সদরঘাটে বাড়ছে ঘরমুখো মানুষের ভিড়

0
316

খবর৭১ঃ দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল আযহা। আর তাইতো নাড়ির টানে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। যদিও ঈদের ছুটি এখনও শুরু হয়নি। তাতে কি, অনেকেই আগাম ছুটি নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছেন। ঝক্কি-ঝামেলা এড়াতে অনেকে পরিবারের সদস্যদের আগেভাগেই বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছেন।

অন্যান্য টার্মিনালগুলোর মতো রাজধানীর সদরঘাটে ক্রমেই বাড়ছে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড়।ঈদে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের বাড়ি ফেরার একমাত্র ভরসা নৌপথ।

রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সরাসরি কোনও সড়ক যোগাযোগ না থাকায় লঞ্চেই যাতাওয়াত করেন এ অঞ্চলের লাখো মানুষ। তাই অন্যান্য টার্মিনালের চেয়ে সদরঘাটের ভিড়টাও একটু বেশি হয়। তবে ঈদের আগের থৈ থৈ চেহারা এখনো পায়নি।

শুক্রবার সকাল থেকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা দেখা। শনিবার (১৮ আগস্ট) সকালে তা আরও বেড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড়ে প্রায় বেসামাল হয়ে পড়েছে সদরঘাট এলাকা। যে যেদিক দিয়ে পারছে লঞ্চে ওঠার চেষ্টা করছে। চাঁদপুর, বরিশাল, বরগুনাগামী লঞ্চগুলো ছিলো কানায় কানায় পরিপূর্ণ।

সদরঘাট টার্মিনাল ছেড়ে যাওয়া হুলারহাট, পিরোজপুর, ভাণ্ডারিয়া, শরীয়তপুর, বরগুনা, ভোলা, চরফ্যাশন, দুমকি, আমতলীসহ বেশ কয়েকটি রুটের লঞ্চে ছিল যাত্রী বোঝাই। যাত্রীদের চাপে নির্ধারিত সময়ের আগে বেশ কয়েকটি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। এছাড়া বরিশালগামী প্রত্যেকটি লঞ্চেও দেখা গেছে একই চিত্র।

ভান্ডারিয়াগামী রাজদূত-৭ লঞ্চের যাত্রী তানভীর আহমেদ বলেন, আমি সরকারি চাকরি করি। এখনো ছুটি পায়নি। ঈদের সময় যে ঝামেলা হয় সেটা এড়াতে স্ত্রী আর সন্তানদের আগেভাগেই পাঠিয়ে দিলাম। আমি পরে যাবো।

মাদারীপুরগামী পারাবত-১৫ লঞ্চের যাত্রী নাজমুস সাকিব। পরিচয় দিয়ে কথা হলো তার সাথে। জানালেন পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। প্রতিবছরের মতো এবারও স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বাবা-মা সাথে ঈদ করবেন তিনি।

গ্রামের হাট থেকেই গরু কেনেন। আর সে কারণেই একটু আগেভাগেই রাজধানী ছাড়ছেন তিনি।

এদিকে, আজ থেকে শুরু হচ্ছে লঞ্চের স্পেশাল সার্ভিস। তবে ঢাকা থেকে বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, হুলারহাট, বগাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নৌ-রুটে বেসরকারি লঞ্চ কোম্পানিগুলোর স্পেশাল সার্ভিস শনিবার শুরু হলেও ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সরকারিগুলোর স্পেশাল সার্ভিস।

যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) থেকেই স্পেশাল সার্ভিসে নেমেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নো-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) অধীনে থাকা সব লঞ্চ ও স্টিমার।

নৌযান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার প্রদত্ত তথ্য মতে, ঢাকা বরিশাল নৌরুটে চলাচলকারী বেশ কিছু বড় লঞ্চ শনিবার (১৮ আগস্ট) থেকে তাদের স্পেশাল সার্ভিসে যাওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিলাসবহুল এমভি অ্যাডভেঞ্চার-১ ও ৯, কীর্তনখোলা-২ ও ১০, সুরভী-৭, ৮ ও ৯, সুন্দরবন-৮, ১০ ও ১১, পারাবত-৮, ৯, ১০, ১১ ও ১২, দ্বীপরাজ, ফারহান-৮, টিপু-৭, কালাম খান-১, গ্রিন লাইন-২ ও ৩। তবে আরো বেশ কিছু লঞ্চ স্পেশাল সার্ভিসে যোগ দিতে পারে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

এছাড়া এবারের ঈদে মোট ২১১টি সরকারি ও বেসরকারি লঞ্চ ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে।

ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে থাকছে কয়েকস্তরে নিরাপত্তা। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, এবারের ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে কয়েকটি স্তরে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), কোস্টগার্ড, র‌্যাব, আনসার বাহিনী, বিআইডব্লিউটিএ’র নিজস্ব ডুবরি দল, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) এবং নৌ-নিরাপত্তার ক্যাডেট দল কাজ করছে।

জয়নাল আবেদীন আরো বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের যাতে কোনোভাবে সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগে সে দিকে বিশেষ নজর রাখছি আমরা। কোনো লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here