সরকারের নির্দেশে বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করছে:রিজভী

0
293

খবর৭১:সরকারের নির্দেশে রিটানিং কর্মকর্তরা বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করছে বলে অভিযোগ করেছে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনে লেভেল প্লেইংয়ের ফিল্ড অনেক দূরে অবস্থান করছে মন্তব্য করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট থেকে বার বার নির্বাচন কমিশনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও মামলার বিষয়ে বার বার অভিযোগ করা হলেও নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে পুলিশ এখন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ ছাড়া কারো কথা শোনেন না। তাহলে বন্যার স্রোতের মতো বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হচ্ছে কেন? তাহলে কি এখন পুলিশ যা কিছু করছে তার জন্য দায়ি নির্বাচন কমিশন?’

তিনি বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তারা মূলত সৎ মায়ের ভুমিকা পালন করছে। কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ডেকে এনে বৈঠক করে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেই নির্দেশনা অনুযায়ী বিএনপিসহ বিরোধী দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র গণহারে বাতিল করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নপত্রে অসংখ্য ত্রুটি থাকার পরেও সেগুলোকে বাতিল করা হয়নি।’

রিজভী বলেন, ‘দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হওয়ার তথ্য গোপনের অভিযোগ থাকার পরেও সরকারি দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রিটার্নিং অফিসার হায়াত-উদ-দৌলা খানের কার্যালয়ে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই কার্যক্রমে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া কোন প্রার্থীকে কথা বলার সুযোগ দেননি তিনি। বিএনপির মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া বেশিরভাগ প্রার্থীদেরকেই কথা বলতে দেননি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রিটার্নিং অফিসার।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধির বিধান হচ্ছে- প্রার্থীদের বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে তাদেরকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। কোনো ডকুমেন্টস উপস্থাপন করতে চাইলে তা করতে দিতে হবে। কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তা যদি শুরুতেই প্রার্থীকে থামিয়ে দেন, তাহলে বুঝতে হবে রিটার্নিং অফিসার দুরভিসন্ধি নিয়ে কাজ করছেন। এভাবে সারাদেশেই রিটার্নিং অফিসাররা তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বিএনপির মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। তফসিল ঘোষণার পরে রিটার্নিং অফিসাররা নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে কাজ করেন, সেক্ষেত্রে তাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া চলবে না। কিন্তু যদি রিটার্নি অফিসার বা নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত অন্য কোন কর্মকর্তা কোন রাজনৈতিক দলের স্বার্থের পক্ষে কাজ করেন, তাহলে তা হবে গুরুতর অসদাচরণ। এটি সমগ্র নির্বাচন কমিশনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে। কিন্তু বর্তমানে নির্বাচন কমিশন, শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্য এবং নির্বাচনে ভোট গ্রহণকারি কর্মকর্তাদের ভোটে নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়, জনমনে শঙ্কা ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।’

সরকারের স্বার্থ রক্ষা করতেই ব্যস্ত নির্বাচন কমিশন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘জনপদে জনপদে আওয়ামী লীগের অবৈধ অস্ত্র এখনও নির্বাচন কমিশন উদ্ধার করেনি। অথচ বিএনপি নেতাদের গুম করে গ্রেফতার করে সাজানো মামলা দেয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দিন রাজশাহীর রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিসি বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী এবং রাজশাহী-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার আমিনুল হক সাহেবের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। সম্পূর্ণ বেআইনি ও রাজনৈতিক হীনউদ্দেশ্যেই তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র বাতিলের পর আপিলের জন্য বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রিটার্নিং অফিসার ব্যারিস্টার আমিনুল হককে হস্তান্তর করছেন না। তবে আগামীকালও কাগজপত্র দেয়া হবে কি না এ বিষয়ে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আছে।’

রিজভী বলেন, ‘ব্যারিস্টার আমিনুল হকের মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তের কাগজপত্র আটকে রাখা গভীর চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। কোনভাবেই ব্যারিস্টার আমিনুল হককে আটকাতে না পেরে বানোয়াট কাহিনী রচনা করে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করে এখন বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও না দেয়ার উদ্দেশ্যই হলো-তিনি যেন আপিল দায়েরের মাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার আনীত কাল্পনিক অভিযোগ খন্ডন করতে না পারেন। রাজশাহী বিএনপির জনপ্রিয় রাজনীতিবিদদের আসন্ন নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য এই ষড়যন্ত্র।’
খবর৭১/জি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here