মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেটের দোকান হস্তান্তর নিয়ে প্রতারণা ও চাঁদা দাবির মামলায় ধার্য তারিখ আদালতে হাজির না হওয়ায় মার্কেটের প্রকল্প পরিচালকসহ অভিযুক্ত ৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। গত ২৭ জানুয়ারি নীলফামারীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক গ্রেফতারি পরোয়ানার ওই আদেশ দেন। আদালত কর্তৃক গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশের কাগজপত্র সৈয়দপুর থানায় পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছেন থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহজাহান পাশা।
এদিকে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর গতকাল (বুধবার) আদালতে হাজির হয়ে ৩ জন আসামী জামিন চাইলে আদালত আসামী শাহজাহান আলী কাজলের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে অপর দুই আসামী কাজলের পিতা মনসুর আলী (৫৫) ও ভাই আশরাফুল ইসলাম বাবলুকে (৩৫) জামিন দেন আদালত। এ মামলায় সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেটের প্রকল্প পরিচালক গুলজার আহমেদসহ ৩ আসামি পলাতক রয়েছে।
মামলা সূত্র জানায়, সৈয়দপুর শহরের শেরে বাংলা সড়কে সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেটের মিঠু কম্পিউটার এন্ড মোবাইল জগৎ এর মালিক মমিনুল ইসলাম মিঠু ২০১৭ সালের ৫ আগস্ট ওই মার্কেটের নিচতলায় আই ব্লকের ১৫ নম্বর দোকানটি ২৬ লাখ টাকায় ক্রয় করেন দোকান মালিক শাহজাহান আলী কাজলের (৩৩) কাছ থেকে। সে সময় তার সাথে ক্রয় চুক্তিও সম্পাদন করা হয়। মার্কেটের নীতিমালা মেনে সম্পাদিত চুক্তিতে স্বাক্ষী হিসাবে স্বাক্ষর করে প্লাজা মার্কেটের প্রকল্প পরিচালক গোলজার হোসেন। এ সময় কয়েক দিনের মধ্যে দোকান হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে দোকান হস্তান্তর না করে নানা অজুহাতে টালবাহানা শুরু করা হয়। এক পর্যায়ে প্রকল্প পরিচালক ও দোকান বিক্রেতাসহ তাদের সহযোগী নতুন বাবুপাড়া এলাকার মনসুর আলী, মো. আশরাফুল ইসলাম ওরফে বাবলু এবং বাঙ্গালীপুর ইউপির লক্ষণপুর বাড়াইশালপাড়ার আফজাল হোসেন ও হেলেনা আফজাল দোকান আত্মসাতের চক্রান্তে লিপ্ত হয়। ফলে গত ২০১৮ সালের ৮ জুন সংশ্লিষ্টদের কাছে ফের দোকান হস্তান্তরের চাপ দিলে তারা আরো ১৭ লাখ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় দোকানের দখল হস্তান্তর করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। তাদের ওই অর্থ দাবির প্রতিবাদ করলে তারা ব্যবসায়ী মিঠুকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ অবস্থায় দোকান ক্রেতা মমিনুল ইসলাম মিঠু বাদি প্রতারণা ও চাঁদাবাজি অভিযোগ এনে গত বছরের ২৭ জুন প্রকল্প পরিচালক মো. গুলজার আহমেদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সৈয়দপুর থানায় একটি মামলা করেন। পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক সোহরাব হোসেন ৬ মাস তদন্ত শেষে গত ১২ জানুয়ারি নীলফামারী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযুক্ত আসামীরা হলেন, সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেটের প্রকল্প পরিচালক গোলজার আহমেদ (৫৯), শহরের নতুন বাবুপাড়া এলাকার মনসুর আলী (৫৫), তাঁর দুই পুত্র মো. শাহজাহান আলী কাজল (৩৩) ও আশরাফুল ইসলাম বাবলু (৩৫), বাঙ্গালীপুর ইউপির বাড়াইশালপাড়া এলাকার আফজাল হোসেন (৪৫) ও তাঁর স্ত্রী হেলেনা আফজাল (৪০)।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহজাহান পাশা আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
খবর৭১/ইঃ