হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি কেন, খোঁজ নিচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী

0
489

খবর৭১ঃ বাংলাদেশে বসবাসকারী নিজ দেশের নাগরিকদের জন্য নতুন করে নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করেছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস। গত বুধবারের এই সতর্কতা জারি করায় যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, ‘ঝড়ঝাপটা ও নানা দুর্যোগের মধ্য দিয়েও বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন হঠাৎ করেই আমেরিকা একটি সিকিউরিটি অ্যালার্ট দিয়েছে। ঠিক কী কারণে এই সিকিউরিটি অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে, সেটি আমাদের জানা নেই। তাই অ্যালার্ট জারির আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা উচিত। তারপরও আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি, কেন এই সিকিউরিটি অ্যালার্ট।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বিকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সভায় এসব কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু হঠাৎ করে আগুন লাগার কারণেই কি এই অ্যালার্ট? আমেরিকা-লন্ডনেও তো আগুন লেগে অনেক মানুষ মারা যায়, সেসব দেশে তো আমাদের মতো এত সময় দিয়ে উদ্ধার অভিযানও চালানো হয় না। তাহলে কেন এই অ্যালার্ট, সেটিও জানানো উচিত। সন্ত্রাসবাদের সমস্যা সারা বিশ্বেরই। একটি ঘটনা ঘটলে তার প্রভাবও সারা বিশ্বে পড়ে। তাই আমেরিকার কাছে কোনো তথ্য থাকলে তা দ্রুত কর্তৃপক্ষকে জানানো উচিত।’

অগ্নিকাণ্ডের স্থানে মানুষের সেলফি তোলার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোথাও আগুন লাগলে কিছু মানুষ অযথাই ভিড় করে। ফায়ার সার্ভিস যখন অগ্নিনির্বাপণে যায়, তখনও কিছু লোক সেখানে ভিড় করে, তাদের মারতে যায়, এমনকি বনানীর আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পর্যন্ত ভেঙে দিয়েছে। একেকটা গাড়ির দাম আট থেকে দশ কোটি টাকা। তারা উদ্ধারকারীদের ওপর হামলা না চালিয়ে যদি এক বালতি করে পানিও নিয়ে যেতো, তাহলেও কাজ হতো।’

অগ্নিকাণ্ডের স্থানে ছবি তোলার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে সেখানে যায়, সেলফি তোলে। আগুন নেভানোর কাজ না করে সেলফি তুলতে যে কী আনন্দ তা আমি বুঝি না!’

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আয়বৈষম্য কমিয়ে এনে উন্নয়নের ছোঁয়া যেন প্রতিটি আনাচে-কানাচে পৌঁছে যায়, আমরা সেই কাজগুলো করে যাচ্ছি। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি, এগুলো শেষ হলে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। হতদরিদ্র বলে কেউ থাকবে না, তৃণমূলের মানুষদের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। এখন কেউ চাইলে কিন্তু অর্থ উপার্জন করতে পারে, চাইলে কাজ করতে পারছে লোকজন।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, ‘মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। মানুষ যেহেতু বিশ্বাস রেখেছে, সেই বিশ্বাস রাখার জন্য আমরা কাজ করছি। ২০৭১ সালে আমরা হয়তো থাকবো না, যারা থাকবে, উন্নত দেশের নাগরিক হিসেবে তারা স্বাধীনতার শতবর্ষ পালন করবে।’

জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন কৌশলের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তারা যে ব্যাপক দুর্নীতি করে অগাধ সম্পদের মালিক, সেটা এখনো বোঝা যায়। নির্বাচনের সময় আমরা তাদের দুর্নীতির চিত্র দেখেছি। একেকটা সিটের পেছনে যে টাকা, তাদের যে নমিনেশন-বাণিজ্য। যাদের নমিনেশন দিলে জিতত, তাদের না দিয়ে যারা মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছে তাদেরই নমিনেশন দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনে বিএনপির ন্যূনতম আগ্রহ দেখা যায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৮০ ভাগ ভোট পড়েছে, তারা জিততে পারেনি। ওদিকে লন্ডন থেকে ওহি নাজিল হয়। তারা জানে যে জনগণ তাদের ওপর আস্থা রাখতে পারেনি। যে কারণে নির্বাচনের নামে বাণিজ্য করা তারা মুখ্য মনে করেছিল, সেটাই তারা করে গেছে। জনগণের সমর্থন নিয়ে আমরা আবার সরকার গঠন করেছি।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here