সোনারগাঁওয়ে মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা সমাপ্ত

0
325

জহিরুল ইসলাম মৃধা,সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি ঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের শেষ দিনে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। গতকাল বুধবার বিশ্ব ভালবাসা দিবস ও মেলার শেষ দিনে দর্শনার্থীদের বাসন্তী রাঙা সাজে নানা বয়সী মানুষের উপচেপড়া ভীর লক্ষ্য করা গেছে।
আগত দর্শনার্থীদের পাশাপাশি বিদেশী পর্যটকরাও ভীড় করেছেন ফাউন্ডেশনের মেলা চত্বরে। বিশেষ করে তরুণ তরুণীদের ভীড় ছিল লক্ষনীয়। লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের প্রবেশের প্রতিটি সড়কেই সারাদিন যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে দর্শনার্থীদের পাশাপাশি সোনারগাঁওয়ের স্থানীয়রা চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন।
লোকজ ঐতিহ্যকে লালন, পরিস্ফুটন এবং চলমান জীবনধারায় সঙ্গে সম্পৃক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে গত ১৪ জানুয়ারি থেকে এ মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা শুরু হয়েছে। বুধবার মেলার শেষ দিন ছিল। তাছাড়া গতকাল ছিল বিশ্ব ভালবাসা দিবস। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা ঐতিহাসিক পানাম নগরীতেও ভীড় জমিয়েছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিশ্ব ভালবাসা দিবসে মেলা চত্বরে দর্শনার্থীর উপচে পড়া ঢল নেমেছে। মেলার কানায় কানায় পূর্নছিল ফাউন্ডেশন চত্বর। মেলার প্রবেশ পথ দিয়ে তরুণ তরুনী, শিক্ষার্থীসহ দর্শনার্থীদের পদচারণা ছিল লক্ষনীয়। মেলার প্রতিটি স্টলেই সারাদিন ভীড় ছিল।
মেলার আয়োজক বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপ জানান, মাসব্যাপী এ আয়োজন লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব পরিদর্শনে হাজার হাজার দেশি-বিদেশি দর্শকের সমাগম ঘটে। তাঁরা মেলা ও জাদুঘরের প্রাচীন ঐতিহ্যম-িত নিদর্শন, ব্যবহারিক নিদর্শন, প্রাচীন আসবাব তৈজসপত্র এবং মৃৎশিল্পের অতীত ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধন শীর্ষক বিশেষ প্রদর্শনী অবলোকনে বাঙালি জাতিসত্তাকে উপলব্দি করার প্রয়াস পান। দর্শনার্থীগণ মেলা ও লোকজ উৎসবে প্রবহমান শৈশব-কৈশর, গ্রাম-বাংলার মায়াময় রূপ খুঁজে পান। মাসব্যাপী দীর্ঘ আয়োজনে ছিল আবহমান বাংলার লোকজীবনের লুপ্তপ্রায় দৃশ্যাবলীর প্রদর্শনী।
সোনারগাঁও উপজেলার বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবেশনায়-নুনতা, কানামাছি, রুমাল চুরি, গোল্লাছুট, দাঁড়িয়াবাঁন্ধা, ফুলটোক্কাসহ গ্রামীণ খেলাধুলা পরিবেশিত হয়।
দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে লোকজ উৎসব উপলক্ষে ‘বাংলাদেশের অটিজম শিশুদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য’, ‘বাংলাদেশের যাত্রাগানে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধ’ু, ‘কারুশিল্পের ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধ’,
‘বাংলাদেশের বাউল: সাধনা ও গানের ঐতিহ্য পরম্পরা’, ‘বাঙালির লোককাজে নৌকা’ ও ‘সোনারগাঁওয়ের লোক ঐতিহ্য’ শীর্ষক ৬টি সেমিনার উপস্থাপিত হয়।
লোকজ উৎসব উপলক্ষে গ্রাম-বাংলার কারুশিল্পজাত পণ্যসামগ্রী বিক্রয়ের জন্য মেলা প্রাঙ্গণে ১৮০টি স্টল ছিল। মেলার বিশেষ আকর্ষণে বাংলাদেশের ৬০ জন কারুশিল্পীর কর্মপরিবেশ ৩০টি স্টলে পণ্যসামগ্রী উৎপাদনের সৃজনশীল প্রদর্শনী পর্যটকগণের কাছে উপস্থাপন করা হয়।
পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপ আরো জানান, মেলার শেষ দিন বুধবার ভালবাসা দিবসে রেকর্ড সংখ্যক দর্শনার্থীর উপস্থিতি ছিল। এবারের মেলা অন্যবারের চেয়ে খুব ভাল জমে উঠেছে। ফলে ফাউন্ডেশন চত্বর একটি উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
মেলার শেষ দিনে বুধবার বিকেলে ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের মে শিল্পী ছোট খালেক দেওয়ান, আসাদ বাবু, রুমা গোপ, আঁখি আলম, কাকলি সরকার, আইনাল হক বাউল ও তার দল এবং লালন পাঠশালার ছোট্ট সোনামণিগণ লোকসংগীত পরিবেশন করেন। সান্ধ্যকালীন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিতাস নাট্য সংস্থার পরিবেশনায় ‘রূপবান’ যাত্রাপালা ম স্থ হয়।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here