সংসদকে সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছি: প্রধানমন্ত্রী

0
250

খবর৭১ঃ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমরা ভ্রাতৃত্ব এবং ঐক্যে বিশ্বাসী। সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা সংসদকে সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছি। সংসদের বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের সমন্বয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটি গঠন করেছি।

বুধবার জাতীয় সংসদে মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমরা ভ্রাতৃত্ব এবং ঐক্যে বিশ্বাসী। এ জন্য আমরা বিভিন্ন সময় জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছি। গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আমরা টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করেছি। আমাদের দৃষ্টিতে দলমত-নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিক সমান। আমরা সবার জন্য কাজ করব।

তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আমরা দেশের সকল নিবন্ধিত দলের সঙ্গে সংলাপ করেছি। সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা সংসদকে সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছি। সংসদের বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের সমন্বয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটি গঠন করেছি। মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ক্ষুধা-দারিদ্র্য নিরক্ষরতার অভিশাপমুক্ত বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এ জন্য আমি দলমত-নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতা চাই।

প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের বলেন, বর্তমান সরকারের দৃষ্টিতে দেশের সকল নাগরিক সমান। সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় বিশ্বাসী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময়ই জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তির ওপর আস্থাশীল। একটি দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য সকল নাগরিকের অংশগ্রহণ জরুরি। আমরা ব্যক্তি হিসেবে বিভিন্ন দল/সংগঠন করতে পারি, আমাদের মতের ভিন্নতা থাকতে পারে। গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় প্রতিপক্ষ দলকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা হয়।

এ প্রসঙ্গে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবুন্ধ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরপর থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং দলের নেতাকর্মীরা এ ধরনের বৈরী আচরণের মুখোমুখি হয়েছেন বারবার। আমি ব্যক্তিগতভাবে বারবার হামলার শিকার হয়েছি। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ২০০১ সালে নির্বাচন পরিবর্তী সময় এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার কথা উল্লেখ করেন।

এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশি-বিদেশি নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে উন্নয়ন, অগ্রগতি আর সমৃদ্ধির পথে হাঁটছে আমাদের আজকের বাংলাদেশ। ৪২ বছর স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকায় থাকার পর গত ১৭ মার্চ ২০১৮ তারিখে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হওয়ার স্বীকৃতি পেয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে আজকের এই উত্তরণ, যেখানে রয়েছে এক বন্ধুর পথ পাড়ি দেয়ার ইতিহাস।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের জনকল্যাণমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নের কারণে বাংলাদেশের এই উন্নয়ন এবং এ অদম্য অগ্রযাত্রা সম্ভব হয়েছে। আশির দশকের তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ কাটিয়ে বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন বিস্ময় হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত উন্মোচিত হচ্ছে নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার। তিনি বলেন, দ্রততম সময়ে আর্থসামাজিক উন্নয়নের রূপরেখা বাস্তবায়নে আমাদের সরকারের সক্ষমতা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে। এটি শুধু আমাদের দাবি নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত সত্য।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রযাত্রা এখন বিশ্বের রোল মডেল। বর্তমানে দেশের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৭৫১ মার্কিন ডলার, যা গত বছরে ছিল ১ হাজার ৬১০ মার্কিন ডলার। এক বছরে বেড়েছে ১৪১ ডলার। বিএনপির শাসনামল শেষে ২০০৬ সালে মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫৪৩ মার্কিন ডলার। এরপর মাথাপিছু আয় বেড়েছে তিনগুণের বেশি। তিনি আরও জানান, রূপকল্প ২০৪১ অনুসারে ২০৪১ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় ১৬ হাজার মার্কিন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছে।

এম এ মতিনের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নবম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতাগ্রহণ করে তখন বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা ছিল ৩ হাজার ২৬৮ মেগাওয়াট। বর্তমানে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ক্যাপটিভসহ ২০ হাজার ৮৫৪ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশের শতকরা ৯৩ ভাগ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে এবং শতকরা ৭ ভাগ গ্রাহক অবশিষ্ট আছে। অবশিষ্ট গ্রাহকদের ২০১৯-২০ সালের মধ্যেই বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here