হবিগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দখলদারদের নৈরাজ্য

0
231

খবর৭১ঃ
মঈনুল হাসান রতন হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জ অংশের দু’পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা। সড়ক ও জনপথ বিভাগের এসব জায়গায় বিভিন্ন ধরনের ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন কয়েকজন প্রভাবশালী। এতে মহাসড়কে যানজট সৃষ্টিসহ জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। আবার যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। তবে অবৈধ দখলের কথা স্বীকার করে শিগগিরই এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী।

হবিগঞ্জে ১৩০ কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে। মহাসড়কের দু’পাশে রয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি। জেলার মাধবপুর থেকে নবীগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ২০টি স্থানে দীর্ঘদিন ধরে সড়ক বিভাগের এসব জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা। বসছে হাট-বাজার, বিভিন্ন দোকানপাটসহ পরিবহনের কাউন্টার। এর মধ্যে মাধবপুর বাজার, জগদীপুর, ওলিপুর, শায়েস্তাগঞ্জ, মিরপুর, আউশকান্দি অংশে সবচেয়ে বেশি দখল করা হয়েছে। প্রভাবশালীরা এসব জায়গা দখল করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন।

এদিকে, ফুটপাতে জনগণের চলাচলের পথে বিভিন্ন মালপত্র রেখে সৃষ্টি করা হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। এসব দখলদারিত্বের কারণে সৃষ্ট যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দূরপাল্লার পরিবহনসহ সাধারণ যাত্রীদের। ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও। তবে দখলদারদের নৈরাজ্যের সীমা ছাড়িয়েছে শায়েস্তাগঞ্জ পয়েন্টে। জেলার ৮টি উপজেলাসহ বৃহত্তর সিলেটবাসীর মিলনস্থল এটি। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে এই পয়েন্ট দিয়ে। অথচ এ স্থানে প্রভাবশালীরা মহাসড়কের পিচ পর্যন্ত দখল করে রেখেছেন। একটি গাড়ি পার্ক করলে অন্য আরেকটি গাড়ি যেতে সমস্যা হয়। আর মহাসড়কের মাঝখানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে ওঠানামা করানো হচ্ছে যাত্রীদের। এতে প্রায় সময়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সেই সঙ্গে যানজট তো লেগেই আছে সবসময়।

এখানেই শেষ নয় দখলদারদের নৈরাজ্য। শায়েস্তাগঞ্জের এই অংশে জেলা পরিষদের দেওয়া দুটি যাত্রী ছাউনি দখল করে চলছে ব্যবসা। ছাত্রী ছাউনির ভেতরে রাখা হয়েছে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন মালপত্র। এমনকি যাত্রী ছাউনির দেয়াল কেটে তৈরি করা হয়েছে চায়ের স্টলের রান্নাঘর। অভিযোগ রয়েছে, ফয়েজ মিয়া, জামাল মিয়া, আলমগীর হোসেনসহ কয়েকজন প্রভাবশালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমিতে ঘর নির্মাণ করে ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন। এসব দোকান থেকে তারা প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নিচ্ছেন। শায়েস্তাগঞ্জ পয়েন্টে ফয়েজ মিয়া ও জামাল মিয়ার অন্তত ৩০টি দোকান রয়েছে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ভোগদখল করে খাচ্ছে তারা। সড়ক ও জনপথ বিভাগের ভূমিকাও রহস্যময়। শুধু দখলেই সীমাবদ্ধ নয়, যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলে নষ্ট করা হচ্ছে পরিবেশ। দুর্গন্ধ আর ময়লা-আবর্জনার কারণে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসীর জীবন। সেই সঙ্গে যাত্রীদের দুর্ভোগ তো আছেই।

এ ব্যাপারে কাউছার মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শায়েস্তাগঞ্জ গোলচত্বরে অবৈধ স্থাপনাগুলো গড়ে উঠেছে। এতে সাধারণ যাত্রীদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। অবৈধ এসব স্থাপনার কারণে প্রায় সময়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। অথচ সরকার এগুলো উচ্ছেদের কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

রহস্যজনক কারণে সড়ক বিভাগ এখন পর্যন্ত এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করছে না। অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখলের কথা স্বীকার করেছেন দখলদাররাও। তবে তাদের দাবি, পরিত্যক্ত পড়ে থাকায় দখল করেছেন। তবে সরকার তুলে দিলে তারা চলে যাবেন।

এদিকে শিগগিরই এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করে দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, আরও আগেই এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচনের কারণে সম্ভব হয়নি। তবে এ সপ্তাহেই শায়েস্তাগঞ্জ ও ওলিপুরে অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হবে।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here