন ওরফে রমিজ ক্বারীর জীবিত দু’ছেলের মধ্যে তৌফিক মিয়া ছোট। জীবদ্ধশায় বিভিন্ন মসজিদ-মক্তবে চাকরি করে কোন রকমে স্ত্রী সন্তান নিয়ে চলছিলো রমিজ ক্বারীর পরিবার। ৪ বছর আগে মারা যান তিনি । মৃত্যুকালে রেখে যান স্ত্রী, ২ ছেলে ও ১ মেয়ে । পিতার মৃত্যুর পর পরিবারের হাল ধরেন বড় ছেলে মোশাহিদ আলী আয়না মিয়া। এখন দিনমজুরের কাজ করে মা, পাগল ভাই, বোন ও নিজের স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে সংসার চালিয়ে যাচ্ছনে তিনি।

তৌফিকের বড় ভাই মোশাহিদ আলী আয়না মিয়া জানান, চার বছর আগে তাদের পিতা মারা যাবার পর ছোট ভাই তৌফিক মিয়া পুরোপুরি পাগল হয়ে যায়। নিজের সামর্থ্য ও পার্শ্ববর্তীদের সাহায্যে ছোট ভাইকে অনেক ডাক্তার-কবিরাজ দেখিয়েছেন। কিন্তু টাকার অভাবে ভাল চিকিৎসা করে ভাইকে সুস্থ করে তুলতে পারেননি। আশপাশের মানুষের ক্ষতি করতে পারে এই আশঙ্কায় তাকে শিকলবন্দী করে ঘরে আটকে রেখেছেন।

সরেজমিন আয়না মিয়ার বাড়িতে গেলে পরিবারের এক করুণ দৃশ্য চোখে পড়ে। আধপাকা একটি ঘরের মধ্যে শুয়ে আছেন মানসিক ভারসাম্যহীন তৌফিক । তার পায় শিকল দিয়ে বাঁধা। ঠিকমত নাওয়া-খাওয়া না করায় নানা রকম রোগব্যাধী জেঁকে বসেছে তার শরীরে।

আয়না মিয়া আরও জানান, গত ৫ বছর থেকে নিজের স্ত্রী অসুস্থ। ডাক্তার দেখানোর পর বিভিন্ন পরীক্ষাতে জরায়ূতে সমস্যা ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন অপারেশন করতে হবে। টাকার অভাবে আজও স্ত্রীর অপারেশন করাতে পারেননি। গত ৬ মাস আগে পুকুরপাড়ে পড়ে ছোট বোন রুলি বেগমের পায়ের গোড়ালি ভেঙ্গে যায়। কোন উপায়ান্তর না দেখে ১২ শতকের পৈতৃক ভিটা থেকে কিছুটা বিক্রি করে বোনের চিকিৎসা শুরু করি। ৬ মাসে পর পর ৩টি অপারেশন করেন ডাক্তার। কিন্তু আজও আমার বোনটি সুস্থ হয়ে উঠেনি। তার পায়ের গোড়ালির ভাঙ্গা স্থানটি জোড়া লাগেনি।

সর্বশেষ গত ১ মাস আগে হঠাৎ স্ট্রোক করেন তার বৃদ্ধ মা । বর্তমানে তার পুরো পরিবারের সবাই প্রায় অসুস্থ।

তার ছোট ভাইয়রে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার প্রবল ইচ্ছা থাকলেও অর্থের অভাবে পারছেন না তিনি। মহৎপ্রাণ কোন সুহৃদ আয়না মিয়ার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাইলে (০১৭২৮-৯৯৬৪০১) এই মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here