সুশাসনের অভাব ও দুর্নীতি বিনিয়োগের বাধা: রুশনারা

0
307

খবর৭১ঃ
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্যবিষয়ক বিশেষ দূত রুশনারা আলী এমপি বলেছেন, সুশাসনের অভাব ও দুর্নীতি বাংলাদেশে বিনিয়োগের বাধা। এটা শুধু বর্তমান সরকারের আমলেই নয়; আগেও এসবই চ্যালেঞ্জ হিসেবে ছিল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবকাঠামো ও তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আগ্রহী। তবে যে কোনো দেশে বিনিয়োগের জন্য তার পরিবেশ থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

রুশনারা আলী সোমবার ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনারের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই অভিমত ব্যক্ত করেন। এ সময় ব্রিটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্ল্যাক উপস্থিত ছিলেন। ব্রিটিশ বাণিজ্য দূত হিসেবে রুশনারার এটা তৃতীয় বাংলাদেশ সফর।

সোমবার বিকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। সফরকালে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

রুশনারা আলী সোমবার চট্টগ্রাম গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করবেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, ব্রিটিশ কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। তবে বিনিয়োগকারীরা উপযুক্ত পরিবেশ চান। এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ একত্রে কাজ করছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত হয়েছে। তবে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, অবকাঠামো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, প্রযুক্তি, শিক্ষা প্রভৃতি খাতে ব্রিটিশ বিনিয়োগ আছে। নতুন নতুন বিনিয়োগকারীরা এসব খাতে আরও বিনিয়োগে আগ্রহী। বাংলাদেশে সড়ক, সেতু প্রভৃতি খাতে আরও বিনিয়োগ দরকার। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এসব খাতে বিনিয়োগ হতে পারে।

বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করে রুশনারা আলী বলেন, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। এটা খুবই ইতিবাচক দিক। তবে এই উন্নয়ন হতে হবে সবাইকে যুক্ত করে। জনগণ যাতে উন্নয়নের সুফল পায়। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে বর্তমানে বিপি, শেল, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকসহ প্রায় আড়াইশ’ ব্রিটিশ কোম্পানি বিনিয়োগ করেছে।

রুশনারা আলী বলেন, যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যারা আছেন তারাও এদেশে বিনিয়োগ করতে চান। আমাদের আসলে দুটি দেশ। এখন ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্ম ব্যবসা-বাণিজ্যে আসছে। তারা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে খুবই আগ্রহী। তারা বাংলাদেশের পণ্য যেমন মসলিন এ দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে আমদানিতে আগ্রহী। ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের রেমিটেন্সও গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ কার্যকর হওয়ার পর অস্ত্র ছাড়া বাংলাদেশের সব পণ্য যুক্তরাজ্যে বিনা শুল্কে রফতানি করতে পারবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশ এই সুবিধা পেয়ে থাকে। ইইউ’র সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গেলেও দ্বিপক্ষীয়ভাবে বাংলাদেশকে একই সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে যুক্তরাজ্য বদ্ধপরিকর।

রোহিঙ্গা সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে রুশনারা আলী বলেন, এটা একটা ভয়াবহ ট্র্যাজেডি। গত বছরের আগস্টে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা হয়। তারপর বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের যেভাবে আশ্রয় দিয়েছে; গোটা বিশ্বের জন্য তা এক অনুপ্রেরণার অংশ। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে মিয়ানমারের ওপর যুক্তরাজ্য চাপ অব্যাহত রাখবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here