সৈয়দপুরে রেলওয়ের উচ্ছেদ অভিযানের ঘোষণা; শহরে আতংক

0
716
উচ্ছেদ

খবর৭১ঃ

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর থেকেঃ সৈয়দপুর শহরে রেলওয়ে জমিতে বসবাসকারীদের উচ্ছেদে দ্বিতীয় দফা গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পশ্চিম রেলের পাকশী বিভাগের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা। একই সঙ্গে গত এক সপ্তাহ জুড়ে চালানো হচ্ছে মাইকিং। দ্বিতীয় দফা গণবিজ্ঞপ্তি জারি ও উচ্ছেদের দিনক্ষণ ঘোষণা করায় শহরে রেলওয়ে জমিতে বসবাসকারীদের মাঝে উচ্ছেদ আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। সৈয়দপুর শহরের সিংহভাগ জমি রেলওয়ের অধিনস্থ হওয়ায় গোটা শহরে বিরাজ করছে আতংক। রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর শহরের রেলওয়ে ৮০০ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে রেলওয়ে পতিত জমিতে বিপুল সংখ্যক লোক বসবাস করেন। এদের মধ্যে বৈধ ও অবৈধ বসবাসকারীও রয়েছেন।

এর আগে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ রেলওয়ে জমিতে বসবাসকারী উচ্ছেদে গত ১৬ এপ্রিল প্রথম দফায় গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। ওই বিজ্ঞপ্তি মতে বৈধ ও অবৈধ স্থাপনার হালনাগাদ তালিকা তৈরী করে তারা। সে সময় পাড়া মহল্লা জরিপ করে অবৈধ স্থাপনা ‘লাল’ কালি দিয়ে চিহ্নিত করে। এর প্রায় ৪ মাস পর দ্বিতীয় দফা লাল নোটিশে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। একই সঙ্গে উচ্ছেদ অভিযানের তারিখ এবং চিহ্নিত উচ্ছেদ এলাকার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে শহরে ভীতি ও উচ্ছেদ আতংক বিরাজ করছে। রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তার ইস্যু করা দ্বিতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৈয়দপুর পৌরসভার সাথে বিরোধীয় ভূমি ও আটকেপড়া পাকিস্তানী ক্যাম্প বাদে সকল অবেধ দখলদারদের উচ্ছেদে আগামী ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

তবে যে সকল স্থাপনার বৈধ লাইসেন্স প্রদান করা আছে এবং রেলভূমির মালিকানা স্বত্ব নিয়ে মামলা চলমান আছে তাদেরকে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভূ-সম্পত্তি দপ্তরের মতামত গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর বাইরের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে। নোটিশে উচ্ছেদের তারিখ ও এলাকা উল্লেখ করে বলা হয়, আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর সৈয়দপুর কয়া মিস্ত্রীপাড়ার বাঁশবাড়ী রোডের উভয় পাশ হতে আদর্শ কলেজ রোড পর্যন্ত এবং গোলাহাট হতে মুন্সিপাড়া এলাকায় রেল ভূমিতে অবস্থিত সকল অবৈধ স্থাপনা। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর সৈয়দপুর অফিসার কলোনী, ধুপিমাঠ, দারুল উলুম মোড়, বাঙ্গালীপুর, নিচু কলোনী ও হাতিখানা রেল ভূমিতে অবস্থিত সকল অবৈধ স্থাপনা।

এদিকে এলাকা উল্লেখ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি এবং শহরে মাইকিং করায় রেলওয়ে জমিতে বসবাসকারীদের মাঝে উদ্বেগ উৎকন্ঠা দেখা দিযেছে। ফলে উচ্ছেদ অভিযান শহরে আলোচিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে শহরের সর্বস্তরে মিশ্র প্রক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে উচ্ছেদ বন্ধে শহরে প্রতিবাদ সভা সমাবেশ হয়েছে এবং উচ্ছেদ বিরোধী সংগঠনগুলো উচ্ছেদ বন্ধে আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সংগঠনগুলো রেলের জমিতে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ না করতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধনসহ শান্তিপূর্ণ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে বলে জানিয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here