সেনাদের হেলিকপ্টার হামলার ভয়ে বৌদ্ধরা পালিয়ে আসছেন বাংলাদেশে

0
232

খবর৭১ঃ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও নৃ-তাত্ত্বিক রাখাইন বিদ্রোহীদের মধ্যে গত কয়েক দিনের লড়াইয়ে শয়ে শয়ে নৃ-তাত্ত্বিক সংখ্যালঘু সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসছেন।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও মানবাধিকার কর্মীর বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এমন তথ্যই দিয়েছে।

বান্দরবান জেলার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কমান্ডার কর্নেল জহিরুল হক খান জানান, ৩৮টি বৌদ্ধ পরিবারের সদস্যরা বলেছেন- সামরিক হেলিকপ্টার থেকে হামলার ভয়ে তারা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন।

বান্দরবানের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের ১৩৬ জনের একটি দল বসবাস করছেন। গত ডিসেম্বরে সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষে রাখাইন ও চীন রাজ্যে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

বিদ্রোহীদের ধ্বংস করে দেয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন মিয়ানমার নেতারা। রাখাইন রাজ্যে অধিকতর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে বিদ্রোহ করছে রাখাইন আর্মি।

সংঘাতকবলিত অঞ্চলগুলোতে সাহায্য সংস্থার কর্মীদের ঢুকতে দিচ্ছে না মিয়ানমার। জটিল নৃ-তাত্ত্বিক বিভাজনের সংকটের মধ্যে সেখানে নতুন করে বেসামরিক লোকজন ভোগান্তিতে পড়েছেন।

২০১৭ সালের আগস্টের দিকে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

বেসরকারি সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস কমিশনের সদস্য উইন থেইন বলেন, তিনি গভীর জঙ্গলের ভেতর আশ্রয়কেন্দ্রে খুমি, চো ও রাখাইন নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীর এসব শরণার্থীকে দেখতে গিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, কাছেই সামরিক হেলিকপ্টার ও গুলির শব্দ শুনে চীন রাজ্যের অসমতল পালিটওয়া শহরতলির দুটি গ্রাম থেকে রবি ও সোমবার এসব শরণার্থী পালিয়ে এসেছেন।

‘তাদের মধ্যে কেউ কেউ সেনাবাহিনীকে লুটপাট ও বাড়িঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেখতে দেখেছেন,’ বললেন উইন থেইন।

তিনি বলেন, কিছু কিছু শরণার্থী শিশু মারাত্মকভাবে অসুস্থ হলেও তাদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার সুযোগ নেই। ভীষণ ঠাণ্ডার মধ্যে তাদের একটি কম্বলের ব্যবস্থাও নেই।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম শুক্রবার বলছে, ২০০ রাখাইন ও অন্যান্য নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীর সদস্যকে বাংলাদেশে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। তাদের মধ্যে ৩৮ স্কুলশিক্ষার্থীও রয়েছে।

দেশটির সরকারি পত্রিকায় এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, বাস্তুচ্যুত লোকজনকে মানবিক সহায়তা দিচ্ছে সরকার। বিদ্রোহীরা দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করতে এসব লোকজনকে বাংলাদেশে নিয়ে গেছেন।

গত ৪ জানুয়ারি মিয়ানমারের সীমান্ত পুলিশ ফাঁড়িতে আরকান আর্মির হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। মিয়ানমার সেনাবাহিনীও পাল্টা হামলায় একই সংখ্যক বিদ্রোহী নিহত হওয়ার দাবি করেছে।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here