মিজানুর রহমান মিলন,
সৈয়দপুর থেকেঃ
সৈয়দপুরে বাল্যবিয়ে আয়োজনের দায়ে বর ও কনের বাবার ১৫ দিন করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার রায় ওই দন্ডাদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন বরের পিতা শহরের সাহেব পাড়া মহল্লার ওয়াজেদ আলী (৫০) ও কনের পিতা শহরের হাতিখানা উর্দূভাষী ক্যাম্পের মো. ইরফান হোসেন (৫৯)। দন্ডপ্রাপ্তদের আজ শুক্রবার সকালে নীলফামারী কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, শহরের সাহেবপাড়া মহল্লার ওয়াজেদ আলী ছেলে মো. ইমরান হোসেনের (২০) সঙ্গে শহরের হাতিখানা উর্দূভাষী ক্যাম্পের
বাসিন্দা মো. ইরফান আলীর মেয়ে মোছা. সাবিনা খাতুনের (১৫) বিয়ের দিনক্ষন ঠিক হয় কয়েক মাস আগে। গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল বিয়ের নির্ধারিত দিন। এ উপলক্ষে কনের বাড়ির পাশে একটি কমিউনিটি সেন্টারে ওই বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। দুপুর থেকেই অনুষ্ঠানে অতিথিদের আপ্যায়নও শুরু হয়। কনে পক্ষের খাওয়া দাওয়ার আয়োজনের শেষের দিকে বিকেলে বরসহ বরযাত্রী নিয়ে বিয়ের আয়োজনস্থল ওই কমিউনিটি সেন্টারে এসে উপস্থিত হন বর পক্ষ। এরই মধ্যে কনের বয়স নিয়ে এলাকার কিছু লোকজন কানাঘুষা চলতে থাকে। আর এ কানাঘুষার খবরে বাল্যবিয়ের আয়োজনের ঘটনাটি জানতে পারেন সৈয়দপুর ইউনাইটেড ভলান্টিয়ার এসোসিয়েশনের (সুভা) এক তরুণ সদস্য। সে বিষয়টি মুঠোফোনে সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকারকে অবহিত করেন। পরে ওই কর্মকর্তা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কমকর্তা নুরুন্নাহার শাহ্জাদী ও সৈয়দপুর থানা পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে তারা বাল্যবিয়ের আয়োজনের সত্যতা নিশ্চিত হন। ঘটনাস্থল থেকে বর কনের বাবা-মাসহ বর মো. ইমরান (২০) ও কনে মোছা. সাবিনা খাতুনকে (১৫) আটক করেন। পরে ভ্রাম্যমান আদালতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার বরের বাবা ওয়াজেদ আলী ও কনের বাবা মো. ইরফান হোসেনকে ১৫ দিন করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন। একই সঙ্গে কনের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবেন না বলে কনে পক্ষ আদালতে অঙ্গিকার করেন।