সৈয়দপুরে চাঞ্চল্যকর স্কুল ছাত্র হত্যার আসামী সাবেক সেনা সদস্য গ্রেফতার

0
334

খবর৭১:মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর থেকে ঃ
সৈয়দপুরে চাঞ্চল্যকর স্কুল ছাত্র সিরাজুল মনির খান সাকিব (১৪) হত্যা মামলার প্রায় সাড়ে ৩ বছর পর গ্রেফতার হওয়া সন্ধিগ্ধ আসামী সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মোতাহার হোসেনের (৪৬) ২ দিনের রিমান্ড গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে ওই আসামীকে আদালতে পাঠানো হবে। মঙ্গলবার দুপুরে নীলফামারী শহর থেকে তাকে আটক নীলফামারী সিআইডি পুলিশ।
নীলফামারীর অপরাধ তদন্ত বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহানুর বারীর নেতৃত্বে সিআইডির একটি দল তাকে আটক করে। পরে ওইদিনই সাকিব হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা সদস্যকে আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এ সময় আদালত শুনানী শেষে আসামীর বিরুদ্ধে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে কথা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বর্তমানে সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহানুর বারী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তবে রিমান্ডে আসামী কি তথ্য দিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করেননি।
সূত্র জানায়, গত ২০১৫ সালের ১৩ জুন রাতে সৈয়দপুর শহরের টেকনিক্যাল কলেজ পাড়ার ভাড়া বাসার একটি কক্ষ থেকে হাত-পা বাধা অবস্থায় সরকারি কারিগরি কলেজের ৮ম শ্রেণির ছাত্র সিরাজুল মনির খান সাকিবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে তার বাবা-মার সাথে থাকলেও ঘটনার দিন তার বাবা ইসলামী ফাউন্ডেশনের কর্মচারী হাবিবুর রহমানসহ পরিবারের লোকজন তাকে বাড়িতে রেখে গ্রামের বাড়িতে যান। রাতে তারা ফিরে এসে ছেলে সাকিবকে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে এলাকার লোকজনকে সাথে নিয়ে ঘরে সিলিং খুলে দেখতে পান তাদের সন্তানের ঝুলন্ত লাশ। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার এবং সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে থানায় নিয়ে আসেন। পরদিন ১৪ জুন লাশের ময়না তদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় সাকিবের বাবা হাবিবুর রহমান বাদি হয়ে সৈয়দপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এতে সন্ধিগ্ধসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামী করা হয়। পরে অধিক তদন্তের জন্য মামলাটি ওই বছরের ৪ নভেম্বর সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। সে সময় মামলাটি তদন্ত করেন সিআইডির উপ-পরিদর্শক মো. শাহেফুল ইসলাম।
তদন্ত চলাকালে হত্যার বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য পায় সিআইডি। ওই তথ্যের সূত্র ধরে আরও অধিক তদন্তের জন্য গত বছরের ৬ নভেম্বর মামলাটি আসে সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক বর্তমান পদোন্নতি প্রাপ্ত সহকারী পুলিশ সুপার শাহানুর বারীর কাছে। তিনি তদন্তকালে নিহত ছাত্রের পরিবার, আত্মীয় স্বজন, স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ভাড়া বাসার লোকজন ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন। পরে বেরিয়ে আসে গ্রেফতারকৃত আসামী মোতাহার হোসেনের নাম। বেশ কিছুদিন আগে সে সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট পদ থেকে অবসর নেয়া সাবেক ওই সেনা সদস্যকে ধরতে তৎপরতা শুরু করেন সিআইডি সদস্যরা। মঙ্গলবার সোর্সের দেয়া সংবাদে তদন্তকারী ওই কর্মকর্তা জানতে পারেন সাবেক সেনা সদস্য মোতাহার হোসেন নীলফামারী শহরে অবস্থান করছেন। পরে তার অবস্থান নিশ্চিত হলে নীলফামারী বাজার থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক ওই সেনা সদস্যের বাড়ি দিনাজপুর সদরের শংকরপুর এলাকায়। তার পিতার নাম মৃত জয়নাল আবেদীন। সে চাকুরীর সুবাদে টেকনিক্যাল কলেজ পাড়ায় একই ভাড়া বাসায় থাকতো। এদিকে স্কুল ছাত্র সাকিব হত্যা মামলায় সিআইডি কর্তৃক আসামী সাবেক সেনা সদস্য মোতাহার হোসেন গ্রেফতার হওয়ায় সকল শিক্ষার্থীর পক্ষে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ড. আমির আলী আজাদ। তিনি দীর্ঘ তদন্ত শেষে গ্রেফতার হওয়া আসামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

খবর৭১/জি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here