সড়কে মৃত্যুমিছিল ও বিশৃঙ্খলা রুখতে গণপরিবহন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে : পবা

0
621

খবর ৭১:
সড়কে মড়ক থামছেই না। প্রতিদিন দূর্ঘটনা ঘটছে দেশব্যাপী কিন্তু তা প্রতিরোধ করতে তেমন কোন উদ্যোগ আমাদের চোখে পড়ে না। সড়কে নৈরাজ্য, মৃত্যুমিছিল ও জনদূর্ভোগ ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কোনটিরই সুফল স্থায়ী হচ্ছে না। উপরন্তু জনদূর্ভোগ ও যাতায়াত খরচ বেড়েই চলছে। সম্প্রতি সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহাজাহান খানের নেতৃত্বে সরকার কর্তৃক গঠিত কমিটির ১১১টি সুপারিশ প্রণয়ন করেছে। কিন্তু সরকারের এই উদ্যোগের কতটা বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে সাধারণ ও সচেতন মহলে রয়েছে বড় প্রশ্ন। আজ বুধবার পবা কার্যালয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তারা উক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো: আব্দুস সোবহান, পবার সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল, ক্যাব নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ, হাবিবুর রহমান মল্লিক, মো: সেলিম প্রমূখ।
আলোচনা সভা থেকে নেতৃবৃন্দ বলেন, পর্যাপ্ত মানসম্মত বাস না থাকায় মোটর সাইকেল, পাঠাও, উবারসহ বাড়ছে অন্যান্য পরিবহন এতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ও পরিবহন ব্যয় বাড়ছে, বাড়ছে যানজট ও নৈরাজ্য। বিভিন্ন রুটে যে পরিমান বাস চালানোর কথা তা চালানো হচ্ছেনা। একটি সিন্ডিকেট পুরো পরিবহন সেক্টরকে দখল করে নিয়েছে। এই পরিবহন সিন্ডিকেট হাইকোর্টের রুলকেও পরোয়া করেনা। তাদের জিম্মায় চলে যাচ্ছে কোম্পানীগুলোর বাস। যে কারণে যাত্রীদের সঠিক সেবা তারা প্রদান করতে পারছে না। বিভিন্ন কোম্পানি যে পরিমাণ ও যে মানের বাস চালানোর শর্তে রুট পারমিট পায় তারা তার চেয়ে অনেক কম পরিমাণ এবং নিম্নমানের বাস চালায়। কোম্পানীর যেখানে ৫০ টি বাস চালানোর কথা সেখানে তারা চালাচ্ছে ১০ টি বাস। কম বাস চালানোর কারণে যাত্রীদের গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে হচ্ছে। যাত্রীরা পরিবহন না পেয়ে চলন্ত বাসে ঝুঁকি নিয়ে উঠানামা করে এতে দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। আর চাহিদা থাকায় গেট লক না দিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে বাস কোম্পানিগুলো। তাই প্রয়োজন প্রতিটি রুটে পিক ও অফ-পিক সময়ে শর্ত অনুসারে পর্যাপ্ত পরিমাণে বড় বড় বাস চলাচল নিশ্চিত করা। রাস্তায় যাত্রী উঠানো নামানো ও বেপরোয়াভাবে বাস চালানো কমাতে বাসচালকদের বেতন ট্রিপ ভিত্তিক না করে মাসিক বেতনের ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। বাস চালক ও নির্দিষ্ট কোম্পানীর হাতে বাসের দায়িত্ব দিলে যাত্রীসেবার মান কমবে কিন্তু ভাড়া বাড়বে, সড়কে নৈরাজ্য আরো বাড়বে।
ঢাকা মহানগরীরর বিভিন্ন রুটে ৬ টি কোম্পানীর বাস চালানোর সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী। এতে বাস মালিকদের সিন্ডিকেট আরও শক্তিশালী দানবীয় আকার ধারণ করবে। সারাদেশ তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়বে। অনেকগুলো কোম্পানি থাকার পরও আমরা দেখি কিছু কোম্পানি সরকারের সিদ্ধান্ত, হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞাকেও বৃদ্ধাগুলি দেখায়। কোম্পানির পরিমাণ কমিয়ে অল্প কয়েকটি করা হলে তারা আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে যাবে। তাদের স্বেচ্ছাচারিতার কাছে পুরো যাতায়াত ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে।
মহানগরীসহ বিভিন্ন জেলায় ট্রাফিক প্ল্যানিং ডিপার্টমেন্ট করতে হবে। তারা বাসের রুট নির্ধারণসহ সময়, গতি ও অন্যান্য পরিকল্পনা গ্রহণ করবে এবং জাতীয়ভাবে একটি কেন্দ্রিয় ট্রাফিক প্ল্যানিং এবং মনিটরিং ডিপার্টমেন্ট থাকবে। এই ডিপার্টমেন্ট সারাদেশে চাহিদা অনুসারে রেল, নৌ, সড়ক ও আকাশপথের সাথে সমš^য় সাধন করে যাত্রী এবং মালামাল পরিবহন সেবার বিষয়গুলো নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনাক্রমে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ণ মনিটরিং করবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here