শৌচালয় নেই, ফুলশয্যার আগেই শ্বশুরবাড়ি ছাড়লেন নববধূ

0
518

খবর৭১: শ্বশুরবাড়িতে শৌচালয় নেই। প্রাকৃতিক কর্মের জন্য যেতে হবে খোলা মাঠে। এ কথা শুনে ফুলশয্যার দিন সকালে শ্বশুরবাড়ি ছেড়েছেন সদ্য বিবাহিত এক তরুণী।

যাওয়ার সময় ওই নববধূ বলে গেছেন, স্বামীর বাড়িতে শৌচালয় নির্মাণ করা হলেই তিনি ফিরবেন। না হলে বাপের বাড়িতেই থাকবেন।

ভারতের বিহার রাজ্যের ভাগোলপুরের নৌগাছিয়া মহকুমায় কোশী নদীতীরবর্তী প্রত্যন্ত ডোলবাজা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, গত বুধবার পূর্ণিয়া জেলার ডোভা গ্রামের কাঞ্চন কুমারীর সঙ্গে বিয়ে হয়। ডোলবাজারের যোগেন্দ্র মিস্ত্রির ছেলে রুধাল মিস্ত্রির।

পর দিন শ্বশুরবাড়ি আসেন নববধূ। শুক্রবার রাত ছিল ফুলশয্যার। এদিন ভোরে নববধূকে ভোরের আলো ফোটার আগেই মাঠে গিয়ে শৌচকর্ম করে আসতে বলেন শাশুড়ি।

এ কথা শুনে তীব্র আপত্তি করেন মাধ্যমিক পাস তরুণী কাঞ্চন। তিনি শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়ি রওনা দেন। এ সময় শ্বশুরবাড়ির লোকেদের জানিয়ে যান, ‘শৌচাগার না হলে আর ফিরবই না।’

এ বিষয়ে শুধু শ্বশুর-স্বামীর আশ্বাস নয়, গ্রাম পঞ্চায়েতকেও আশ্বাস দিতে হবে।

পরে বিষয়টি নৌগাছিয়ার বিডিও রাজীব রঞ্জনকে জানান গ্রামের ‘স্বচ্ছতা কর্মী’ বিকাশ রজক। এর পর বিডিও পঞ্চায়েতকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।

গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সঞ্জয় রজক বলেন, বিডিওর নির্দেশ পেয়েছি। আগামী তিন-চার দিনের মধ্যেই ওই বাড়িতে শৌচাগার তৈরির কাজ শেষ হবে।’

কাঞ্চনের শ্বশুর যোগেন্দ্র মিস্ত্রি বলেন, বাড়ির বউ এভাবে চলে গেলে কার আর ভালো লাগে বলুন। তবে সে তো অন্যায় কিছু করেনি।

তিনি জানান, তিনি গরিব মানুষ। একসঙ্গে ১২ হাজার টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। তবে পঞ্চায়েত তাকে কাজ শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছে। ব্যাংকে টাকা পাঠিয়ে দেবে পঞ্চায়েত। আর সেই ভরসায় শৌচালয় তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন যোগেন্দ্র বাবু।

এ ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই জেলা প্রশাসনের কর্তারা ডোলবাজায় হাজির হন। গ্রামের সব বাড়িতে এখন শৌচালয় তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে। ১০০ শতাংশ ‘নির্মল’ গ্রাম হতে চলেছে ডোলবাজা। আর সবাই ধন্যবাদ দিচ্ছেন ‘বিদ্রোহী’ বধূকে।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here