শয়তানকে সৃষ্টি করা হলো যে কারণে

0
456

খবর৭১:আল্লাহ তাআলার সেরা ও প্রিয় সৃষ্টি মানুষ। এ মানুষের পরীক্ষা গ্রহণের জন্যই আল্লাহ তাআলা অভিশপ্ত শয়তানকে সৃষ্টি করেছেন। কে আল্লাহকে প্রকৃত পক্ষে ভালোবাসে; আর কে আল্লাহকে লোভ-লালসায় পড়ে ভুলে যায়; তা নির্বাচনের সেরা মাধ্যম হলো বিতাড়িত শয়তান ও তার ধোঁকা ও প্রতারণা।

আল্লাহ তাআলা ইবলিসকে কেয়ামত পর্যন্ত হায়াত দিয়ে মানুষের ঈমান ও আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠতার পরীক্ষায় স্বাধীন কাজের ক্ষমতা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন।

শয়তানের কাজ হলো মানুষকে ছলে-বলে কলে-কৌশলে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করা; আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুৎ করে তাকে ধোঁকা দেয়া। এ কারণেই ইবলিস মানুষকে কুমন্ত্রণা দেয়ার সময় এ কৌশল অবলম্বন করে-

‘(ওরা) শয়তানের মতো যে মানুষকে বলে, ‘কুফরি কর’, অতঃপর যখন সে (মানুষ) কুফরি করে
তখন শয়তান বলে, তোমার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। নিশ্চয় আমি বিশ্বজাহানের
প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি।’ (সুরা হাশর আয়াত ১৬)

আল্লাহ তাআলা মানুষকে শয়তানের বলয়মুক্ত করে সঠিক পথের ওপর রাখার জন্য যুগে যুগে জীবন-ব্যবস্থা স্বরূপ আসমানি কিতাবসহ অসংখ্য নবি-রাসুলকে পাঠিয়েছেন। সে মতে হজরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবি ও রাসুল হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত অসংখ্য নবি-রাসুল দুনিয়ায় দ্বীনের সঠিক পথের দাওয়াত দিয়েছেন।

বর্তমানে সর্বশেষ ঐশীগ্রন্থ পবিত্র কুরআনের ধারক ও বাহক মুসলিম ওলামায়ে কেরামও শেষ নবির ‘ওয়ারিছ’ হিসাবে আল্লাহর প্রেরিত ওহির বিধানসমূহ বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেবার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। যাতে মানুষ শয়তানের ধোঁকা বা প্রতারণামুক্ত থাকতে পারে। ইবলিসের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে। যা কেয়ামতের পূর্ব পর্যন্ত জারি থাকবে।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ‘পৃথিবীর এমন কোনো বস্তি ও ঝুপড়ি ঘরও বাদ থাকবে না; যেখানে আল্লাহ পাক ইসলামের বাণী পৌঁছে দেবেন না।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত)

এমন এক সময় আসবে যখন পৃথিবীতে ‘আল্লাহ’ বলার মতো কোনো লোক থাকবে না। তখন আল্লাহর হুকুমে মহাপ্রলয় কেয়ামত সংঘটিত হবে। মানুষের দেহগুলো মাটিতে মিশে যাবে; রূহ গুলো স্ব স্ব আমল অনুযায়ী ইল্লিন বা সিজ্জিনে অবস্থান করবে। (সুরা মুতাফফিফিন)

মানুষের দেহগুলো আল্লাহর হুকুমে কেয়ামতের পর স্ব স্ব দেহে পুনরায় প্রবেশ করবে (সুরা ফরজ) এবং চূড়ান্ত হিসাব-নিকাশের জন্য সব মানুষ সশরীরে আল্লাহর দরবারে উপনীত হবে। (সুরা মুতাফফিফিন)

সুতরাং মানুষের জন্য এ দুনিয়া হলো পরীক্ষাগার। আর ইবলিসের মাধ্যমেই আল্লাহ তাআলা এ পরীক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন। যারা শয়তানের ধোঁকা ও প্রতারণামুক্ত থাকবে তারাই সফলকাম। পরীক্ষার সফলতা লাভ করে তারা ফিরে যাবে জান্নাতে।

যে জান্নাত থেকে একবার ইবলিসই হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালামকে বিতাড়িত করেছিল। জান্নাতই হবে সফল মানুষদের চিরস্থায়ী আবাস।

আল্লাহ তা্অলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ায় ইবলিসের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here