সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে প্রকল্পের নামে ভিক্ষুক ও মসজিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

0
239

উজ্জ্বল অধিকারী, বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দি রুরাল পুয়র (ডরপ) শাখা প্রতিষ্ঠানের অধীনে মসজিদ ভিত্তিক টিউবওয়েল, স্যানিটেশন ও ভিক্ষুক পুর্নবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন সমন্বয়কারী মোঃ আবু মুনসুর ফকিরের বিরুদ্ধে । বছর পেরিয়ে গেলেও মসজিদ ও ভিক্ষুকদের প্রকল্পের পুর্ন কাজ এখনো বাস্তবায়ন করেননি।

জানা যায় ,গত ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর আর্থিক সহায়তায় ডরপ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যামে ১৯টি মসজিদে অগভীর নলকূপ ও স্যানিটেশন ল্যাট্রিন স্থাপন করার জন্য প্রকল্পে কাজ শুরু করে। চর শমেসপুর, তামাই রোড, কদমতলি ও অন্যান্য মসজিদ কমিটি সুত্রে জানা যায়, সমৃদ্ধি কর্মসুচী প্রকল্পের কাজের বিবরন দিয়ে যে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে তাতে মোট ব্যায় ধরা হয়েছে ২৮ হাজার টাকা। কিন্তু এই প্রকল্পের কাজের টাকা ব্যায়ের ব্যাপারে মসজিদ কমিটিকে কিছু জানানো হয়নি। এছাড়া ১৯টি মসজিদের মধ্যে অধিকাংশ মসজিদেই প্রকল্পের সাইনবোর্ড লাগিয়ে কাজ অসমাপ্ত রেখেই অর্থ উত্তোলন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মসজিদ কমিটি এ ব্যাপারে কিছু না জানলেও এলাকার সচেতন মহল ও ডরপ প্রতিষ্ঠানের কর্মচারিরা ইউনিয়ন সমন্বয়কারী আবু মুনসুর ফকিরের এরূপ দুর্নীতি মানতে নারাজ। অপরদিকে ভিক্ষুক পুর্নবাসন প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দের গোপনীয়তা নিয়ে প্রকল্পের অধিকাংশ টাকা আত্মসাত করেছে ইউনিয়ন সমন্বয়কারী আবু মুনসুর ফকির। এ বিষয়ে মাইঝাইল গ্রামের ভিক্ষুক কাজেম শেখের মেয়ে জানান ১ লখ টাকা দেয়ার কথা থাকলেও তার অসুস্থ্য বাবাকে ১ লাখ টাকার হিসেব বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। প্রকল্পের দেয়া মোট টাকা তার বাবাকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য দাবী জানান তিনি । এমনিভাবে অন্যান্য ভিক্ষুকদের প্রকল্পের টাকা আত্মসাত নিয়ে নানাবিধ অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। শমেসপুরের ভিক্ষুক বুলবুলি বেগম জানান, ১ বছর পুর্বে ৩০ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে একটি গরু কিনে দেয় ইউনিয়ন সমন্বয়কারী আবু মুন্সুর ফকির যা ১ বছর পালন করার পরেও ৩০ হাজার টাকা দাম হয় না। সে গরুর ।ভিক্ষুক বুলবুলির অভিযোগ ১ লখ টাকার জিনিস বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও তাকে তা বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। পক্ষান্তরে যা দিয়েছে সেগুলোর মূল্য অনেক কম। এছাড়া অফিসে মুনসুর ফকিরের নানাবিধ দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় তার এক সহকর্মি শিক্ষা সুপারভাইজার আব্দুল মালেককে চাকুরিচ্যুত করারও অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ অফিসের কিছু কর্মচারিরা মুনসুর ফকিরের বিরুদ্ধে উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে বার বার অভিযোগ জানিয়েও কোন সমাধা পায়নি বলে জানা গেছে। এসময় ডরপ এর সমাজ উন্নয়ন কর্মকর্তা ধনু রঞ্জন দেবনাথ জানান, আবু মুনসুর ফকিরের বিরুদ্ধে ভিক্ষুক পুর্নবাসন ও মসজিদের টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগ উঠেছে তদন্ত সাপেক্ষে তার যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হোক । ডরপ প্রতিষ্ঠানে সমৃদ্ধি কর্মসুচি বাস্তবায়নের পন্য সরবারহ কারী শমেসপুরের হাজি পান্না জানান, ১৯টি মসজিদের মধ্যে ৭টিতে কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে বাকিগুলোর অসমাপ্ত আছে । পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মোঃ নুরুল বাসার গত ১৪ ফফেব্রুয়ারি ২০১৮ ডরপ প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প পরিদর্শনে এসে গণমাধ্যমকে জানান, আমাদের প্রকল্পের কর্মসুচীর ভুল ত্রুটিগুলো সরজমিনে আপনারা দেখেন এবং এগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়নের বিষয়ে সহায়তা করেন।

কোন অসৎ ব্যাক্তি যেন প্রকল্পের টাকা আত্মসাত করতে না পারে। এবিষয়ে ডরপ প্রতিষ্ঠানের ইউনিয়ন সমন্বয়কারী আবু মুনসুর ফকিরের কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কৌশলে এরিয়ে যান। এরপর এই প্রতিবেদককে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here