১৫ রমজানের পর যাত্রীর চাপ বাড়বে নৌপথে

0
510

খবর ৭১ঃ ঈদ উপলক্ষে নৌপথে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীসেবা ও পরিবহনের সার্বিক দায়িত্বে নিয়োজিত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) এবং ঢাকা নদী বন্দর কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু হবে ১৫ রমজানের পর। এ লক্ষ্যে আগামী ১৯ মে (রোববার) বন্দর কর্তৃপক্ষের সর্বশেষ সভা শেষে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে।

প্রতিবছর দুই ঈদের সময় রাজধানী ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলমুখী প্রায় ৩০-৪০ লাখ যাত্রী নৌযাত্রায় শামিল হন। এর মধ্যে অধিকাংশ যাত্রীই প্রতিবছর বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) এবং ঢাকা নদী বন্দর কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা নিয়ে অভিযোগ করে থাকেন। এবার সেসব বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দিয়ে রোডম্যাপ নির্ধারণ করছেন নৌ কর্তা-ব্যাক্তিরা।

জানা গেছে, এবারের ঈদে যাত্রীদের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে এরইমধ্যে গত সপ্তাহে ঢাকা নদী বন্দর ও বিআইডব্লিওটিএ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে মতিঝিল হেড অফিসে একদফা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভা থেকে ঈদ যাত্রার বিষয়ে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা হয়েছে। এর মধ্যে ছিলো যাত্রী হয়রানী ও যাত্রীদের ভোগান্তি। সভায় এসব বিষয় সমাধানে দ্রুততার সঙ্গে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

একই বিষয় ও কর্মপরিকল্পনা সাজাতে বুধবার (১৫ মে) ফের বিআইডব্লিওটিএ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সদরঘাটে বসছে আরেক দফা সভা। সভায় আসন্ন ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি, লঞ্চের ফিটনেস চেকিং, লঞ্চের সংখ্যা, যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা, যাত্রীদের টার্মিনালে আসা ও নিরাপদে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে টার্মিনাল ত্যাগ ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এরপর আগামী ১৯ মে ফের আরেকদফা বৈঠক করবেন ঢাকা নদী বন্দর ও বিআইডব্লিওটিএ সদরঘাটে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সেই সভা থেকেই মূলত সব কর্মচারী ও কর্মকর্তার ঈদ দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হবে এবং ৩ দফা সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাজ করবে বিআইডব্লিওটিএ ও নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ।

এসব বিষয়ে ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম-পরিচালক আলমগীর কবির বলেন, আমরা এসব বিষয়ে এখন বেশ অভ্যস্ত। কিভাবে কম মানুষ নিয়ে বিশাল সমস্যা পাড়ি দেওয়া যায় তা আমাদের ছাড়া অন্যরা এতোটা ভালো বলতে পারবেনা। তাই এবার আমরা আগামী ১৯ তারিখের পর আমাদের কার্যক্রম শুরু করবো। আশা করছি প্রতিবছরের মতো এবারো যাত্রীদের খুব ভালোভাবে গন্তব্যে পৌঁছাতে ও ফেরাতে পারবো।

এদিকে ঈদ উপলক্ষে এরইমধ্যে নিজেদের সব প্রস্তুতিও শেষ করে নিয়েছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। আসছে ৫টির মতো নতুন আধুনিক লঞ্চ। এদের মধ্যে রয়েছে- মানামি, অ্যাডভেঞ্চার-৫, কুয়াকাটা-২, রাজহংস-১০ ও সুন্দরবন-১৪ নামের আর একটি লঞ্চ। এছাড়া প্রায় সব লঞ্চ ঈদে দিগুণ সার্ভিস দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করবে। এরই অংশ হিসেবে প্রতিবছরের মতো এবারো যাত্রী নামানো শেষে সঙ্গে সঙ্গে খালি লঞ্চ ফেরত আসবে এবং পুনরায় গন্তব্যে ছেড়ে যাবে।

লঞ্চ কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, এ মুহূর্তে রুটগুলোতে চলাচলকারী কোনো ফিটনেসবিহীন বা পুরাতন লঞ্চ নেই। তবে প্রায় বেশিরভাগ লঞ্চ ঈদ উপলক্ষে রং করা হয়েছে। যা এক লঞ্চ থেকে অন্য লঞ্চের সৌন্দর্য বাড়িয়ে নেওয়ার প্রতিযোগিতা থেকেই করা।

বিআইডব্লিওটিএ কর্তৃপক্ষও বলছে, এবার যেসব লঞ্চ ঈদে সার্ভিসে থাকছে সেগুলো গত এক বছর নিয়মিত চলাচল করেছে। হুট করে কোনো লঞ্চ চলাচলের অনুমতি আমরা দিচ্ছি না। নতুন যেসব লঞ্চ সার্ভিসে আসবে সেগুলো আমরা অবশ্যই চেক করেই নামতে দেবো। এছাড়া পুরাতন কিন্তু সার্ভিসে রয়েছে এমন লঞ্চের ক্ষেত্রে রং নয়, বরং ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা দেখা হবে।

এদিকে, প্রতিবছর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে বাস ও প্রাইভেটকার ফিরিয়ে দিলেও এবার ঈদে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে রায় সাহেব বাজার মোড়ের পর কোনো বাস প্রবেশ করাতে চায় না কর্তৃপক্ষ। কারণ হিসেবে বলছে, বাসের চাপেই প্রধানত এই অংশে যাত্রীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহান। যতটা দুর্ভোগ ঢাকা থেকে বরিশাল পর্যন্ত যেতে না পোহাতে হয় এর চেয়ে বেশি পোহাতে হয় এই অংশটিতে। এছাড়া ঈদের আগের তিন দিন নবাবপুর রোডের রাস্তা পুরোপুরি যাত্রীদের চলাচলের জন্য ফাঁকা রাখতে চায় নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে ঈদের ঘরমুখো যাত্রীদের টার্মিনালে প্রবেশের যে দুর্ভোগ পোহাতে হয় তা অনেকাংশে লাঘব হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here