সৌদি আরবের গোপন পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমোদন দিল যুক্তরাষ্ট্র

0
294

খবর৭১ঃ সৌদি আরবের জন্য গোপন পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের জ্বালানিমন্ত্রী রিক পেরি এ অনুমোদন দেন। বুধবার এর একটি কপি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের হাতে এসেছে। সংবাদমাধ্যমটি বলছে ট্রাম্প প্রশাসনের সবুজ সংকেত পাওয়ায় সৌদি আরবের কাছে এ সংক্রান্ত প্রাথমিক প্রযুক্তি বিক্রিতে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আর কোনও বাধা থাকলো না।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ পেতে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং রাশিয়ার মতো দেশগুলোও আগ্রহী। ট্রাম্প প্রশাসন সৌদি আরবের সঙ্গে এ সংক্রান্ত প্রযুক্তি ভাগাভাগি করে নিতে একটি বিশদ চুক্তিতে উপনীত হতে চায়। তবে শেষ পর্যন্ত কারা কাজ পাবে সে সিদ্ধান্ত নেবে রিয়াদ। এ বছরের শেষদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি জানাতে পারে সৌদি সরকার। তবে দৃশ্যত যুক্তরাষ্ট্রই এ কাজ পেতে পারে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এর আওতায় দেশটিতে অন্তত দুইটি পরমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে, চুক্তি সামনে রেখে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো সৌদি আরবের জন্য এ সংক্রান্ত প্রাথমিক কাজ সম্পাদন করতে পারবে। তবে পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দাঁড়িয়ে যাওয়ার মতো সামগ্রী চুক্তির আগে সৌদিতে পাঠানো যাবে না। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে সৌদি আরব কি আদৌ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সীমাবদ্ধ থাকতে চায়? নাকি তার বাড়তি অভিলাষ রয়েছে। দেশটির পারমাণবিক বোমা অর্জনের উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিষয়টি ইতোমধ্যেই সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে।

প্রশ্ন উঠেছে, সৌদি আরব যেখানে কম খরচে বাইরে থেকে পারমাণবিক জ্বালানি সংগ্রহ করতে পারে, সেখানে নিজস্ব জ্বালানি উৎপাদনে যাওয়ার নেপথ্যের রহস্য কী?

গত বছরই ইরানকে মোকাবিলায় পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির হুমকি দিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে সৌদি আরবের ডি ফ্যাক্টো নেতা বা অনানুষ্ঠানিক সরকার প্রধান মনে করা হয়। সিবিএস’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব কোনও পারমাণবিক বোমা অর্জন করতে চায় না। তবে ইরান যদি পারমাণবিক বোমা তৈরি করে, তাহলে আমরাও যত দ্রুত সম্ভব তার অনুসরণ করবো।’

আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারে মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যকার লড়াই নতুন নয়। বরং এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে দুই দেশ কার্যত এক ধরনের ছায়াযুদ্ধে লিপ্ত। ১৯৭৯ সালে ইরানে সংঘটিত ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই ইরানকে শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করে আসছে সৌদি আরব। এরমধ্যেই তুরস্ক ও কাতারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে রিয়াদ। ইয়েমেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে সৌদি জোট। সব মিলিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে এ অঞ্চলে সৌদি আরবের ক্ষমতাবলয় এক ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। তাই একদিকে ইরানকে ঠেকানো অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে নিজের ক্রমক্ষয়িষ্ণু প্রভাব ধরে রাখতে দৃশ্যত পারমাণবিক বোমা অর্জনের দিকেই নজর দিচ্ছে রিয়াদ।
খবর৭১ /জি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here