উজ্জ্বল অধিকারী, বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে তীর সংরক্ষন বাধে হঠাৎ ধস নেমেছে। যমুনার পানি কমতে থাকায় স্রোতে পশ্চিম জোতপাড়া অংশে বিলীন হয়েছে প্রায় ৫শ মিটার এলাকা। মুহুর্তের মধ্যেই বিলীন হয়ে যায় ১৮টি পরিবারের বসতি ও ঘরবাড়ি। এ
ধসের বিস্তৃতি ঠেকাতে তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় তীরবর্তী সবার মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র এবং এলাকাবাসী জানায়, চৌহালী উপজেলা সদরের পৌনে ৪ কিলোমিটার এবং টাঙ্গাইলের সোয়া ৩ কিলোমিটার মিলে ৭ কিলোমিটার এলাকা যমুনা হাত থেকে রক্ষায় এশিয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ১২২ কোটি টাকার কাজ ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর থেকে শুরু করে তা গতবছর শেষ হয়। এতে রক্ষা পায়
নদীর পূর্ব পাড়ের টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সরাতৈল থেকে দক্ষিনে নাগরপুর উপজেলার পুকুরিয়া, শাহজানীর খগেনের ঘাট, সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার ঘোরজানের চেকির মোড়,আজিমুদ্দি মোড়, খাসকাউলিয়া, জোতপাড়া পর্যন্ত।
তবে নদীর পানি কমতে থাকায় শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে হঠাৎ প্রচন্ড স্রোতে বাধের পশ্চিম জোতপাড়া অংশে ভাঙ্গন দেখা দেয়। যা
শুক্রবার ভোর পর্যন্ত প্রায় ৫শ মিটার ধসে যাওয়ায় বাধ থেকে বিচ্ছিন্ন হয় পাথরের বোল্ড ও জিও টেক্স। বিলীন হয় এর পাড়ের ১৮টি ঘরবাড়ি। কোন রকমে তীরে উঠে জীবন রক্ষা করে অন্তত ৫০ জন মানুষ।
অসহায় এসব মানুষের আর্তনাদে ছড়িয়ে
পড়ে শোকের ছায়া ও আতংক। তারা অভিযোগ করেছেন নিম্ন মানের কাজ ও রক্ষনা-বেক্ষনে যথাযর্থ পদক্ষেপ না নেয়ায় বাধটি ধসের মুল কারন। ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত বৃদ্ধা আখলিমা খাতুন, সরবেশ আলী,দোকানদার আবু সাইদ ও আনোয়ার হোসেন জানান, আমরা ১৮টি
পরিবার পুরোপুরী ক্ষতিগ্রস্ত। আশা নিয়ে বাধের পাড়ে বাড়ি করেছিলাম সব যমুনায় বিলীন হয়ে গেল। যা ছিল সব শেষ হয়ে গেল।
এখন আমাদের আর কিছু রইলো না। বাধটির নিন্মমানের কাজ ও তদারকি যথাযথ না হওয়ায়
ধসে গেল। আমরাও সব খোয়ালাম। এদিকে ভাঙ্গনের খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে ছুটে
আসেন স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত আনিসুর রহমান। তিনি অসহায় মানুষদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পাশে থাকার কথা
জানিয়ে বলেন,আমরা সকল পরিবারকে আপাতত খাদ্য সামগ্রী দিচ্ছি।
পরে এদের পুনঃবার্সনের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। এছাড়া বাধের তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত টাঙ্গাইল পাউবো ভাঙ্গনের বিস্তৃতি ঠেকাতে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। স্থানীয়রা আশংকা করছে যদি ধস ঠেকাতে কোন পদক্ষেপ না নেয়া হয় তাহলে বাধ আরো বিপর্যয়ে পড়বে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমানের সাথে ফোনে কথা হলে তিনি জানান,আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
খবর৭১/এসঃ