সব টাকাই তো ব্যাংকে আছে, তাহলে আত্মসাৎ হলো কিভাবে: কর্নেল অলি

0
248

খবর ৭১ঃ ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন। কিন্তু এ ট্রাস্টের সব টাকাই তো ব্যাংকে আছে। তাহলে আত্মসাৎ হলো কীভাবে? খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়াই সরকারের উদ্দেশ্য ছিল। তাই এ মামলায় তাকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কারণ, খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানের নামে এ ট্রাস্টের কোনো অ্যাকাউন্ট নেই’ বলে মন্তব্য এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদী ছাত্র সমাবেশে অলি এ সব কথা বলেন। এসময় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

অলি আহমদ বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে যেভাবে সাজা দেয়া হয়েছে, তা অন্যায় হয়েছে। কারণ ১০ দিনের মধ্যে এত বিশাল রায় লেখা একজন বিচারকের পক্ষে সম্ভব নয়। সরকারের উদ্দেশ্য ছিল, খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠাবে। আর সে জন্য রায় ঘোষণার আগে থেকেই কারাগার পরিষ্কার করার কাজ শুরু করে।

বিএনপির সাবেক এই নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্য খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে আবারও একটা পাতানো নির্বাচন করা, যাতে তাদের একদলীয় শাসন দীর্ঘ করা যায়। কিন্তু বাংলাদেশে খালেদা জিয়া, ২০ দল ও জাতীয়তাবাদী শক্তিকে বাইরে রেখে কোনো নির্বাচন হবে না।

অলি আহমদ বলেন, এক-এগারোর সেনা সমর্থিত সরকারের সময় শুধু খালেদা জিয়া নয়, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছে। তারা ক্ষমতায় এসে নিজেদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলো রাজনৈতিক বিবেচনায় বাতিল করেছে। কিন্তু অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো সচল রেখেছে।

এলডিপি নেতা বলেন, খালেদা জিয়াকে যেভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে, তা অন্যায় হয়েছে। কারণ, ১০ দিনের মধ্যে এত বিশাল রায় লেখা একজন বিচারকের পক্ষে সম্ভব নয়। সরকারের উদ্দেশ্য ছিল, খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠাবে। আর সে জন্য রায় ঘোষণার আগে থেকেই কারাগার পরিষ্কার করার কাজ শুরু করে। তাঁকে অসম্মান করতেই ডিভিশন না দিয়েই নির্জন কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কর্নেল অলি বলেন, ‘অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্তি দিতে হবে। তাকে কারাগারে আটকে রেখে আগামী নির্বাচন হবে না। আমরা আশা করব, সরকার দ্রুত খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করবে। না হলে এটিই তাদের পতনের কারণ হবে।’

প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিশেষ আদালত। এ ছাড়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সলিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এঁদের মধ্যে তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান পলাতক।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১০ সালের ৫ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক হারুন-আর রশিদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়। এরপর খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে সেখানে রাখা হয়েছে। আজ হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার পক্ষে হাইকোটে আপিল করা হয়েছে।

খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here