সংখ্যালঘুরা শঙ্কাহীনভাবে ভোট দিয়েছেন: রানা দাশগুপ্ত

0
225

খবর৭১ঃসাম্প্রদায়িকতা এবং ধর্মান্ধতাকে কোনো রাজনৈতিক দল ব্যবহার করেনি বলে মন্তব্য করেছেন সংখ্যালঘু নেতারা।

তাদের মতে, এ কারণে এবারের নির্বাচনে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘুরা শঙ্কাহীনভাবে ভোট দিতে পেরেছেন। এ জন্য সরকার, নির্বাচন কমিশনসহ সব রাজনৈতিক দলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নেতারা।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু নেতারা।

নির্বাচনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত।

তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘুরা শঙ্কাহীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে সক্ষম হয়েছেন। সাম্প্রদায়িকতা এবং ধর্মান্ধতাকে কোনো রাজনৈতিক দল ব্যবহার করেনি। আমরা এটিকে ইতিবাচক মনে করি। আমরা এ জন্য সরকার, নির্বাচন কমিশনসহ সব রাজনৈতিক দলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’

তিনি বলেন, ‘রাজাকার, স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত পার্লামেন্ট এবারের নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে গঠিত হতে যাচ্ছে। এ পার্লামেন্টকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা আশা করি, পার্লামেন্টের সরকারি দল ও বিরোধী দল ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় সুস্পষ্টভাবে যে অঙ্গীকারসমূহ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা করেছে আমরা তা যথাযথভাবে পালনে তাদের ভূমিকা পার্লামেন্টের ভেতরে ও বাইরে প্রত্যক্ষ করব-এ প্রত্যাশা করতে চাই’।

বেশ কয়েক জেলায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার উল্লেখ করে রানা দাশগুপ্ত বলেন, নির্বাচনের আগে-পরে ফেনীর সোনাগাজী, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা, ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিসহ কয়েকটি স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। দুর্বৃত্তদের কাউকে কাউকে আটক করেছে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। এতে সংখ্যালঘু জনমনে আশা ও আস্থা ফিরে আসতে শুরু করেছে।

সংসদ নেতা নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে রানা দাশগুপ্ত বলেন, আওয়ামী লীগ সুনির্দিষ্টভাবে তার নির্বাচনী ইশতেহারে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক নির্মূলের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ নীতির অঙ্গীকার করেছে। এটি আক্ষরিকভাবে কার্যকর করতে ভবিষ্যৎ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, এবারের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাজাকার, স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সংসদ গঠিত হতে যাচ্ছে। আশা করা যায়, সংসদে সরকারি ও বিরোধী দল ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় সুস্পষ্ট যে অঙ্গীকার তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা করেছে, তা যথার্থভাবে পালন করবে। সংসদের ভেতরে ও বাইরে তা তারা প্রত্যক্ষ করতে পারবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

সংসদে সংখ্যালঘু ৩৫ জনের মতো সাংসদ থাকা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন রানা দাশগুপ্ত।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি ছিলেন ১৮ জন। এবারও তাই আছে। দেশে ভোটারদের ১২ শতাংশ সংখ্যালঘু। তাই ৩৫ থেকে ৩৬টি আসনে সংখ্যালঘু এমপি থাকা উচিত বলে মনে করেন তারা। তিনি দাবি করেন, ভবিষ্যতে যারা নেতৃত্ব দেবেন, তারা যেন সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে ভূমিকা পালন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে গতকাল আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির অন্যতম সভাপতি হিউবার্ট গোমেজ।

উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, সাংগঠনিক সম্পাদক দীপংকর ঘোষ, বিশিষ্ট আইনজীবী তাপস কুমার পাল প্রমুখ।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here