সংবাদ প্রকাশের জের : ডা: মাসুদ করিমের দৌড়-ঝাপ শুরু

0
301

প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ : “হাসপাতালেই ডাক্তার মাসুদ করিমের প্রাইভেট চেম্বার গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও জনবল সঙ্কট : ভোগান্তিতে রোগীরা” শিরোনামে দেশের কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে মুকসুদপুর উপজেলার ৩১ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর ডা: মাসুদ করিমের দৌড়-ঝাপ শুরু করেছেন। নিজেকে বাচাতে তিনি বর্তমানে ক্ষমতাশীন দলের কয়েকজন নেতার কাছে ধর্না দিচ্ছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়াও সাংবাদিককে ম্যানেজ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। দীর্ঘ দিন একই হাসপাতালে কর্মরত থাকার কারনে তিনি স্থানীয় ক্ষমতাশীন দলের নেতা, স্থানীয় সংবাদকর্মীসহ সকলকে হাত করে নেওয়ার ব্যার্থ চেষ্টা করে চলছেন।
হাসপাতালেই ডাক্তার মাসুদ করিমের প্রাইভেট চেম্বারে রুগি দেখার কারনে বর্তমানে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সেবার মান নেই বললেই চলে।
ব্যাপক অনুসন্ধানে জানা যায়, সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা: মাসুদ করিমের ডিউটি থাকলেও তিনি ওই সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডিউটি না করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রুমে বসেই প্রাইভেট ভাবে রুগি দেখে থাকেন। তা ছাড়াও তিনি ডিউটি টাইমে সরকারি বাস ভবনে নিজস্ব চেম্বারে এবং কল পেলেই ছুটে যান বিভিন্ন ক্লিনিক গুলিতে। এছাড়াও তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারন মানুষের সাথে দূর্ব্যাবহার করে থাকেন। হাসপাতালে কোন সময় না মানা, নাইট ডিউটি না করা, অফিস টাইমে হাসপাতালে ও বাসায় বসে রুগি দেখা, হাসপাতালে বসে ভিজিট নিয়ে রুগি দেখা, হাসপাতালের স্টাফদের সাথে দূর্ব্যাবহার করাসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে ডা: মাসুদ করিমের বিরুদ্ধে। ডা: মাসুদ করিম মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের একজন শীর্ষ নেতার আতœীয়ের পরিচয়সহ স্থানীয় লোক হবার সুবাধে কোন সরকারি আইনের তোয়াক্কা না করে নিজে তার খেয়াল খুশিমত চলাফেরা করে থাকেন। তা ছাড়াও একজন সাংবাদিক ডা: মাসুদ করিমের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য বার বার অনুরোধ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী জানান, ডা: মাসুদ করিম স্থানীয় আওয়ামীলীগের এক নেতার আত্নীয় হওয়ার কারনে এবং মুকসুদপুরের বাসিন্দা হওয়ার কারনে কেউ তার বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। তা ছাড়া তিনি পর পর ২-৩ বার অন্যত্র বদলী হলেও কোন এক কালো হাতের ইশারায় ও উপর মহলে ঘুষ দেওয়ার মাধ্যমে বার বার এ হাসপাতালেই থেকে যান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুকসুদপুরের কয়েকজন সংবাদকর্মী জানান, ডা: মাসুদ করিম দীর্ঘ দিন যাবত ধরে এ হাসপাতালে থাকার কারনে তিনি তার নিজস্ব গতিতে চলাফেরা ও কাজকর্ম করে থাকেন। তিনি সরকারি কোন নিয়ম কানুন মানেন না। তিনি সরকারি হাসপাতালের রুমে বসেই ফি নিয়ে রোগি দেখে থাকেন। জরুরী বিভাগে ডিউটি থাকলেও তিনি বাসায় রুগি দেখায় ব্যস্ত থাকেন। তারা আরো বলেন, স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতার আত্নীয় হওয়ার কারনে তিনি কয়েকজন সংবাদকর্মী, কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারন মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সংবাদকর্মী জানান, মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা: মাসুদ করিমের ডিউটি থাকলেও তিনি ওই সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডিউটি না করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রুমে বসেই প্রাইভেট ভাবে রুগি দেখে থাকেন। তা ছাড়াও তিনি ডিউটি টাইমে সরকারি বাস ভবনে নিজস্ব চেম্বারে এবং কল পেলেই ছুটে যান বিভিন্ন ক্লিনিক গুলিতে। রুগি না থাকলে হাসপাতালের রুমে বসে তিনি বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোকদের সাথে আড্ডায় ব্যস্ত থাকেন। শুধু তাই নয় বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোকদের কাছ থেকে মুল্যেবান উপহার সামগ্রী গ্রহন করে তিনি তাদের কোম্পানীর ওষুধ লিখে থাকেন বলেও জানান তিনি।
পরপর কয়েকবার সরেজমিন ওই হাসপাতালে গেলে ডা: মাসুদ করিমকে তার কর্মরত রুমে পাওয়া যায়নি। তা ছাড়াও তার ব্যবহৃত মোবাইলে বার বার ফোন করা শর্তেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। তবে ডা: মাসুদ করিম তার ব্যবহৃত মোবাইল না ধরার কারনে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ডা: মাসুদ করিমের বদলীসহ মুকসুদপুর হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য সচিবসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সাধারন মানুষসহ মুকসুদপুরের অভিজ্ঞমহল।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here