সোহরাওয়ার্দীতে জনসভা -আ.লীগের নির্বাচনী মহড়ার প্রস্তুতি

0
258

খবর৭১: ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের বর্ষ পূর্তির দিনটিতে প্রতিবার নানা কর্মসূচি থাকে আওয়ামী লীগের। এবার সকাল থেকে শুরু হওয়া আনুষ্ঠানিকতা গিয়ে মিশবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

৪৭ বছর পর এই ময়দানে আবারও সেদিনের মতো জনসমুদ্র তৈরির চেষ্টায় ক্ষমতাসীন দল। আওয়ামী লীগ ৭ মার্চ প্রতিবার যথাযোগ্য সম্মানে পালন করলেও এবারের আয়োজনে ভিন্ন আমেজ আছে দুই কারণে।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রাষ্ট্রযন্ত্রের পক্ষ থেকে ভাষণটি প্রচারে নানা বাধা দেয়া হয়েছে ২১ বছর। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ভাষণটি বেজেছে রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে। আর ২০১৭ সালে সেটি ইউনেস্কোর বিশ্ব প্রামাণ্য ঐহিত্যের তালিকায় স্থান পেয়েছে। এই স্বীকৃতির পর এবারই প্রথমবারের মতো উদযাপিত হবে ৭ মার্চ। তাই আওয়ামী লীগের মধ্যে উৎসাহটা এবার বেশি।

আবার চলতি বছরই হতে যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ভোটের আগে রাজধানীতে বড় ধরনের সমাবেশ আয়োজনের সুযোগ আসবে বলে মনে করছে না ক্ষমতাসীন দল। এ কারণেও তারা শক্তি প্রদর্শন করতে চাইছে।

ব্যাপক লোক সমাগমের জন্য দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা করেছে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো। জনসভায় অংশ নিতে সংগঠনগুলোর নেতারা বিরামহীন প্রচার চালাচ্ছেন। সাম্প্রতিককালে কোনো জনসভাকে ঘিরে এত বেশি প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়নি।

ঢাকার পাশাপাশি আশেপাশের পাঁচ জেলা গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও নরসিংদী থেকেও নেতা-কর্মীদেরকে যোগ দিতে বলা হয়েছে। এজন্য বাসের পাশাপাশি ভাড়া করা হয়েছে ট্রেনও।

কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, জাতীয় নির্বাচনের বছরে ঢাকায় একটি বৃহত্তর জনসমাগম করা দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার পর এই প্রথম এ দিনটি আসছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সঙ্গে দিনটি পালন করবে। এদিন বিশাল জনসভা হবে। নেতাকর্মীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে এ জনসভা জনসমুদ্রে রূপ নেবে।’

দলের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আশা করছি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এই জনসভাকে কেন্দ্র করে ঢাকায় স্মরণকালের বৃহৎ জনসমাগম হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাপিয়ে সারা ঢাকা জনসমুদ্রে পরিণত হবে। একটি উৎসবের আমেজ তৈরি হবে। জনসভায় আগামী নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণাও স্থান পাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন।’

ইউনেস্কো ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐহিত্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় গত অক্টোবরে। এরপর আওয়ামী লীগ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে স্বীকৃতি উদযাপন করে। নাগরিক কমিটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই আয়োজন করে সমাবেশের।

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানায়, মূলত এবার জনসভার মাধ্যমে সরকারি দল নির্বাচনীম হড়া দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জনসভায় কয়েক লাখ মানুষের উপস্থিতির লক্ষ্য নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে।

দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই, সেই বার্তাটি এই সমাবেশ থেকে ছড়িয়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলের নেতারা।

সম্প্রতি দুর্নীতির মামলায় বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাজার পর বিএনপির আন্দোলনসহ বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশেই বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে নেতাকর্মীদের মাঠে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। এরই অংশ হিসেবে ৭ মার্চ ঢাকায় জনসভার পাশাপাশি সারাদেশে জেলা, উপজেলা পর্যায়েও জনসভাকরার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রস্তুত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান:

গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ময়দানকে প্রস্তুত করতে বিরামহীন কাজ করেছে আওয়ামী লীগ।

সমাবেশের আগের দিন ময়দানে মঞ্চ তৈরির কাজ শেষে বসানো হয় চেয়ার। সাজানো হয় প্যান্ডেল। নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরাও বসানো হয়েছে ‍উদ্যানের চার পাশে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ব্যানার-ফেস্টুন সাঁটানো হয়েছে। এতে ৭ মার্চভাষণের ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

যেসব কর্মসূচি:

বুধবার সকাল সাড়ে ছয়টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে ৭ মার্চের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করবে আওয়ামী লীগ।

এরপর সকাল সাতটায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ জানানো হবে। বেলা দুইটায় শুরু হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা।

সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খবর৭১/এস;

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here