সারাক্ষণ আমার একটাই চিন্তা-দেশের উন্নয়ন:প্রধানমন্ত্রী

0
270

খবর ৭১: ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৫ ঘণ্টা ঘুমান আর বাকি সময় দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

আজ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেশ ও জাতির উন্নয়ন ও অর্জনে অনন্য-অসাধারণ অবদানের জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা মানুষের তো দিনে ২৪ ঘণ্টা সময়। এই ২৪ ঘণ্টা সময় থেকে আমি মাত্র ৫ ঘণ্টা নেই। এটা আমার ঘুমানোর সময়।’

তিনি বলেন, ‘এছাড়া প্রতিটি মুহূর্ত আমি কাজ করি দেশের মানুষের জন্য, দেশের জনগণের উন্নয়নের জন্য। এর বাইরে আমার জীবনে আর কোনো কাজ নেই।’

শনিবার (২১ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।

মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন, অস্ট্রেলিয়ায় ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ এবং ভারতে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি-লিট ডিগ্রি লাভসহ নানা অর্জনের জন্য সরকারপ্রধানকে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি কোনো উৎসবে যাই না। সারাক্ষণ আমার একটাই চিন্তা-দেশের উন্নয়ন, দেশের মানুষের উন্নয়ন।’

তিনি বলেন, ‘আমি নিজে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি কোথায়, কোন মানুষটা কি কষ্টে আছে। তাদের সমস্যার সমাধান করা।’

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে পাওয়া রাজনৈতিক শিক্ষার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেখেছি ছোটবেলা থেকে আমার বাবা কত ভালোবাসতেন এদেশের মানুষকে। দেখেছি মানুষের জন্য তার হাহাকার। এই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কত পরিকল্পনা তার ছিলো। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশকে গড়ে তুলবো। প্রতিটি গ্রামকে শহরে গড়ে তুলবো আমরা। প্রতিটি গ্রাম হবে উন্নয়নের জায়গা, প্রতিটি গ্রামের মানুষ পাবে নাগরিক সুবিধা। ঠিক শহরের মানুষ যে সুবিধা পায়, সেইভাবে আমরা গ্রামের ‍মানুষের অবস্থার উন্নতি করতে চাই। শিক্ষা-দীক্ষায় সব দিক থেকে বাংলার মানুষ উন্নত জীবন পাবে, ক্ষুধা আর হাহাকার থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার আগে তার উদ্দেশে মানপত্র পাঠ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে তিনি এই মানপত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

সংবর্ধনার শুরুতে পরিবেশন করা হয় জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বেলা সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। তিনি অতিথি মঞ্চে আসন নিলে অভ্যর্থনা সঙ্গীতের পাশাপাশি জাতীয় ও দলীয় পতাকা নেড়ে তাকে স্বাগত জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে ‘শেখ হাসিনা, তোমার জন্য বাংলাদেশ ধন্য’ এই শিরোনামে একটিসহ দু’টি গান পরিবেশন করেন শিল্পী মমতাজ। দেশের ঐতিহ্য তুলে ধরে পরিবেশন করা হয় ‘আমার প্রিয় বাংলাদেশ’।

এরপর প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে ‘রূপকাহিনীর রূপকথা’ শিরোনামে কবিতার সঙ্গে পরিবেশন করা হয় নৃত্য। দেশের জনপ্রিয় শিল্পীদের দলীয় সঙ্গীতের সঙ্গে নান্দনিক নৃত্যে সরকারপ্রধানের প্রশংসায় পরিবেশন করা হয় ‘তুমি শেখ হাসিনা, তুমি অনন্য’। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা হয়।

মূল মঞ্চে আসন নেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতা ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।

উন্নয়ন ও অর্জনে অসাধারণ সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দিতে আয়োজিত জনসমুদ্রে রূপ নেওয়া সমাবেশে সকাল থেকেই জনতার ঢল নামে।

লাল টি-শার্ট, মাথায় সবুজ ক্যাপ, হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে উদ্যানের সবুজ চত্বর থেকে শুরু করে শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর আশপাশের এলাকায় জনতার ঢল নামে।

নৌকা প্রতিকৃতি নিয়ে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, নেচে-গেয়ে জনসভায় আসেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। খণ্ড খণ্ড মিছিল, ট্রাক-পিকআপ ভ্যানে চেপে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হন তারা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাপিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকাগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here