সুন্দরবনে বছরে কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হলেও দুর্যোগকালীন নেই মাথা গোঁজার পর্যাপ্ত ঠাঁই

0
275

হেদায়েত হোসাইন,বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
জেলে ও বাওয়ালীদের নিকট থেকে বছরে কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হলেও প্রাকৃতীক দূর্য়োগে নিরাপদে আশ্রয় নেবার জন্য নেই পর্যাপ্ত শেল্টার বা আশ্রয় কেন্দ্র। সুন্দরবনে ঘূর্নিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রের অভাবে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে লক্ষাধিক জেলে-বনজীবী পর্যটকরা। বঙ্গোপসাগরে জলোচ্ছাস ও প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন জেলে,বাওয়ালী ও বনজীবীদের একমাত্র আশ্রয়স্থল ঘূর্নিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কারিতাসের সহায়তায় ৯০দশকে সুন্দরবনে ৫টি সাইক্লোন সেন্টার নির্মিত হয়।রক্ষাবেক্ষন আর বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে তার একটি আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় বর্ষার মৌসুমে ও ঘূর্নিঝড়ের আশংকায় জেলে ও বনজীবীদের উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যে থাকতে হয়। সুন্দরবন বিভাগ ও জেলেদের মাধ্যমে জানা গেছে, বছরের প্রায় ৬ থেকে ৭ মাস বনজ সম্পদ, মৎস্য আহরণ ও শুটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ কাজে নিয়োজিত থাকে অধিকাংশ জেলেরা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সুন্দরবন ও সমুদ্রে মৎস আহরণের কাজে আসা হাজার হাজার জেলেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মৎস্য আহরণ কাজে নিয়োজিত থাকতে হয়। সুপার সাইক্লোন সিডর, আইলা, মহাসেনের মত ঘূর্নিঝড় ও জলোচ্ছাসের মধ্যে তাদের জীবন জীবিকায় লড়তে হয়। কিন্তু দুর্যোগকালীন মুর্হুতে জেলেদের গভীর সমুদ্র কিংবা তৎসংলগ্ন এলাকায় মাথা  ঠাই থাকে না। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতায় একটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ৫টি আশ্রয় কেন্দ্র নির্মান করলেও সিডর পরবর্তী গত ৭ বছরেও কোনো আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ বা সংষ্কার না করায় এগুলো   ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।পূর্ব সুন্দরবনের দুবলারচর, শেলার চর, মাঝের চর, মেহেরআলীর চর ও আলোরকোলে ৫টি আশ্রয় কেন্দ্র নির্মান করা হয় নব্বই দশকে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে দুর্যোগকালীন সময়ে প্রায় ৩ হাজার লোকের ঠাঁই হলেও বাকী জেলে ও বাওয়ালীদের আশ্রয় নিতে হয় ট্রলার, নৌকা ও বনের বিভিন্ন গাছে।
সুন্দরবন বিভাগ আরো জানায়, প্রতি বছর ইলিশ আহরণ ও শুটকি মৌশুমে সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগর এলাকায় লক্ষাধিক জেলে সুন্দরবনে জীবিকা আন্বেষনে নিয়োজিত হয়। প্রতি মৌশুমে সরকার জেলেদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করলেও দুর্গম ওই সকল     এলাকায়     নেই  জেলে-বনজীবীদের মাথা গোজার ঠাই আশ্রয় কেন্দ্র।সুন্দরবন সংলগ্ন শরনখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের মৎস্য ব্যবসায়ী আওয়াল জোমার্দ্দার জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জেলেরা নিরুপায় হয়ে বনের ভিতর বিভিন্ন গাছে আশ্রয় নিয়ে থাকে। জেলেদের জন্য সাগর পাড়ের জেলে পল্লীগুলোতে কমপক্ষে ৫০টি আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন বলে তিনি দাবী করেন।শরণখোলা মৎসজীবি সমিতির সভাপতি মো, আবুল হোসেন জানান, জেলেদের কাছ থেকে সরকার প্রতি মৌশুমে মোটা অংকের রাজস্ব আদায় করলেও তাদের নিরাপত্তার জন্য তেমন কোন ব্যবস্থা নেই সমুদ্র ও চরাঞ্চলে। এমনকি সাগরে জেলেদের আগাম বিপদ সংকেত জানানোর তেমন কোনো ব্যবস্থাও নেই। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদ হাসান জানান, বেসরকারি সংস্থা কারিতাসের উদ্যোগে যে আশ্রায় কেন্দ্র নির্মান করা হয়েছিল সেগুলো সে অবস্থাতেই রয়েছে। তবে নতুন আশ্রয় কেন্দ্র নির্মান ও পুরাতনগুলো সংষ্কার করা হলে জেলে ও বনজীবীদের দুর্যোগকালীন সময়ে ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হবে না।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here