সাংবাদিকের পা ভেঙ্গে মৃত ভেবে নির্জন স্থানে ফেলে গেল দুর্বৃত্তরা

0
377

খবর৭১ঃসুনামগঞ্জের এক সংবাদ কর্মীর ওপর নৃশংস হামলা চালিয়ে তার ডান পা ভেঙ্গে দিয়ে মৃত ভেবে হাওরের পাশে নির্জন স্থানে ফেলে রেখে গেছে সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তরা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে ফেরার পথে উপজেলার জয়পুর ও নিয়ামতপুর গ্রামের মধ্যবর্তী হাওরের নির্জনস্থানে ওই সাংবাদিকের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।

আহত ওই সাংবাদিকের নাম জয়ন্ত সেন ও তিনি সুনামগঞ্জ থেকে প্রকাশিত স্থানীয় একটি দৈনিকের শাল্লা উপজেলা প্রতিনিধি বলে জানা গেছে।

ওই রাতেই আশংকাজনক অবস্থায় তাকে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. বিশ্বজিৎ গোলদার রাতে সাংবাদিকদের জানান, জয়ন্ত সেন শঙ্কামুক্ত। তবে তার পা ভেঙে যাওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেটে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।

সাংবাদিক জয়ন্তর পরিবার থেকে জানানো হয়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এলাকার গোপাল রায়ের নেতৃত্বে রিংকু রায়, ইন্দ্র রায় নামের সন্ত্রাসীরা দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ জয়ন্ত সেনের বাড়ি ঘেরাও করে। এ সময় জয়ন্ত বাড়িতেই ছিলেন।

এক পর্যায়ে দুর্বৃত্তদের ভয়ে সন্ধ্যায় তিনি বাড়ি থেকে সুনামগঞ্জে যাবার পথে ফের ওৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা নিয়ামতপুর ও জয়পুর নামক স্থানে তাকে বেধড়ক মারধর করে তার ডান পা ভেঙ্গে দেয়।

এছাড়াও মাথা, গলা, কাঁধ ও বুকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। দুর্বৃক্তরা তাকে মৃত ভেবে হাওরের নির্জন স্থানে ফেলে রেখে যায়।

এদিকে এলাকার লোকজন বাড়ি আসার পথে তাকে সংজ্ঞাহীন দেখতে পেয়ে তার পরিবারের লোকজনকে খবর দেয় ও দ্রুত সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।

জয়ন্তর পরিবারের লোকজন আরও জানান, হামলাকারীরা জয়ন্তর ব্যবহৃত লেপটপ ও দুটি মোবাইল ফোন ও বাড়ি থেকে নিয়ে আসা নগদ টাকাও ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।

এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আনন্দপুর গ্রামের গোপাল রায়ের অপকর্মের বিষয়ে জয়ন্ত সেন সংবাদ প্রকাশ করায় তাকে হত্যার উদ্দেশে এ হামলা চালানো হয়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, দুর্বৃত্ত গোপাল রায় এক হতদরিদ্র শিশুকন্যাকে কয়েক মাস আগে ধর্ষণের চেষ্টা করলে সে সংবাদ সাংবাদিক জয়ন্ত সেন প্রকাশ করেন।

এ ঘটনায় সাংবাদিক জয়ন্ত অসহায় ওই শিশুকন্যা ও তার পরিবারের স্বপক্ষে সংবাদ প্রকাশ করায় গোপাল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা ক্ষুব্ধ হয়।

এছাড়াও গ্রামের স্কুলের জায়গা দখল করে গোপালের স্থায়ী বসতঘর নির্মাণ করার সংবাদটি জয়ন্ত পত্রিকায় প্রকাশ করতে পারেন এমন আশংকায় ছিলেন গোপাল। সে জন্যেও জয়ণ্তকে হত্যার উদ্দেশেই ওই হামলা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তার স্বজনরা।

জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে দুর্বৃত্তরা তার পিছু নিলে হামলা হওয়ার আশংকায় সাংবাদিক জয়ন্ত সেন পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ, ওসি আশরাফুল ইসলাম ও সুনামগঞ্জের বেশ কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিককে বিষয়টি অবহিত করেছিলেন।

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জের আরেক সাংবাদিক শামস শামীম বলেন, জয়ন্ত সেনের এমন ফোন পেয়ে সঙ্গেসঙ্গে আমি শাল্লা থানার ওসিকে ফোন দিয়ে বিষয়টি অবগত করে তাকে নিরাপত্তা প্রদানের অনুরোধ করি।

এ বিষয়ে শাল্লা থানার ওসি মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিক জয়ন্ত আমাকে মঙ্গলবার দুপুরে তার ওপর হামলার শংকার বিষয়টি আগাম ফোনে অবগত করেছিলেন। আমি দুষ্কৃতিকারীদের জয়ন্তকে বিরক্ত না করার জন্য হুশিঁয়ারি দিয়েছিলাম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here