সরকার পরিবেশ অস্থিতিশীল করছে: ফখরুল

0
475

খবর৭১:সারা দেশের বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও বাড়িতে বাড়িতে পুলিশি তল্লাশি চালিয়ে সরকার দেশের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল হাইকোর্টের সামনে যে ঘটনাটা ঘটেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমেও এসেছে। আমরা নিজেরাই এই ছেলেদেরকে চিনতে পারছি না। আমরা আশঙ্কা করছি অনুপ্রবেশকারীরা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমাদের বিশ্বাস।’

তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে আমরা যে প্রতিবাদ জানাচ্ছি, রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করছি। সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই পরিবেশ নষ্ট করার জন্য কাজ করছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সবচাইতে ভীতিকর বিষয় হলো গতরাতে গয়েশ্বর রায়কে গ্রেফতারের ঘটনা অনেক রাত পর্যন্ত পুলিশ স্বীকার করেনি। তিনি একজন বয়স্ক মানুষ, অসুস্থ মানুষ। তার ওষুধগুলো পর্যন্ত সেখানে নিতে দেয়নি। সকাল পর্যন্ত তাকে ওষুধ নিতে দেয়া হয়নি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী তাকে দেখতে গিয়েছেন, তার পুত্রবধূ দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুর রায় গয়েশ্বরকে দেখতে গিয়েছিলেন কিন্তু তাদেরকে সাক্ষাতের সুযোগ দেয়নি। গয়েশ্বর রায়কে নিয়মিত মেডিসিন নিতে হয়। তাও নিতে দেয়নি।’

ফখরুল বলেন, ‘এই গ্রেফতারটা হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। আমাদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, এখন পর্যন্ত কোন কর্মসূচি ঘোষণা করেনি। অথচ গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে। হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। দেশের যে স্থিতিশীল পরিবেশ নিজেরাই (সরকার) নষ্ট করছে।’

তিনি বলেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কেবলমাত্র স্থায়ী কমিটির সদস্যই নয়, তিনি দীর্ঘদিন যুবদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বাধীনতার যুদ্ধে, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তার অবদান ছিল। তাকে এভাবে হঠাৎ তুলে নিয়ে যাওয়া অসনি সংকেত। আশঙ্কা করছি সরকার তার একদলীয় শাসন পাকাপোক্ত করার জন্য অর্থাৎ বিএনপিকে বাদ দিয়ে বিরোধীদলগুলোকে বাদ দিয়ে একদলীয় নির্বাচন করার নীলনকশার দিকে এগুচ্ছে।’

‘সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ যখন শান্তিপূর্ণভাবে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চেয়েছিল, দেখতে চেয়েছিল, অংশগ্রহণ করতে চেয়েছিল। সেই সময় সরকারের তরফ থেকেই এই উস্কানিমূলক কাজগুলো শুরু হয়েছে। যাতে বিরোধীদলগুলো নির্বাচনে আসতে না পারে।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলার রায়ের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আমার একটি অনিশ্চয়তা অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করাই এদের মূল উদ্দেশ্য। এই অবস্থার সৃষ্টি করে তারা আবারো নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চাইছে। তারই নীলনকশা হিসেবে তারা আজকে এই পরিস্থিতিগুলো সৃষ্টি করছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই। অবিলম্বে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, খোকনসহ সকলকে মুক্তি দিতে হবে। সকল রাজনৈতিক নেতা এখন পর্যন্ত যারা আছেন তাদের সকলকেই মুক্তি দিতে হবে। এই মুক্তি না দিলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সুস্থ স্বাভাবিক হবে না।’

‘আমরা বার বার করে বলেছি এই দেশে শান্তিপূর্ণভাবে সুষ্ঠু এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চাই। জনগণও তাই দেখতে চায়। এবং সেটার জন্য সকলের কাজ করা উচিত। সরকারকে আবারো আহবান জানাতে চাই এই সমস্ত উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড বাদ দিয়ে এই সমস্ত নির্যাতন দমননীতি বাদ দিয়ে সত্যিকারার্থে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে জনগণের আশা আকাঙ্খা পূরণ করার জন্য সমস্ত রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দিয়ে একটি নির্বাচন দিন, যে নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হবে সেই ধরনের নির্বাচন করার আহ্বান আমরা জানাচ্ছি।’

গত রাতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ শত শত নেতাকর্মীদের বাসায় গতরাতে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে উল্লেখ করে এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান মির্জা ফখরুল।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, গয়েশ্বর রায়ের মেয়ে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য অর্পনা রায়, পুত্রবধূ নিপুর রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here