সর্বব্যাপী ঐক্যের ডাক মান্নার

0
357

খবর৭১: বর্তমান সরকারকে ‘জবরদস্তিমূলক’ আখ্যা দিয়ে তাদের হঠাতে সর্বব্যাপী ঐক্যের ডাক দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

শনিবার (৯ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে এ আহ্বান জানান তিনি।

মান্না বলেন, ‘যদি মনে করেন বিএনপি একটা বড় দল অথবা বিএনপি অন্যান্য আরও দলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি দিলেই আমরা বিজয়ের পানে ছুটে চললাম, তাহলে ভুল করবেন। এরকম একটা জবরদস্তিমূলক সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করবার জন্য সর্বব্যাপী ঐক্য লাগবে।’

সেই ঐক্যের জন্য কাজ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই ঐক্যের জন্য আমরা কাজ করছি। আমি মনে করি এরকম ঐক্য সময়ে সঠিকভাবে গড়ে ওঠলে ওঠতেও পারে। তার মানে এই নয় যে, আপনারা তাদের জন্যই বসে থাকবেন। যেভাবে কোটার দাবিতে ছাত্ররা নেমেছিল, যেভাবে আপনারা নেমেছিলেন, যেভাবে এই দেশের পেশাজীবীরা নেমেছিলেন ঠিক একইভাবে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামতে হবে। তাহলেই এরা (ক্ষমতাসীন) মাথা নত করবে, তাহলেই এরা দেশ ছেড়ে পালাবে। তাহলেই এরা আপনাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জেলের তালা ভেঙে বীরের বেশে ফিরে আসতে পারবেন। তা না হলে শুধু দুঃখের কথা বলে, আফসোসের কথা বলে মানুষের মনকে গলাতে পারবেন না।’

সরকারের উদ্দেশ্যে মান্না বলেন, ‘এরা মানুষ মেরে লাশের উপর দিয়ে আবার ক্ষমতায় যেতে চায়। বাঁচাতে যদি চান, তাহলে লড়াই করবার জন্য প্রস্তুত হন। যে সরকারকে মানুষ মেরে লাশ ফেলে রাখবার পরেও জবাবদিহি করবার দরকার থাকে না। তাদের ভোটের দারকার নাই। তাদের কাছে বেগম জিয়া যদি মৃত্যুওবরণ করেন হৃদয় এতোটুকু বিচলিত হবে না। কাজেই লড়াই করতে হবে।’

খালেদা জিয়ার কারাগারে বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে মান্না বলেন, ‘এই যে একটার পর একটা জামিন বাতিল করা হচ্ছে, নতুন নতুন মামলা দেয়া হচ্ছে বেগম জিয়ার নামে এটা কত বড় অন্যায়, বিচার বিভাগ তার জবাব দেবে না। কারণ সরকারের জবাবদিহিতা নেই। একজন অসুস্থ মানুষ, তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থাও করে না, তাকে ভালো জায়গায় রাখার ব্যবস্থাও করে না।’

চলমান মাদকবিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ উপদেষ্টা এক সময়ের প্রেসিডেন্ট বললেন, এই সংসদের মধ্যেই তো ইয়াবা ব্যবসায়ী আছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে যখন একথা জিজ্ঞাসা করা হলো- তিনি বললেন একটা অভিযোগ করলেই তো হলো না, আমার কাছে তো কোনও প্রমাণ নাই। আওয়ামী লীগের মহামূল্যবান নেতা সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বললেন- একজন এমপিকে তো এমনিই গ্রেফতার করা যায় না, প্রমাণ থাকতে হয়। যদি তাই হয়, তাহলে এই যে ১৫৬ জনকে হত্যা করা হলো এদের সবার নামের লিস্ট প্রকাশ করতে হবে। এরা কারা, এদের বিরুদ্ধে কি কি অভিযোগ। এদের বিরুদ্ধে মামলা আছে কি না, মামলা থাকলে কোনও বিচার শুরু হয়েছে কি না।’

শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফের মুক্তি ও বিদেশ চলে যাওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী সন্ধ্যাবেলায় জামিন পেয়েছেন, শেষ রাত্রের ফ্লাইটে বিদেশ চলে গেলেন। ভিসা হলো কখন, ওই ভিসার দরখাস্ত কে করেছিল? সই কে করেছে? জেলখানার মধ্যে থেকে আমরা যদি নির্বাচন করতে চাই, তাহলে আমাদের সই করতে দেয়া হয় না। আর ইন্ডিয়ান হাইকমিশনে জমা দেয়ার জন্য স্বাক্ষর কিভাবে করলেন। একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী এক রাত লাগে না, তিনি ভিসা কিভাবে পান।’

শিক্ষকদের দাবি প্রসঙ্গে মান্না বলেন, ‘আপনারা শিক্ষক কর্মচারী আপনাদের দাবি বেতন, উৎসব ভাতা, আপনারা দাবি করতে থাকেন দাবি যদি নাই শুনে কি করবেন। একটা বাজেট দিয়েছে যারা চোর ব্যাংক লুট করেছে, তাদের জন্য হাজার হাজার টাকা রেখেছে। সাধারণ মানুষের জন্য কিছু নাই। ছাত্র-যুবককে জিজ্ঞাসা করেন নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আছে? ফেসবুকে তারা লিখে ভরে ফেলেছে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার বাজেটে আমাদের কথা নাই কেন?’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here