১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ জালাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে লোক উৎসব

0
266

মঈনুল হাসান রতন হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিলেট বিভাগে অসংখ্য মরমী কবি, লেখক, আধ্যাত্মিক সাধক গান লিখেছেন। এসব গান সিলেট বিভাগ তথা সারা দেশে জনপ্রিয়। এসব মরমী কবি, লেখক, আধ্যাত্মিক সাধক আমাদের দেশের তথা হবিগঞ্জের সম্পদ। অথচ আমরা অনেকেই এসব গুণি মরমী কবি, লেখক, আধ্যাত্মিক সাধক সম্পর্কে জানি না। তাই হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে জন্ম নেয়া এসব মরমী কবি, লেখক ও আধ্যাত্মিক সাধকদের জাতীয়ভাবে তুলে ধরতে ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ জালাল স্টেডিয়ামে তিন দিনব্যাপী লোক উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ এসব কথা বলেন।তিনি আরো বলেন, একসময় জারি গান, পালাগান গ্রাম বাংলায় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। কালের আবর্তে এসব গান হারিয়ে যাচ্ছে। লোক উৎসবে এসব গান পরিবেশনের মাধ্যমে আবারো আমাদের নতুন প্রজন্ম পুরনো দিনের গান শুনতে পারবে। জানতে পারবে। পালাগান ফিরে পাবে তার অতীত ঐতিহ্য। লোক উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে পালা গান পরিবেশন করবেন রুমা সরকার। আর এ গান পরিবেশনের মাধ্যমে উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।তিনি আরো বলেন, লোক সংগীতে সমৃদ্ধ হবিগঞ্জ ব্রান্ডিং হতে পারে গানের মাধ্যমে।প্রেস কনফারেন্সে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক উপসচিব মোঃ সফিউল আলম, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি হারুনুর রশিদ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি রুহুল হাসান শরীফ ও মোহাম্মদ নাহিজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামান, দৈনিক জনকন্ঠের হবিগঞ্জ প্রতিনিধি রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন, সময় টিভির হবিগঞ্জ প্রতিনিধি রাশেদ আহমদ খান, চ্যানেল আই সেরাকন্ঠ তারকা বাউলা আশিক, দৈনিক প্রভাকরের নির্বাহী সম্পাদক শাহ জালাল উদ্দিন জুয়েল।মুক্ত আলোচনায় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ সফিউল আলম বলেন, হবিগঞ্জের অনেক স্বনামধন্য গীতিকারের গান বিভিন্ন শিল্পী পরিবেশন করছেন। কিন্তু এই গানের গীতিকার কে তা তারা জানেন না। ফলে অনেক গানের গীতিকারের সঠিক নাম পরিচয় বদলে যাচ্ছে। ভিন্ন নামে তা প্রচার পাচ্ছে। তাই গান পরিবেশনের সময় গীতিকারের নাম পরিচয় তুলে ধরতে তিনি শিল্পীদের প্রতি আহবান জানান। এছাড়া লেখনির মাধ্যমে হবিগঞ্জের মরমী কবি, সাহিত্যিক ও সাধকদের পরিচিতি তুলে ধরতে তিনি সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান।প্রেস কনফারেন্সে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ফজলুল জাহিদ পাভেল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মর্জিনা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ নুরুল ইসলামসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং হবিগঞ্জে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা অংশ নেন।প্রসঙ্গত, আগামী ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ জালাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে তিন দিনব্যাপী লোক উৎসব। হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠেয় উৎসব সফল করতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। গত ৩ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রস্তুতি সভা। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী এমপি। জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বিপিএম-সেবা পিপিএম। ২য় দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি লোক উৎসব বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কুদ্দুছ আলী সরকার, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী। ৩য় দিন ১৬ ফেব্রুয়ারি লোক উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গাজী মোঃ শাহনেওয়াজ ও প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী সুবীর নন্দী। তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রতিদিন স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ ও দেশবরেণ্য লোকসংগীত শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করবেন। প্রথম দিনে কুষ্টিয়ার লালন একাডেমি, বাউল সিরাজ, লায়লা, সেলিম চৌধুরী, বাউলা আশিক, চিশতি বাউলসহ স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ; দ্বিতীয় দিনে সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমি, বাউল আব্দুর রহমান, রনেশ ঠাকুর, শারমিন, গামছা পলাশ, শাহনাজ বেলীসহ স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ এবং তৃতীয় দিনে ফকির শাহাব উদ্দিন, কামরুজ্জামান রাব্বী, কাজী শুভ, রিংকু, রুমা সরকার ও দলসহ স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ সঙ্গীত পরিবেশন করবেন।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here