সাগর কন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের ঢল

0
1305
সাগর কন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের ঢল
ছবিঃ সংগৃহীত

খবর৭১ঃ

দখিনের আকাশে কালো মেঘের লুকচুরি খেলা। আবার কখনো মেঘ, কখনো বৃষ্টি। এরই মাঝে কুয়াকাটার বেলাভূমিতে হাজির হয়েছে দেশ বিদেশের ভ্রমন পিপাসু হাজারো পর্যটক। দীর্ঘ পাঁচদিনের ঈদের ছুটিতে দূরদূরান্ত থেকে আসা কর্মব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি দূর করতে সৈকতে বালিয়ারীতে প্রিয়জনদের সাথে অবিরাম ছুটোছুটি আর সমুদ্রের গর্জন যেন ওইসব পর্যটকদের মুগ্ধ করে তুলেছে। তবে ঈদের প্রথম দিনে পর্যটকদের তেমন কোন ভিড় না থাকলেও তৃতীয় দিন বুধবার সকাল থেকে পুরো সৈকত জুড়ে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। আর এসব পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও কাজ করছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটার পর্যটক স্পটগুলো এখন উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পরিবার পরিজন কিংবা কেউ পছন্দের মানুষটিকে নিয়ে নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে ছুটে এসেছেন। তাদের হাতে থাকা স্মার্ট ফোনের সেলফি ও ভিডিও ক্লিপস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, লাল কাকড়ার অবিরাম নাচানাচি, বালুকা বেলায় প্রিয়জনের সাথে ছোটাছুটি আর সমুদ্রের গর্জন শুনতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

সাগর কন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের ঢল
সূর্যদয়, সাগর কন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। ছবিঃ সংগৃহীত

ঐতিহ্যবাহী কুয়া, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, আড়াই শতবর্ষী নৌকা, ইলিশ পার্ক, কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান, ঝাউ বন, লেম্বুর চর, চর গঙ্গামতি, লাল কাঁকড়ার দ্বীপ, ফাতরার বন, এশিয়ার সর্ববৃহৎ সীমা বৌদ্ধ বিহার ও রাখাইন পল্লীসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানেও বাড়ছে পর্যটকদের সংখ্যা। এদিকে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোতে কেনা বেচার ধুম পড়েছে। তবে অধিকাংশ হোটেল, মোটেলের রুম বুকিং রয়েছে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

ঢাকা থেকে আসা ব্যবসায়ী মো.মজিবুর রহমান বলেন, কখনও মেঘ আর কখনও বৃষ্টি এরই মাঝে সমুদ্রের উত্তল  ঢেউয়ে গা ভেজানোর আনন্দই যেন আলাদা। আবার এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সব কষ্ট ঘুচিয়ে দিয়েছে আমাদের। অপর পর্যটক বিউটি আকন জানান, সৈকতে বেঞ্চিতে বসে সমুদ্র দেখা ও তার উথাল পাতাল ঢেউয়ের গর্জন অসাধারণ লেগেছে। কুয়াকাটা ইলিশ পার্কে ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, পর্যটকদের ব্যাপক ভিড় রয়েছে। আমরাও চেষ্টা করছি পর্যটকদের বিনোদন দিতে।

কুয়াকাটা হোটেল মোটেল মালিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মিলন ভূইয়া জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারনে ঈদের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন তেমন কোন পর্যটক ছিলো না। আজকে থেকে পর্যটকের চাপ বেড়ে গেছে। হোটেল মোটেলগুলোতে বুকিং চলছে।

কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সভাপতি এ এম মিজানুর রহমান বুলেট জানান, কয়াকাটায় বিচ ম্যানেজমেন্টের একটি কমিটি আছে। কিন্তু তার কোন কার্যক্রম নেই। কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট পুলিশ জেনের পরিদর্শক মো.খলিলুর রহমান জানান, সৈকতে পর্যটকদের নির্বিঘ্নে চলাফেরা এবং অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে দিকে সার্বক্ষনিক নজর রাখা হচ্ছে।

মহিপুর থানার ওসি সোহেল আহম্মেদ জানান, পর্যটকদের ব্যাপক চাপ রয়েছে। তাদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, জেলা পুলিশ ও মহিপুর থানা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে মোতায়েন রয়েছে।

সাগর কন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের ঢল
সূর্যাস্ত, সাগর কন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। ছবিঃ সংগৃহীত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here